মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ
কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার বেইলী ব্রীজগুলো বেহাল অবস্থায় যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় প্রতিটি বেইলী ব্রীজ যেন মরণফাঁদে তৈরী হয়ে আছে। আর সেই ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রীরা বিভিন্ন সময় পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। সেই ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়েত যানবাহন চলায় যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে ঘুরে খো যায়, মুরাদনগর উপজেলায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধিন প্রধান গুরুত্বপূর্ন ৫টি আঞ্চলিক সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ২৯টি বেইলী ব্রীজগুলো অবস্থা একেবারেই নাজুক হয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব সড়কগুলোর মধ্যে মুরাদনগর-ঢাকা সড়ক, মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর সড়ক, কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়ক, মুরাদনগর-কোম্পানীগঞ্জ-হোমনা সড়ক এবং নবীপুর-শ্রীকাইল সড়কের বেইলী ব্রীজ গুলো একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়ে আছে। জরাজীর্ণ এসব সেতুর লোহার পাটাতন (স্লিপার) ভেঙে যাত্রী ও পণ্যবাহী বাস-ট্রাক আটকে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব ব্রীজ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অধিকাংশ সময় বিকল হচ্ছে ছোট-বড় অনেক যানবাহন। এছাড়া প্রায় অর্ধশত বছর আগে মুরাদনগর-ঢাকা সড়কের থানা সংলগ্ন গোমতীর উপর নির্মিত বেইলী ব্রীজটি খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে। ব্রীজটির গুড়া ও পিলারের নিচথেকে মাটি সরেগিয়ে বড় ফাটলের তৈরী হয়েছে। ৯ বছর ধরে এটি একই অবস্থায় আছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাক চলাচল করছে। ছয় বছর পূর্বে কতৃপক্ষ ব্রিজটি ঝূকিপূর্ন সাইনবোর্ড লিখে আর কোন প্রকার প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা না নিয়েই, তাদের দায়িত্বকে দায় মূক্ত করতে চাচ্ছেন। মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকা সড়কে ছয়টি বেইলি সেতু রয়েছে। প্রতিটি সেতুর পাটাতন (স্লিপার) ভেঙে গেছে। সম্প্রতি পাটাতন ভেঙে বিটুমিন বোঝাই একটি লরি আটকে যায়। এতে ব্যস্ততম এ সড়কে চার ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। একইভাবে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ছালিয়াকান্দি বাজারসংলগ্ন এলাকার বেইলি সেতুটি চালবোঝাই ট্রাকসহ ভেঙে পড়ে। এতে মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ-ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ তিন-চার দিন বিচ্ছিন্ন ছিল। পরে সেতুটি মেরামত করা হলেও ঝুঁকি থেকে যায়। মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর সড়কের করিমপুর নামকস্থানের ব্রীজটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চুরি হয়ে যাচ্ছে লোহার বিভিন্ন সরঞ্জাম। এ ছাড়া নবীনগর রোডে ছয়টি, রামচন্দ্রপুরে দুটি, বাঙ্গরা-সংচাইল রোডে ছয়টি, মেটাঙ্গর-শ্রীকাইল রোডে চারটি, সংচাইল-কোরবানপুর রোডে তিনটি, ডুমুরিয়া ও পাঁচকিত্তা রোডে দুটি এবং চাপিতলা রোডে একটি বেইলি সেতুরও একই অবস্থা।
সড়ক ও জনপধ বিভাগের (সওজ) কুমিল্লা নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফ উদ্দিন জানান, এসব সেতু দিয়ে পাঁচ টনের ওপরে পণ্যবাহী কোনো যানবাহন চলাচলের উপযোগী নয়। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভীন্ন। এ উপজেলার বেশ কয়েকটি ব্রীজের নির্মাণ কাজ চলচ্ছে। অন্যগুলোও প্রর্যায়ক্রমে নির্মানসহ ও সংস্কারের কার্যক্রম শুরু করা হবে।