ঢাকা ১১:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুমের পর হত্যা; মামলা করে সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রোজ মঙ্গলবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ইং(মুরাদনগর বার্তা ডটকম):

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাড্ডা হাহাতি গ্রামের শ্বশুর বাড়ি থেকে গত বছরের ২ নভেম্বর রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন সৌদি প্রবাসি ময়নাল হোসন (৩৫)। এখনও ওই প্রবাসির জীবিত না মৃত এর কোন হদিস মেলেনি। তবে ছেলে নিখোঁজ নন বরং পরকিয়া প্রেমের জের এবং ছেলের সকল সম্পত্তি আত্মসাত করতেই স্ত্রীসহ শশুর বাড়ির লোকেরা তাকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে এমন দাবি মা আমেনা খাতুনের। এ ঘটনায় কুমিল্লার আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন তিনি। আর মামলা করেই ছেলের শশুর বাড়ির সন্ত্রাসী ও এলাকার প্রভাবশালীদের দেওয়া হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

এদিকে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ওই প্রবাসির কোন সন্ধান বা খুন-গুমের কোন রহস্য উম্মোচিত না হতেই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। ওই প্রভাবশালীরা এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বৈঠক করে প্রবাসির মা আমেনাকে মামলা থেকে সড়ে দাঁড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন। আদালতে দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তদন্ত করছেন। তবে রহস্যজনক কারনে পুলিশ নিরব থাকায় তদন্তে কোন আলোর মুখ নেই বলেও ওই প্রবাসির মায়ের অভিযোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার আকাবপুর গ্রামের মৃত.আব্দুল কাদিরের ছেলে ময়নাল হোসেনের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর পূর্বে সামাজিকভাবে বিবাহ হয় পার্শ্ববর্তী জাড্ডা (হাহাতি) গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে তাছলিমা আক্তারের। বর্তমানে তাদের সংসারে ২টি সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছু দিন পরই সৌদিতে পাড়ি জমায় ময়নাল। প্রবাসে যাওয়ার পর স্ত্রীর প্ররোচনায় নিজের মায়ের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রক্ষা না করে বিদেশে অর্জিত সকল টাকা স্ত্রীর কাছে পাঠাতেন ময়নাল। আর সেই টাকা দিয়ে স্ত্রী তাছলিমা নিজের নামে এবং তার মামা আবদুল জলিল ওরফে জলিল মাষ্টার ও নুরু মিয়ার নামে প্রায় ৫ বিঘা সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। এছাড়াও স্ত্রী তাছলিমার কাছে ওই প্রবাসির অর্জিত সকল নগদ অর্থই রয়েছে। জানা গেছে, স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাছলিমা তার বড় বোনের স্বামী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রীর পরকিয়া বিষয়টি জানতে পেরে সর্বশেষ গত বছরের ৩০ অক্টোবর সৌদি থেকে দেশে ফিরে ময়নাল সরাসরি তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর কাছে পাঠানো টাকার হিসাব ও ক্রয়কৃত সম্পত্তির তথ্য জানতে চান। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কয়েক দফা ঝগড়া-বিবাদও হয়।

ওই প্রবাসির মা আমেনা খাতুনের অভিযোগ, ময়নালের সকল সম্পদ আত্মসাত করতেই তাছলিমা তার পরিবারের লোকদের দিয়ে ময়নালকে খুন করে লাশ গুম করেছে। এরপর গত ২ নভেম্বর ময়নাল তার শ্বশুর বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছে বলে থানায় একটি জিডি করে তাছলিমা। তবে জিডি করেই তাছলিমা তার পরিবারের সদস্যদের অজানা কারনে আত্মগোপনে চলে যায়।

