ঢাকা ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে এক বছরে বিষপানে ২২৫জনের আত্মহত্যা

আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে গত এক বছরে বিষপানে ২২৫জন আত্মহত্যা করেছে। বিষ সহজলভ্য হওয়ায় আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনা এক :

মিলির (ছদ্মনাম) বয়স ১৩। এরই মধ্যে তার আচার আচরণে বাবা মা পরিবর্তন দেখতে পান। মাঝে মাঝে সে বাবার মোবাইলে লুকিয়ে লুকিয়ে কার সাথে যেন কথা বলে। প্রথমে বাবা মা তেমন কিছু মনে করেনি। তারা ভাবতেন হয়তো সে কোন বান্ধবীর সাথে কথা বলে। মোবাইলে কথা বলার পরিমাণ বেড়ে গেলে মা তাকে একদিন ডেকে জেরা করতে থাকে, সে কার সাথে এত কথা বলে। জেরার মুখে সে বাধ্য হয়ে স্বীকার করে যে সে জসিম নামের একজনের সাথে প্রেম করে। মা তাকে বুঝাতে চেষ্টা করে এখন তার প্রেম করার বয়স না বরং পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে বলে। কিšুÍ মিলির কিছু ভালো লাগে না। স্কুলের পরীক্ষায় খারাপ করাতে মা বাবা তাকে শাসন করে। মিলির বাবা মায়ের শাসন ভাল লাগে না। একদিন মিলি বাবা মায়ের শাসনে বিরক্ত হয়ে গ্রামের মুদির দোকান থেকে ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করে।

ঘটনা দুই:

রহিমা (ছদ্মনাম) বিয়ের প্রথম কয়েক বছর যাবত সংসার সুখেই কাটছিল। স্বামী করিম প্রায়ই মদপান করে আর বাড়িতে অশান্তি করে শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলতো।

দু’একবার টাকা এনেও দিয়েছে। এতেও ক্ষ্যান্ত হয়নি মাতাল স্বামী। নির্যাতন সইতে না পেরে রহিমা কেরির বড়ি খেয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে।

উপরের দুটি ঘটনায়ই আংশিক নয় পুরো সত্য। শুধু প্রকৃত নাম প্রকাশ করা হয়নি। আর এমন ঘটনা অহরহ ঘটেছে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে। সাম্প্রতিক থানার অপমৃত্যুর রেকর্ড খাতায় দেখা গেছে, এই থানা এলাকায় গত এক বছরে ২২৫ জন বিষপানে মারা গেছে। কুমিল্লা জেলার মধ্যে অন্য কোন থানায় এত পরিমাণ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি। আবার অনেকেই পরিমাণে কম খাওয়াতে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়েছে। যা অভিভাবকদের মনে ভয় এবং আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে গত একমাসে ২০টি গ্রাম ঘুরে একাধিক অভিভাবক আর তরুণ-তরুণীদের সাথে আলোচনা করে জানা যায়,আগে মা-বাবা বাল্য বিবাহ সম্পর্কে তেমন সচেতন ছিলেন না বলে অল্প বয়সে ছেলে মেয়েদেকে বিয়ে দিতেন। কিন্তু এখন উল্টোটা হচ্ছে। অল্প বয়সে মোবাইলে ছেলে-মেয়েরা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। বাবা মা তাদের শাসন করে। বাবা মায়ের শাসন তাদের ভাল লাগেনা। বাবা-মা পড়াশুনায় উৎসাহিত করলেও তা তাদের ভাল লাগে না। এতে তারা পালিয়ে বিয়ে করছে। আর অনেকে বাবা-মায়ের শাসন বা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। বড়দের ক্ষেত্রে আত্ম-হত্যার সাথে নির্যাতন, নেশা ও পারিবারিক কলহ জড়িত। আর তারা হাতের কাছে পাড়া বা মহল্লার মুদির দোকান গুলো থেকে খুব সহজে ইঁদুর মারার বা কেরির বড়ি কিনে খেয়ে আত্মহত্যা করছে।

কিন্তু নিয়মে আছে বা আইন বলে, উপজেলা কৃষি অফিসের লাইন্সেস ব্যাতিত কেউ কীটনশাক ঔষধ বিক্রি করতে পারবে না। শুধু তাই নয়, যে ব্যবসায়ী কীটনশাক ঔষধ বিক্রি করবে সে দোকানে অন্যকোন মালামাল রাখতে পারবে না। যার কাছে কীটনশাক বিক্রি করবে সে প্রাপ্ত বয়স্ক ও পরিচিত হতে হবে। অপরিচিত হলে তার নাম ঠিকানা লিখে রাখতে হবে। ব্যবসায়ীর দোকান ঘর আধাপাঁকা হতে হবে, আলমিরাতে ঔষধ সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে এই উপজেলার চিত্র ভিন্ন। পাড়া মহল্লার মুদি দোকান গুলোতে পাওয়া যাচ্ছে ইঁদুর মারার ঔষধ ও কেরির বড়ি। ফলে হাতের কাছে অপেক্ষাকৃত কমমূল্যের এই বিষ পেয়ে সাধারণ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও আত্মহত্যার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে এই উপজেলার গ্রামগুলোতে।

উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের সবচেয়ে প্রবীণ সার বীজ ব্যবসায়ী প্রদীপ বাবু বলেন,

