ঢাকা ১২:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ভাইকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

মুরাদনগর বার্তা ডেস্ক রির্পোটঃ

ভাগ্নি জামাইকে বিদেশ নিতে রাজী না হওয়ায় গভীর রাতে গাঁজা ঘরে গাজাঁ রেখে ওমান প্রবসী আবু তাহেরকে পুলিশে দেন তার বোন, ভাগ্নি ও ভাগ্নি জামাই। পরে টাকা নিয়ে তাহেরকে ছেড়ে দেওয়ার রফা-দফা হয়। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় তাহের ও তারঁ স্ত্রীকে আসামী করে মামলা হয় মুরাদনগর থানায়। পুলিশ তাহেরকে আটক করে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরন করে। অপরাদি না হয়েও সেই মামলায় জেল খাটছেন ১৯ দিন ধরে তিনি।

বুধবার বিকেলে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন উপজেলার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কৈজুরী গ্রামে আবু তাহেরের স্ত্রী আলেয়া বেগম। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় সর্বমহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আলেয়া বেগম জানান, আবু তাহের ২৫ বছর ধওে প্রবাসী। কিছুদিন পূর্বে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারনে চিকিৎসার জন্য ছুটিতে বাড়ীতে আাসেন। এরই মধ্যে আবু তাহেরের বোন খোশনেয়ারা বেগম ডিঙ্গার মেয়ে রেখা তার স্বামী মুকবল হোসেনকে বিদেশে নিতে চাপ দেন। তাহের নানা অজুহাতে ভাগ্নি জামাইকে বিদেশে নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এত ডিঙ্গা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৯ নভেম্বর প্রচন্ড গালমন্দসহ আবু তাহের আবার কিভাবে বিদেশে যান, তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরদিন রবিবার রাতেই তাহেরের ঘরের খাটের নিচে গাজাঁ থাকার অজুহাতে মুরাদনগর থানার এসআই বিল্লাল হোসেন, জীবন হাজারী ও জালল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তার বাড়িতে আভিযান চালায়। পওে তাহেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর বোন ডিঙ্গা  স্ত্রী আলোয়াকে জানান, তার সঙ্গে এসআই বিল্লালের দেও রক্ষটার রফা হয়েছ, এ টাকা দিলে রাতেই তাহেরকে ছেড়ে দেবে পুলিশ। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ডিঙ্গার প্ররোচনায় ২০ নভেম্বর থানায় আবু তাহের ও স্ত্রী আরেয়ার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা করে পুলিশ। এরপর তাহেরকে আদালতে নেওয়া হলে, আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠনি।
আলেয়া আরো বলেন, গত ২২ নবেম্বর মঙ্গলবার রাতে আমার স্বামী পূনরায় ওমান যাওয়ার কথা থাকলেও ষড়যন্ত্রের বেড়াজালের কারণে পূর্বের কর্মস্থলে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সে একজন কোরআনে হাফেজ। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
আবু তাহেরের বোন খোশনেহার ওরফে ডিঙ্গা ভাইকে ফাঁসানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাইকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার বিনিময়ে এসআই বিল্লাল হোসেনের সাথে দেড় লাখ টাকার রফা-দফা হয়। বিষয়টি ভাবিকে বলার পরও আমাকে টাকা না দেওয়ায় রফা-দফা হওয়ার পরও ভাইকে ছাড়াতে পারিনি। বর্তমানে ভাই আবু তাহের কুমিল্লার কেন্দ্রিয় কারাগারে রয়েছে।
আবু তাহেরের অপর বোন ফুলমতি জানায়, আমার বোন, বোনের মেয়ে ও তার জামাই পরিকল্পনা করে আমার ভাইয়ের ঘরে গাঁজা রেখে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। যে ভাই আজ ২৫ বছর যাবত প্রবাসে থেকে আমাদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করতেন। আমার ভাই কোরআনে হাফেজ। সে কোন প্রকার অপরাধ করতে দেখিনি। তার এত বড় সর্বনাশ করাতে এখন আমাদের ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ সরকার বলেন, প্রবাসী আবু তাহের আমার প্রতিবেশি। দীর্ঘদিন প্রবাস থেকে আবু তাহের তার ভাই-বোনদেরকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। সে মানুষ হিসাবে অনেক ভালো। হঠাৎ করেই এমন কলঙ্ক মাথায় নিয়ে আবু তাহের জেলে থাকবে এটা এলাকাবাসি মেনে নিতে পারছে না। তিনি বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
এসআই বিল্লাল হোসেন বলেন, সোর্সের মাধ্যমে খবর পাই আবু তাহেরের ঘরের খাটের নীচে গাঁজা রয়েছে। এমন খবরে আমরা ঘটনাস্থল থেকে গাঁজা ভর্তি আচারের বইয়ম উদ্ধার করে ঘটনার সত্যতা পাই। যার কারণে মাদক মামলা দিয়ে আবু তাহেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করি। ছেড়ে দেয়ার রফা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে এসআই বিল্লাল বলেন, এই বিষয়ে কারো সাথে আমাদের কোন কথা হয়নি।
মুরাদনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, মাদকের বিষয়ে কারো সাথে কোন আপস নেই। যদি কেউ রফা-দফার প্রশ্ন তুলে থাকেন, তারা থানার বাহিরের লোক। এ থানায় কোন বিষয়ে রফা-দফা হয় না।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

