তপন সরকার, হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা হোমনা উপজেলা সদরের কফিল উদ্দিন পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরষদের এক সদস্যের আচরণে ক্ষোব্দ হয়ে বিদ্যালয়ের সিনিয়র ইংরেজী শিক্ষক মোরশেদ হায়দার পদত্যাগ করার খবর পাওয়া গেছে ।
শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে এমন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে এটি এখন টক অব দা টাউন । বিভিন্ন চায়ের দোকানে, অফিসে বিভিন্ন মহলে এনিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে ।
সরজমিনে গিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীর সাথে আলোচনা করে জানাগেছে, বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সময় রুমে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে মোরশেদ হায়দারের বাগবিতন্ডা ও কথা কাটাকাটি হয় । এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোবাইলে ম্যানেজিং কমিটির সভা আহবান করেন । এতে সভাপতি সহ কয়েকজন সদস্য সভায় উপস্থিত হন। সভা চলাকালীন সময় সভাপতি সভা কক্ষে তাকে ডেকে পাঠালে সে রুমে এসে চেয়ারে বসে পড়েন। এ নিয়ে সভাপতির উপস্থিতিতে মাকসুদুল রানা নামের এক অভিভাবক সদস্য তাকে অপমান সুচক মন্তব্য করেন এবং তার সাথে অসৈজন্যমূলক আচরন করেন । পরে সে পারিবারিক কারন উল্লেখ করে সভাপতি বরাবর পদত্যাগ পত্র জমাদেন।
এ ব্যাপারে পদত্যাগী শিক্ষক মোরশেদ হায়দার বলেন, আমি চাকুরী করতে এসেছি। অপমানিত হতে নয়। আমার বিবেকের কাছে পরাজিত হতে বিবেকে বাধে তাই আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি ।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মালেক হোসাইন বলেন, গত বৃহস্পতিবারে পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন নিয়ে হায়দার সাহেব আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন তাই বিষয়টি সভাপতি সহ অন্যন্য সদস্যকে অবহিত করি। সভাপতি তাকে লাইব্রেরীতে ডেকে পাঠালে সে পদত্যাগ পত্র জমাদেয় ।
সভাপতি হোমনা পৌর আ’লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বাবুল বলেন, গত বৃহস্পতিবারে পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়েছে । এ বিষয়ে তাকে লাইব্রেরীতে ডেকে পাঠালে সে অনুমতি না নিয়েই চেয়ারে বসলে মাকসুদুল রানা তাকে চেয়ারে বসা ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন। এরপর সে পদত্যাগ পত্র জমাদেন । এ দিকে মোরশেদ হায়দারের পদত্যাগের খবর ফেইজবুকে প্রকাশিত হলে বিদ্যালয়ের অভিভাবকদেও মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন বিদ্যালয়ের স্বার্থেই তার পদত্যাগ পত্র গ্রহন না করার জন্য সভাপতির প্রতি অনুরোধ করেছেন ।
তারা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোন কারন ছাড়া সহকারী শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরন করার কথা না। আবার সহকারী শিক্ষক ও বিনাকারনে প্রধান শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরণ করতে পারেন না।বর্তমান সভাপতি অত্যন্ত রাজনৈতিকত বিচক্ষন ব্যক্তি তিনি সহজেই এর সমাধান করতে পারবেন ।
এ ব্যাপারে মাকসুদুল রানার মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তার মোবাইলে রিছিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি । সূত্রে জানাগেছে , মোরশেদ হায়দার অন্যায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কখনও আপোষ করেননি। সবসময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় কমিটির সদস্যের নিকট বিরাগ ভাজন ছিলেন। এ কারনে তাকে একাধিকবার শোকজ করাও হয়েছিল। কিন্তু সে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়নি ।