ওই প্রবাসির মা অভিযোগ করে আরও বলেন, আমি যখন লোকমুখে জানতে পারি আমার ছেলেকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে। তখন আমি ঘাতকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে মুরাদনগর থানায় যায়। পরে পুলিশ রহস্যজনক কারনে আমার কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে টিপসই নেয়। এছাড়া ১ ডিসেম্বর পুলিশ ওই সাদা কাগজে তাদের মনগড়া আসামীর নাম লিখে একটি মামলা নেয়। পরে জানতে পারি ওই মামলায় নাজমুল হোসেন মোল্লা নামে গোপালগঞ্জের এক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে। অথচ আমি ওই লোককে চিনিই না। তিনি বলেন, থানা পুলিশের এমন রহস্যজনক ঘটনা দেখে বুঝতে পারি এখানে কোন বিচার পাবো না। তাই নিরুপায় হয়ে গত ৯ ডিসেম্বর কুমিল্লার আদালতে ৭ জনকে আসামী করে অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে আমার ছেলেকে খুনের পর লাশ গুমের অভিযোগে একটি মামলা (সিআর-৫১৭/১৫) করি। মামলার আসামীরা হলো, ময়নালের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার, তাঁর মামা আবদুল জলিল, নুরু মিয়া, সহিদ মিয়া, তাসলিমার মা জোহরা বেগম, সহিদের ছেলে গফুর মিয়া ও ভগ্নিপতি সাদ্দম হোসেন (তাছলিমার পরকিয়া প্রেমিক)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রবাসি নিখোঁজ বা খুনের পর গুম এমন অভিযোগে থানা ও আদালতে একই বাদির দুই মামলা হওয়া পুলিশের মধ্যে ধ্রুমজাল সৃষ্টি হয়। পরে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উভয় মামলা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর তদন্তের নির্দেশ প্রদান করে। আর মামলা দু’টি তদন্তের দায়িত্ব পান জেলা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ কামাল আকন্দ।

মামলার বাদি ও প্রবাসীর মা আমেনার অভিযোগ, আদালতে মামলা দায়ের করার পর আসামীরা কিছু দিন আত্মগোপনে ছিলো। কিন্তু গত প্রায় ১ মাস থেকে আসামীরা ফের এলাকায় এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য উল্টো আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। তিনি জানান, পুলিশকে এসব ঘটনা জানালেও পুলিশ আসামীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং উল্টো আসামীদের সহায়তা করছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমি আসামীদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তাই ছেলে খুন-গুমের বিচার চেয়েও আমাকে সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল এ হত্যা ও গুমের ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে প্রকৃত খুনিদের আড়াল করতেই উঠে-পড়ে লেগেছেন। সম্প্রতি উপজেলার আহমদপুর গ্রামের আবু জাহের এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাঁর এলাকায় বেশ কয়েকবার বৈঠক ডাকেন।
ওই বৈঠকে উপস্থিত এলাকার মাতাব্বর নোয়ার সরকার ও আকুবপুর গ্রামের মেম্বার সামছুল আলম জানান, জাহের আমাদের অনেককেই ডেকেছিলো ঘটনাটি সমাধানের জন্য। পরে আমরা তাকে বলেছি, ময়নাল মৃত নাকি জীবিত তা জানি না। এ ঘটনা কিভাবে সমাধান করবো। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ বিষয়ে জানতে আহমদপুর গ্রামের আবু জাহেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে তিনি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত তাসলিমা ও তার পরবিারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম জানান, মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে অনেক দূর। আশা করছি আগামি এক সপ্তাহের মধ্যেই এই নিখোঁজের রহস্য বের করতে পারবো। তিনি জানান, ওই প্রবাসি যদি জীবিত থাকে তাহলে তাকে জীবিত আর যদি তাকে হত্যা করা হয় তাহলে তার লাশ উদ্ধারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ট্যাগস

গুমের পর হত্যা; মামলা করে সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মা

আপডেট সময় ০৮:০২:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রোজ মঙ্গলবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ইং(মুরাদনগর বার্তা ডটকম):

