আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ঈদের শেষ মুহূর্তে কুমিল্লার মুরাদনগরে চলছে কোরবানির হাট। এ উপজেলার প্রতিটি হাটে ভারতীয় গরুর তেমন দেখা না যাওয়ায় স্থানীয় খামারিদের দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। পাশাপাশি ছাগলের বেচাকেনাও জমে উঠেছে। উপজেলায় চাহিদার তুলনায় প্রায় সাত হাজার পশু বেশি রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ২২টি ইউনিয়নে ৩৮টি স্থায়ী হাটসহ মৌসুমী হাটগুলোতে কোরবানির পশু বেচাকেনা জমে উঠেছে। হাটগুলোতে ঘাস, খড়, খৈল, ভূষি খেয়ে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা গরু-ছাগলের বেচাকেনা ভালোই চলছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ ইজারাদাররা। তবে, এ বছর দাম একটু বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
উপজেলা সদরের বড় মসজিদ মাঠ হাটের গরু ক্রেতা সাম মিয়া জানান, ভারতীয় গরু না আসায় এ বছর গরুর দাম বেশি। কামাল্লা বাজারের ধনু মিয়া বলেন, “ভিড় এড়াতে গত বুধবার ধনিরামপুর হাট থেকে দুটি দেশি জাতের গরু কিনেছি।” ভূবনঘর গ্রামের আজমুল জানান, গরু কেনার সময় বিদেশি গরু তেমন একটা চোখে পড়েনি। এ ক্ষেত্রে দেশি গরু কেনাবেচা জমে উঠেছে।
বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতা জানান, এ বছর দাম বেশি হওয়ায় ছোট আকারের গরুর চাহিদাই বেশি। এ ধরনের গরু ৪৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আকার ভেদে ৮০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে দেশি গরু। গরুর পাশাপাশি একেকটি ছাগল সাত হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, প্রথমদিকে গরুর দাম ভালো পাওয়া গেলেও বর্তমানে একটু মন্দাভাব বিরাজ করছে। তাদের আশা, শেষের দিকে জমজমাট হয়ে উঠবে কোরবানির হাট। দামও ভালো পাবেন তারা। টনকি পশুহাটের সভাপতি জাকির চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন হাটের ইজারাদাররা জানান, জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিনসহ কোরবানির পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাটগুলোতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সুষ্ঠুভাবে বেচাকেনা চলছে। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
খামার মালিকসহ কৃষকরা জানান, ভারতীয় গরু না আসায় এবার তাদের লালন-পালন করা গরুর চাহিদা বেড়েছে। ঈদ পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করলে ভালো দাম পাবেন বলে আশা তাদের।
উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আ. রহিম জানান, এ বছর মুরাদনগরে প্রায় ১৩ হাজার কোরবানির পশু চাহিদা থাকলেও ২০ হাজার ৬০০ গরু-ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় সাত হাজারের বেশি পশু মজুদ রয়েছে। এখানকার গরু বিভিন্ন খামার এবং বাড়িতে প্রাকৃতিক খাবারের মাধ্যমে বড় করা হয়েছে। কোনো ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে মোটাতাজাকরণ হয়নি।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মনসুর উদ্দিন বলেন, “জাল টাকা রোধে এবং বেচাকেনা নির্বিঘ্ন করতে কোরবানির হাটগুলোতে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। এ ছাড়া সড়ক পথসহ কোথাও পশুবাহী গাড়ি থামিয়ে কেউ যেন চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেদিকেও আমরা সর্তক দৃষ্টি রেখেছি।