মুরাদনগরে ভাইকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ

আপডেট সময় ০৩:০২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৬
মুরাদনগর বার্তা ডেস্ক রির্পোটঃ

ভাগ্নি জামাইকে বিদেশ নিতে রাজী না হওয়ায় গভীর রাতে গাঁজা ঘরে গাজাঁ রেখে ওমান প্রবসী আবু তাহেরকে পুলিশে দেন তার বোন, ভাগ্নি ও ভাগ্নি জামাই। পরে টাকা নিয়ে তাহেরকে ছেড়ে দেওয়ার রফা-দফা হয়। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় তাহের ও তারঁ স্ত্রীকে আসামী করে মামলা হয় মুরাদনগর থানায়। পুলিশ তাহেরকে আটক করে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরন করে। অপরাদি না হয়েও সেই মামলায় জেল খাটছেন ১৯ দিন ধরে তিনি।

বুধবার বিকেলে কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন উপজেলার দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কৈজুরী গ্রামে আবু তাহেরের স্ত্রী আলেয়া বেগম। এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় সর্বমহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আলেয়া বেগম জানান, আবু তাহের ২৫ বছর ধওে প্রবাসী। কিছুদিন পূর্বে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারনে চিকিৎসার জন্য ছুটিতে বাড়ীতে আাসেন। এরই মধ্যে আবু তাহেরের বোন খোশনেয়ারা বেগম ডিঙ্গার মেয়ে রেখা তার স্বামী মুকবল হোসেনকে বিদেশে নিতে চাপ দেন। তাহের নানা অজুহাতে ভাগ্নি জামাইকে বিদেশে নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এত ডিঙ্গা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৯ নভেম্বর প্রচন্ড গালমন্দসহ আবু তাহের আবার কিভাবে বিদেশে যান, তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরদিন রবিবার রাতেই তাহেরের ঘরের খাটের নিচে গাজাঁ থাকার অজুহাতে মুরাদনগর থানার এসআই বিল্লাল হোসেন, জীবন হাজারী ও জালল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তার বাড়িতে আভিযান চালায়। পওে তাহেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর বোন ডিঙ্গা  স্ত্রী আলোয়াকে জানান, তার সঙ্গে এসআই বিল্লালের দেও রক্ষটার রফা হয়েছ, এ টাকা দিলে রাতেই তাহেরকে ছেড়ে দেবে পুলিশ। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ডিঙ্গার প্ররোচনায় ২০ নভেম্বর থানায় আবু তাহের ও স্ত্রী আরেয়ার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য আইনে মামলা করে পুলিশ। এরপর তাহেরকে আদালতে নেওয়া হলে, আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠনি।
আলেয়া আরো বলেন, গত ২২ নবেম্বর মঙ্গলবার রাতে আমার স্বামী পূনরায় ওমান যাওয়ার কথা থাকলেও ষড়যন্ত্রের বেড়াজালের কারণে পূর্বের কর্মস্থলে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সে একজন কোরআনে হাফেজ। বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
আবু তাহেরের বোন খোশনেহার ওরফে ডিঙ্গা ভাইকে ফাঁসানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার ভাইকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার বিনিময়ে এসআই বিল্লাল হোসেনের সাথে দেড় লাখ টাকার রফা-দফা হয়। বিষয়টি ভাবিকে বলার পরও আমাকে টাকা না দেওয়ায় রফা-দফা হওয়ার পরও ভাইকে ছাড়াতে পারিনি। বর্তমানে ভাই আবু তাহের কুমিল্লার কেন্দ্রিয় কারাগারে রয়েছে।
আবু তাহেরের অপর বোন ফুলমতি জানায়, আমার বোন, বোনের মেয়ে ও তার জামাই পরিকল্পনা করে আমার ভাইয়ের ঘরে গাঁজা রেখে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। যে ভাই আজ ২৫ বছর যাবত প্রবাসে থেকে আমাদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করতেন। আমার ভাই কোরআনে হাফেজ। সে কোন প্রকার অপরাধ করতে দেখিনি। তার এত বড় সর্বনাশ করাতে এখন আমাদের ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ সরকার বলেন, প্রবাসী আবু তাহের আমার প্রতিবেশি। দীর্ঘদিন প্রবাস থেকে আবু তাহের তার ভাই-বোনদেরকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। সে মানুষ হিসাবে অনেক ভালো। হঠাৎ করেই এমন কলঙ্ক মাথায় নিয়ে আবু তাহের জেলে থাকবে এটা এলাকাবাসি মেনে নিতে পারছে না। তিনি বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
এসআই বিল্লাল হোসেন বলেন, সোর্সের মাধ্যমে খবর পাই আবু তাহেরের ঘরের খাটের নীচে গাঁজা রয়েছে। এমন খবরে আমরা ঘটনাস্থল থেকে গাঁজা ভর্তি আচারের বইয়ম উদ্ধার করে ঘটনার সত্যতা পাই। যার কারণে মাদক মামলা দিয়ে আবু তাহেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করি। ছেড়ে দেয়ার রফা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে এসআই বিল্লাল বলেন, এই বিষয়ে কারো সাথে আমাদের কোন কথা হয়নি।
মুরাদনগর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, মাদকের বিষয়ে কারো সাথে কোন আপস নেই। যদি কেউ রফা-দফার প্রশ্ন তুলে থাকেন, তারা থানার বাহিরের লোক। এ থানায় কোন বিষয়ে রফা-দফা হয় না।