ঢাকা ০৫:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপব্যবহারে কার্যকারিতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক

লাইফস্টাইল :

প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও অবাধে বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। সম্প্রতি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অবাধে অ্যান্টিবায়োটিকের এই অপব্যবহারে বাংলাদেশে প্রচলিত ১৭টি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

এসব অ্যান্টিবায়োটিক মূলত মূত্রনালির সংক্রমণ, নিউমোনিয়া এবং জখম সারানোসহ নানা ধরনের সংক্রমণের চিকিত্সায় ব্যবহার করা হতো। এর ফলে এখন কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে অন্য ওষুধও। গবেষকেরা বলছেন, এর ফলে শিশু এবং হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিত্সাধীন রোগীরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

আইইডিসিআরের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. জাকির হোসাইন হাবিব দেশের ৯টি মেডিক্যাল কলেজের রোগীদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন, দেশে গত কয়েক দশকের মধ্যে অন্তত ১৭টি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। অর্থাত্ এগুলো অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট হয়ে গেছে, যার মানে হলো অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, জীবাণুর মধ্যে ক্ষত সংক্রমণ জীবাণু প্রায় ৫৭ শতাংশ সক্রিয় ছিল, অর্থাত্ এগুলো প্রচলিত ওষুধ দিয়ে সারানো সম্ভব হচ্ছিল না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা বলেন, বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। কিছু নির্দেশনা থাকলেও সেগুলো বিক্রেতা বা ক্রেতা কেউই মানে না। তিনি জানিয়েছেন, যেসব কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট হয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম—বিনা প্রেসক্রিপশনে ঘনঘন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা। পুরো কোর্স শেষ না করে মাঝপথে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করলে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে। ভাইরাসজনিত কোনো অসুখে, অর্থাত্ যেসব ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এমনি সেরে যেত, সেখানে বিশেষ করে শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক দিলে। আইইডিসিআরের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. হাবিব জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যথেষ্ট ভয়াবহ। কারণ বাংলাদেশে বহু মানুষ বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ চিকিত্সকের কাছে না গিয়ে ফার্মেসিতে গিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে গ্রহণ করেন। তাদের ধারণাই নেই যে এর ফলে তার শরীর অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট হয়ে যাচ্ছে এবং পরবর্তীতে কোনো সংক্রমণ হলে সেটা আর কোনো ওষুধে হয়তো সারবে না।-বিবিসি

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

অপব্যবহারে কার্যকারিতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক

আপডেট সময় ০২:২৯:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৯

লাইফস্টাইল :

প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও অবাধে বিক্রি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক। সম্প্রতি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অবাধে অ্যান্টিবায়োটিকের এই অপব্যবহারে বাংলাদেশে প্রচলিত ১৭টি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে।

এসব অ্যান্টিবায়োটিক মূলত মূত্রনালির সংক্রমণ, নিউমোনিয়া এবং জখম সারানোসহ নানা ধরনের সংক্রমণের চিকিত্সায় ব্যবহার করা হতো। এর ফলে এখন কার্যক্ষমতা হারাচ্ছে অন্য ওষুধও। গবেষকেরা বলছেন, এর ফলে শিশু এবং হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিত্সাধীন রোগীরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

আইইডিসিআরের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. জাকির হোসাইন হাবিব দেশের ৯টি মেডিক্যাল কলেজের রোগীদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন, দেশে গত কয়েক দশকের মধ্যে অন্তত ১৭টি অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। অর্থাত্ এগুলো অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট হয়ে গেছে, যার মানে হলো অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, জীবাণুর মধ্যে ক্ষত সংক্রমণ জীবাণু প্রায় ৫৭ শতাংশ সক্রিয় ছিল, অর্থাত্ এগুলো প্রচলিত ওষুধ দিয়ে সারানো সম্ভব হচ্ছিল না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা বলেন, বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। কিছু নির্দেশনা থাকলেও সেগুলো বিক্রেতা বা ক্রেতা কেউই মানে না। তিনি জানিয়েছেন, যেসব কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট হয়ে থাকে তার মধ্যে অন্যতম—বিনা প্রেসক্রিপশনে ঘনঘন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা। পুরো কোর্স শেষ না করে মাঝপথে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া বন্ধ করলে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প ডোজের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে। ভাইরাসজনিত কোনো অসুখে, অর্থাত্ যেসব ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে এমনি সেরে যেত, সেখানে বিশেষ করে শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক দিলে। আইইডিসিআরের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. হাবিব জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যথেষ্ট ভয়াবহ। কারণ বাংলাদেশে বহু মানুষ বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ চিকিত্সকের কাছে না গিয়ে ফার্মেসিতে গিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে গ্রহণ করেন। তাদের ধারণাই নেই যে এর ফলে তার শরীর অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট হয়ে যাচ্ছে এবং পরবর্তীতে কোনো সংক্রমণ হলে সেটা আর কোনো ওষুধে হয়তো সারবে না।-বিবিসি