ঢাকা ০৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উন্নয়নশীল দশেে বাংলাদেশের উত্তরণে বাঞ্ছারামপুরে আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা

ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেঃ

জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে উন্নয়নশীল মর্যাদায় বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে এসে শেষ হয়।

পরে উপজেলা হলরুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো.নুরুল ইসলাম।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন- উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মিন্টু রঞ্জন সাহা, উপজেলা কৃষি অফিসার মো.জামাল, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিসেস সুরভী আক্তার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.নৌশাদ মাহমুদ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মীর রফিকুল ইসলাম প্রমূখ।

প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত দিয়ে বলেন,- মার্চেই এলডিসি থেকে ডেভেলপিং কান্ট্রিতে পরিণত হলো বাংলাদেশ। ‘ডেভলপিং কান্ট্রি’ হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। তিনি বলেন , শর্ত অনুযায়ী একটি দেশকে উন্নয়নশীল হতে হলে সেই দেশকে প্রথমত, মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয়ত, মানব সম্পদের উন্নয়ন অর্থাৎ দেশের ৬৬ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়েছে। আর তৃতীয়ত, অর্থনৈতিকভাবে ভংগুরতা না হওয়ার মাত্রা নামিয়ে আনতে হয় ৩২ শতাংশে। বাংলাদেশ এ মুহূর্তে এই সূচকটি ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ‘স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে এখন বাংলাদেশের নতুন পরিচয় মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল। গরিব দেশ,  শুধু সাহায্য চায়,এ রকম ভাবমূর্তি এখন আর নেই বাংলাদেশের। বরং বাংলাদেশের সফলতার এই অগ্রযাত্রা আরও প্রসারিত হবে, আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে দেশ। উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার আনন্দ উদযাপনে এমনটাই বলছেন সরকার সংশ্লিষ্টরা।

উন্নয়নশীল দেশ হতে যে তিনটি সূচকের দরকার হয়, তা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মূল্যায়নের নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে এ ঘোষণা কার্যকর হবে ২০২৪ সালে। জাতিসংঘের ইকোনমিক ও সোশ্যাল কাউন্সিল উল্লিখিত তিনটি বিষয় বিবেচনা করে বাংলাদেশকে এ ঘোষণা দিয়েছে। যা বাংলাদেশ সরকারের হাতে এসেছে ১৭ মার্চে, বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিনে।’

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.নুরুল ইসলাম জানান, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার মানদন্ডে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার। মানব সম্পদ উন্নয়ন সূচক ৬৬ শতাংশ বা তার বেশি এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক ৩২ বা তার কম নির্ধারণ করা হয়। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৭১ মার্কিন ডলার। মানবসম্পদ সূচক ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ হওয়ায় বাংলাদেশ এ স্বীকৃতি পেয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক সমিতির সভাপতি মীর রফিকুল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলের মূল্যায়ন কমিটি বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ ঘোষণা কার্যকর হতে প্রস্তুতির সময় থাকবে। সেই সময় নিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি সূবর্ণ জয়ন্তীতে ২০২১ সালে বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের পরিচিতি পাবে। যদিও বাংলাদেশের এই স্ট্যাটাস ২০২৪ সালে চূড়ান্ত ঘোষণা এবং ২০২৭ সালে তা কার্যকর হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে মাদ্রাসায় যান না পাঁচ বছর নিয়মিত বেতন তোলেন শিক্ষক

উন্নয়নশীল দশেে বাংলাদেশের উত্তরণে বাঞ্ছারামপুরে আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা

আপডেট সময় ০১:৪৯:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মার্চ ২০১৮
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকেঃ

জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা হতে উন্নয়নশীল মর্যাদায় বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে এসে শেষ হয়।

পরে উপজেলা হলরুমে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো.নুরুল ইসলাম।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন- উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মিন্টু রঞ্জন সাহা, উপজেলা কৃষি অফিসার মো.জামাল, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিসেস সুরভী আক্তার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.নৌশাদ মাহমুদ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মীর রফিকুল ইসলাম প্রমূখ।

প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শরিফুল ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত দিয়ে বলেন,- মার্চেই এলডিসি থেকে ডেভেলপিং কান্ট্রিতে পরিণত হলো বাংলাদেশ। ‘ডেভলপিং কান্ট্রি’ হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়, তা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। তিনি বলেন , শর্ত অনুযায়ী একটি দেশকে উন্নয়নশীল হতে হলে সেই দেশকে প্রথমত, মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৪২ মার্কিন ডলার হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয়ত, মানব সম্পদের উন্নয়ন অর্থাৎ দেশের ৬৬ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হতে হয়, বর্তমানে বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি হয়েছে। আর তৃতীয়ত, অর্থনৈতিকভাবে ভংগুরতা না হওয়ার মাত্রা নামিয়ে আনতে হয় ৩২ শতাংশে। বাংলাদেশ এ মুহূর্তে এই সূচকটি ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। ‘স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা (এলডিসি) থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বে এখন বাংলাদেশের নতুন পরিচয় মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মডেল। গরিব দেশ,  শুধু সাহায্য চায়,এ রকম ভাবমূর্তি এখন আর নেই বাংলাদেশের। বরং বাংলাদেশের সফলতার এই অগ্রযাত্রা আরও প্রসারিত হবে, আরও দ্রুত এগিয়ে যাবে দেশ। উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাওয়ার আনন্দ উদযাপনে এমনটাই বলছেন সরকার সংশ্লিষ্টরা।

উন্নয়নশীল দেশ হতে যে তিনটি সূচকের দরকার হয়, তা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মূল্যায়নের নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে এ ঘোষণা কার্যকর হবে ২০২৪ সালে। জাতিসংঘের ইকোনমিক ও সোশ্যাল কাউন্সিল উল্লিখিত তিনটি বিষয় বিবেচনা করে বাংলাদেশকে এ ঘোষণা দিয়েছে। যা বাংলাদেশ সরকারের হাতে এসেছে ১৭ মার্চে, বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিনে।’

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.নুরুল ইসলাম জানান, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার মানদন্ডে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার। মানব সম্পদ উন্নয়ন সূচক ৬৬ শতাংশ বা তার বেশি এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক ৩২ বা তার কম নির্ধারণ করা হয়। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৭১ মার্কিন ডলার। মানবসম্পদ সূচক ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ হওয়ায় বাংলাদেশ এ স্বীকৃতি পেয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক সমিতির সভাপতি মীর রফিকুল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘের ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলের মূল্যায়ন কমিটি বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ ঘোষণা কার্যকর হতে প্রস্তুতির সময় থাকবে। সেই সময় নিয়েই বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি সূবর্ণ জয়ন্তীতে ২০২১ সালে বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের পরিচিতি পাবে। যদিও বাংলাদেশের এই স্ট্যাটাস ২০২৪ সালে চূড়ান্ত ঘোষণা এবং ২০২৭ সালে তা কার্যকর হবে।