তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:
পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের প্রান্তগুলো ১০০ মিটার বা তার বেশি বিকৃত হয়েছে বলে দাবি করছেন একদল বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ন্যাচারাল জিওসাইন্সে প্রকাশিত হয়েছে এ তথ্য। গবেষণায় নেতৃত্বে ছিলেন- ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞানী অধ্যাপক জন ভিডাল। খবর বিবিসির
গবেষণায় বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান করেন, কেন অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি পৃথিবীর ঘূর্ণনের তুলনায় ধীরে ঘুরতে শুরু করেছে ও ২০১০ সালে পুনরায় কেন গতি ফিরে পেয়েছিল এবং পৃথিবীর কেন্দ্র কীভাবে কাজ করে- তা বুঝতে অনুসন্ধান করেন।
এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর অংশ পৃথিবীর কেন্দ্রস্থল। এটি একটি সলিড কোর, যা পুরো পৃথিবীর কেন্দ্রের নিকটবর্তী অবস্থিত। এর চারপাশে রয়েছে তরল বহির্ভাগের কেন্দ্র এবং অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রটি তরল বহির্ভাগের কেন্দ্রের তুলনায় আলাদাভাবে ঘুরে। এই ঘূর্ণনটি পৃথিবীর পৃষ্ঠের (উপরিতল) তুলনায় একদম আলাদা গতিতে ঘটে।
তারা আরও জানান, এটি যদি থেমে যায়, তাহলে পৃথিবী মঙ্গলগ্রহের মতো নিষ্প্রাণ হয়ে পড়বে। অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কেন্দ্রের সংযোগস্থলে এই পরিবর্তন ঘটছে বলে ধারণা করছে বিজ্ঞানীরা। তারা এই পরিবর্তনের প্রমাণ পেয়েছেন ১৯৯১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে একই স্থানে বারবার হওয়া ভূমিকম্পের তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে।
এ বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হ্রভোজে টকালসিক জানান, এই আবিষ্কার অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের ঘনত্ব সম্পর্কে আরও নিখুঁত ধারণা দিতে পারে। অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের এই পরিবর্তন পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে বলে ধারনা করছেন অনেক সতর্কতা বিজ্ঞানীরা।
অধ্যাপক ভিডাল বলেন, ‘গত কয়েক দশকে চৌম্বক ক্ষেত্রে আকস্মিক পরিবর্তন দেখা গেছে। এটি অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত কি না আমরা জানতে চাই।’
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এখনই এই গবেষণার ফলাফল অতিরঞ্জিত করা উচিত নয়। কারণ এখনো অনেক অনিশ্চয়তা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই পরিবর্তনগুলো সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করছে কি না শতভাগ নিশ্চিত করেনি বিজ্ঞানীরা। তবে তিনি মনে করেন, এই গবেষণা ভবিষ্যতে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গতিবিদ্যা ও চৌম্বকক্ষেত্র সম্পর্কে আরও গভীর বোঝাপড়ার পথ স্পষ্ট করবে।