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাড্ডা হাহাতি গ্রামের শ্বশুর বাড়ি থেকে গত বছরের ২ নভেম্বর রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন সৌদি প্রবাসি ময়নাল হোসন (৩৫)। এখনও ওই প্রবাসির জীবিত না মৃত এর কোন হদিস মেলেনি। তবে ছেলে নিখোঁজ নন বরং পরকিয়া প্রেমের জের এবং ছেলের সকল সম্পত্তি আত্মসাত করতেই স্ত্রীসহ শশুর বাড়ির লোকেরা তাকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে এমন দাবি মা আমেনা খাতুনের। এ ঘটনায় কুমিল্লার আদালতে মামলাও দায়ের করেছেন তিনি। আর মামলা করেই ছেলের শশুর বাড়ির সন্ত্রাসী ও এলাকার প্রভাবশালীদের দেওয়া হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

এদিকে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ওই প্রবাসির কোন সন্ধান বা খুন-গুমের কোন রহস্য উম্মোচিত না হতেই ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। ওই প্রভাবশালীরা এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার বৈঠক করে প্রবাসির মা আমেনাকে মামলা থেকে সড়ে দাঁড়ানোর হুমকি দিচ্ছেন। আদালতে দায়ের করা মামলাটি বর্তমানে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তদন্ত করছেন। তবে রহস্যজনক কারনে পুলিশ নিরব থাকায় তদন্তে কোন আলোর মুখ নেই বলেও ওই প্রবাসির মায়ের অভিযোগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার আকাবপুর গ্রামের মৃত.আব্দুল কাদিরের ছেলে ময়নাল হোসেনের সঙ্গে প্রায় ১০ বছর পূর্বে সামাজিকভাবে বিবাহ হয় পার্শ্ববর্তী জাড্ডা (হাহাতি) গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে তাছলিমা আক্তারের। বর্তমানে তাদের সংসারে ২টি সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছু দিন পরই সৌদিতে পাড়ি জমায় ময়নাল। প্রবাসে যাওয়ার পর স্ত্রীর প্ররোচনায় নিজের মায়ের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ রক্ষা না করে বিদেশে অর্জিত সকল টাকা স্ত্রীর কাছে পাঠাতেন ময়নাল। আর সেই টাকা দিয়ে স্ত্রী তাছলিমা নিজের নামে এবং তার মামা আবদুল জলিল ওরফে জলিল মাষ্টার ও নুরু মিয়ার নামে প্রায় ৫ বিঘা সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। এছাড়াও স্ত্রী তাছলিমার কাছে ওই প্রবাসির অর্জিত সকল নগদ অর্থই রয়েছে। জানা গেছে, স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাছলিমা তার বড় বোনের স্বামী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রীর পরকিয়া বিষয়টি জানতে পেরে সর্বশেষ গত বছরের ৩০ অক্টোবর সৌদি থেকে দেশে ফিরে ময়নাল সরাসরি তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর কাছে পাঠানো টাকার হিসাব ও ক্রয়কৃত সম্পত্তির তথ্য জানতে চান। এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কয়েক দফা ঝগড়া-বিবাদও হয়।

ওই প্রবাসির মা আমেনা খাতুনের অভিযোগ, ময়নালের সকল সম্পদ আত্মসাত করতেই তাছলিমা তার পরিবারের লোকদের দিয়ে ময়নালকে খুন করে লাশ গুম করেছে। এরপর গত ২ নভেম্বর ময়নাল তার শ্বশুর বাড়ি থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছে বলে থানায় একটি জিডি করে তাছলিমা। তবে জিডি করেই তাছলিমা তার পরিবারের সদস্যদের অজানা কারনে আত্মগোপনে চলে যায়।

