ঢাকা ১১:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে কমবে ‘স্মৃতিভ্রংশ’

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির বুদ্ধি, স্মৃতি ও ব্যক্তিত্ব লোপ পায় এবং এই রোগ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। এই রোগে আক্রান্তরা হঠাৎ করেই অনেক কিছু মনে করতে পারে না। ফলে তার আচরণে অস্বাভাবিকতা চলে আসে।

 

ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার-এর একদল গবেষক দুই লাখ মানুষের ওপর একটি গবেষণা করে এই ফলাফল পেয়েছেন। তারা দেখতে পেয়েছেন, স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপন করতে পারলে যে কারোর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ কমে যায়। এমনকি কারো বংশেও যদি এই রোগ থাকে তাহলে স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমে স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি কমান সম্ভব। এই ফলাফল দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গবেষক দল। তারা দেখেছেন নিয়মানুবর্তী জীবনযাপন করার ফলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়েছে। স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্তের ঝুঁকিও কমে গেছে।

স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন বলতে বিজ্ঞানীরা কিছু বিষয়কে বিবেচনা করেছেন। এই যেমন ধূমপান না করা, অ্যালকোহল গ্রহণ না করা, সুষম ও সময় মতো খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা ইত্যাদি। অর্থাৎ কেউ যদি দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় ব্যায়াম করে, সময়মতো সুষম খাবার গ্রহণ করে এবং ধূমপান ও মদ্যপানের মতো বাজে অভ্যাসে অভ্যস্ত না হন তাহলে তার স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। অন্যদিকে যেসব মানুষের জীবনযাত্রার মধ্যে এর বিপরীত চরিত্র থাকে তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

৬৪ বছর বয়সী এক লাখ ৯৬ হাজার মানুষের ওপর আট বছর ধরে এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ডিএনএ, বংশগত রোগের ইতিহাস রয়েছে কি না সেসব তথ্যও সংগ্রহ করেন তারা। পরিসংখ্যান থেকে তারা জানতে পেরেছেন, প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে গড়ে ১৮ জনই বংশগত কারণে কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জন্য স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্ত হন। গবেষকরা দেখেছেন, এই ধরনের মানুষরা যদি স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপন করে তাহলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রতি হাজারে ১১ জনে নামিয়ে আনা সম্ভব। এক হাজার জনের হিসেবে এই সংখ্যাকে অনেকের কাছেই উল্লেখযোগ্য মনে নাও হতে পারে। কিন্তু যদি লক্ষ-কোটি মানুষের কথা বিবেচনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে শুধু নির্দিষ্ট এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে স্মৃতিভ্রংশের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন কোটি মানুষ। আমরা হয়তো আমাদের জিনকে বদলাতে পারব না কিংবা বংশগত এই সমস্যাকে অস্বীকার করতে পারব না। কিন্তু আমরা চাইলেই জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে স্মৃতিভ্রংশের হাত থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারি।-বিবিসি

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে কমবে ‘স্মৃতিভ্রংশ’

আপডেট সময় ০৩:৪৮:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯
লাইফস্টাইল ডেস্ক:

ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির বুদ্ধি, স্মৃতি ও ব্যক্তিত্ব লোপ পায় এবং এই রোগ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। এই রোগে আক্রান্তরা হঠাৎ করেই অনেক কিছু মনে করতে পারে না। ফলে তার আচরণে অস্বাভাবিকতা চলে আসে।

 

ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার-এর একদল গবেষক দুই লাখ মানুষের ওপর একটি গবেষণা করে এই ফলাফল পেয়েছেন। তারা দেখতে পেয়েছেন, স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপন করতে পারলে যে কারোর এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ কমে যায়। এমনকি কারো বংশেও যদি এই রোগ থাকে তাহলে স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমে স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি কমান সম্ভব। এই ফলাফল দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গবেষক দল। তারা দেখেছেন নিয়মানুবর্তী জীবনযাপন করার ফলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়েছে। স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্তের ঝুঁকিও কমে গেছে।

স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন বলতে বিজ্ঞানীরা কিছু বিষয়কে বিবেচনা করেছেন। এই যেমন ধূমপান না করা, অ্যালকোহল গ্রহণ না করা, সুষম ও সময় মতো খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা ইত্যাদি। অর্থাৎ কেউ যদি দিনের নির্দিষ্ট একটা সময় ব্যায়াম করে, সময়মতো সুষম খাবার গ্রহণ করে এবং ধূমপান ও মদ্যপানের মতো বাজে অভ্যাসে অভ্যস্ত না হন তাহলে তার স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। অন্যদিকে যেসব মানুষের জীবনযাত্রার মধ্যে এর বিপরীত চরিত্র থাকে তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

৬৪ বছর বয়সী এক লাখ ৯৬ হাজার মানুষের ওপর আট বছর ধরে এই গবেষণা পরিচালিত হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ডিএনএ, বংশগত রোগের ইতিহাস রয়েছে কি না সেসব তথ্যও সংগ্রহ করেন তারা। পরিসংখ্যান থেকে তারা জানতে পেরেছেন, প্রতি এক হাজার মানুষের মধ্যে গড়ে ১৮ জনই বংশগত কারণে কিংবা অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের জন্য স্মৃতিভ্রংশে আক্রান্ত হন। গবেষকরা দেখেছেন, এই ধরনের মানুষরা যদি স্বাস্থ্য সম্মত জীবনযাপন করে তাহলে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রতি হাজারে ১১ জনে নামিয়ে আনা সম্ভব। এক হাজার জনের হিসেবে এই সংখ্যাকে অনেকের কাছেই উল্লেখযোগ্য মনে নাও হতে পারে। কিন্তু যদি লক্ষ-কোটি মানুষের কথা বিবেচনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে শুধু নির্দিষ্ট এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে স্মৃতিভ্রংশের হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন কোটি মানুষ। আমরা হয়তো আমাদের জিনকে বদলাতে পারব না কিংবা বংশগত এই সমস্যাকে অস্বীকার করতে পারব না। কিন্তু আমরা চাইলেই জীবনযাপনে পরিবর্তন এনে স্মৃতিভ্রংশের হাত থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারি।-বিবিসি