ওই প্রবাসির মা অভিযোগ করে আরও বলেন, আমি যখন লোকমুখে জানতে পারি আমার ছেলেকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে। তখন আমি ঘাতকদের বিরুদ্ধে মামলা করতে মুরাদনগর থানায় যায়। পরে পুলিশ রহস্যজনক কারনে আমার কাছ থেকে কয়েকটি সাদা কাগজে টিপসই নেয়। এছাড়া ১ ডিসেম্বর পুলিশ ওই সাদা কাগজে তাদের মনগড়া আসামীর নাম লিখে একটি মামলা নেয়। পরে জানতে পারি ওই মামলায় নাজমুল হোসেন মোল্লা নামে গোপালগঞ্জের এক ব্যক্তিকে আসামী করা হয়েছে। অথচ আমি ওই লোককে চিনিই না। তিনি বলেন, থানা পুলিশের এমন রহস্যজনক ঘটনা দেখে বুঝতে পারি এখানে কোন বিচার পাবো না। তাই নিরুপায় হয়ে গত ৯ ডিসেম্বর কুমিল্লার আদালতে ৭ জনকে আসামী করে অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে আমার ছেলেকে খুনের পর লাশ গুমের অভিযোগে একটি মামলা (সিআর-৫১৭/১৫) করি। মামলার আসামীরা হলো, ময়নালের স্ত্রী তাসলিমা আক্তার, তাঁর মামা আবদুল জলিল, নুরু মিয়া, সহিদ মিয়া, তাসলিমার মা জোহরা বেগম, সহিদের ছেলে গফুর মিয়া ও ভগ্নিপতি সাদ্দম হোসেন (তাছলিমার পরকিয়া প্রেমিক)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রবাসি নিখোঁজ বা খুনের পর গুম এমন অভিযোগে থানা ও আদালতে একই বাদির দুই মামলা হওয়া পুলিশের মধ্যে ধ্রুমজাল সৃষ্টি হয়। পরে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উভয় মামলা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশকে গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর তদন্তের নির্দেশ প্রদান করে। আর মামলা দু’টি তদন্তের দায়িত্ব পান জেলা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ কামাল আকন্দ।

মামলার বাদি ও প্রবাসীর মা আমেনার অভিযোগ, আদালতে মামলা দায়ের করার পর আসামীরা কিছু দিন আত্মগোপনে ছিলো। কিন্তু গত প্রায় ১ মাস থেকে আসামীরা ফের এলাকায় এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য উল্টো আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। তিনি জানান, পুলিশকে এসব ঘটনা জানালেও পুলিশ আসামীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বরং উল্টো আসামীদের সহায়তা করছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমি আসামীদের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। তাই ছেলে খুন-গুমের বিচার চেয়েও আমাকে সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল এ হত্যা ও গুমের ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়ে প্রকৃত খুনিদের আড়াল করতেই উঠে-পড়ে লেগেছেন। সম্প্রতি উপজেলার আহমদপুর গ্রামের আবু জাহের এ ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাঁর এলাকায় বেশ কয়েকবার বৈঠক ডাকেন।
ওই বৈঠকে উপস্থিত এলাকার মাতাব্বর নোয়ার সরকার ও আকুবপুর গ্রামের মেম্বার সামছুল আলম জানান, জাহের আমাদের অনেককেই ডেকেছিলো ঘটনাটি সমাধানের জন্য। পরে আমরা তাকে বলেছি, ময়নাল মৃত নাকি জীবিত তা জানি না। এ ঘটনা কিভাবে সমাধান করবো। এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ বিষয়ে জানতে আহমদপুর গ্রামের আবু জাহেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিন আগে তিনি বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত তাসলিমা ও তার পরবিারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ কামাল আকন্দ পিপিএম জানান, মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে অনেক দূর। আশা করছি আগামি এক সপ্তাহের মধ্যেই এই নিখোঁজের রহস্য বের করতে পারবো। তিনি জানান, ওই প্রবাসি যদি জীবিত থাকে তাহলে তাকে জীবিত আর যদি তাকে হত্যা করা হয় তাহলে তার লাশ উদ্ধারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।