‘আমি পাইকারী বিক্রেতা। নিয়ম-কানুন মেনে ঔষধ ও বীজ বিক্রি করি, অন্যথায় লাইন্সেস হারানোর ভয় আছে। যাদের লাইন্সেস নেই তারা দু’ই পয়সা লাভের আসায় যার তার কাছে বিষ বিক্রি করছে। কর্তৃপক্ষ যদি নিয়মিত মনিটরিং করে এবং সভা সেমিনার বা উঠান বৈঠক তরে গ্রাম এলাকার মুদিদোকান বা ফার্মেসি ব্যবসায়ীদেরকে এই ধরণের বিষ বিক্রি থেকে বিরত থাকতে বারণ করতো, তা হলে এই উপজেলায় আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকংশে কমে আসতো।’’

মুরাদনগর ডি,আর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আ: কাদের বলেন, আত্মহত্যা মহাপাপ। এ কাজ থেকে বিরত থাকতে মহান আল্লাহ‌ তা’আলা বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং এর পরিনামের কথা ভাববার জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির বর্ণনা দিয়ে মহা পবিত্র আল কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ডা: মো: আবু জাহের বলেন, বিষ খেয়ে হাসপাতালে প্রায়ই কেউ না কেউ আসে চিকিৎসা নিতে। এন্ট্রি র‌্যাড (ইঁদুর মারার ঔষধ) ঔষধটি তৈরি হয় এ্যামুনিয়াম ফসফাইট দিয়ে। যা মানবদেহের পাকস্থলীতে গিয়ে পানি পেলে দ্রুত বিষাক্ত ফরজিন গ্যাসে পরিণত হয়, যা শ্বাস-প্রশ্বাসেরের ক্রিয়া বন্ধ করে দেয়, যার ফলে মানুষ খুব দ্রুতই মারা যায়। এই ঔষধ খাওয়া রোগীকে ওয়াশ করে ভালো করা সম্ভব হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সোম বলেন, এই উপজেলায় ১৩জন পাইকারী আর ২১৩জন খুচরা কীটশনাক ঔষধ বিক্রেতা আছেন। প্রত্যেকেই আইন মেনে ব্যবসা করছে কিনা সে দিকে আমাদের কঠোর নজরদারী আছে। তাছাড়াও আমাদের ৬৬টি ব্লকে একাশি হাজার নয়শ একাত্তরটি কৃষি পরিবার আছে। প্রত্যেকেই শস্য সংরক্ষণের জন্য বাসায় এ্যান্টি রেড স্থানীয় ভাবে যেটাকে কেরির বড়ি বলে সেটা বাড়িতে রাখে। আমরা এই কেরির বড়ির পরিবর্তে শস্য সংরক্ষণের জন্য নিমপাতা বা নিশিন্ধা পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতি ৫০ কেজি চাউলের মধ্যে একশ গ্রাম পাতার গুড়ো দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। কেরির বড়ি ব্যবহারের প্রচলন কমে গেলে আত্মহত্যার প্রচলন অনেকাংেশ কমে আসবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম খসরু বলেন, ‘‘আত্মহত্যা মানে নিজকে নিজে ধ্বংস করা। নিজ আত্মাকে চরম যন্ত্রণা ও কষ্ট দেয়া। নিজ হাতে নিজের জীবনের সকল কর্মকান্ডের পরিসমাপ্তি ঘটানো। উপজেলার গত আইনশৃঙ্খলা মিটিং’এ এই বিষয়ে শক্ত ভূমিকা রাখার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।

ট্যাগস

মুরাদনগরে এক বছরে বিষপানে ২২৫জনের আত্মহত্যা

আপডেট সময় ০২:০২:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬
আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে গত এক বছরে বিষপানে ২২৫জন আত্মহত্যা করেছে। বিষ সহজলভ্য হওয়ায় আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঘটনা এক :

মিলির (ছদ্মনাম) বয়স ১৩। এরই মধ্যে তার আচার আচরণে বাবা মা পরিবর্তন দেখতে পান। মাঝে মাঝে সে বাবার মোবাইলে লুকিয়ে লুকিয়ে কার সাথে যেন কথা বলে। প্রথমে বাবা মা তেমন কিছু মনে করেনি। তারা ভাবতেন হয়তো সে কোন বান্ধবীর সাথে কথা বলে। মোবাইলে কথা বলার পরিমাণ বেড়ে গেলে মা তাকে একদিন ডেকে জেরা করতে থাকে, সে কার সাথে এত কথা বলে। জেরার মুখে সে বাধ্য হয়ে স্বীকার করে যে সে জসিম নামের একজনের সাথে প্রেম করে। মা তাকে বুঝাতে চেষ্টা করে এখন তার প্রেম করার বয়স না বরং পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে বলে। কিšুÍ মিলির কিছু ভালো লাগে না। স্কুলের পরীক্ষায় খারাপ করাতে মা বাবা তাকে শাসন করে। মিলির বাবা মায়ের শাসন ভাল লাগে না। একদিন মিলি বাবা মায়ের শাসনে বিরক্ত হয়ে গ্রামের মুদির দোকান থেকে ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করে।

ঘটনা দুই:

রহিমা (ছদ্মনাম) বিয়ের প্রথম কয়েক বছর যাবত সংসার সুখেই কাটছিল। স্বামী করিম প্রায়ই মদপান করে আর বাড়িতে অশান্তি করে শ্বশুর বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে বলতো।

দু’একবার টাকা এনেও দিয়েছে। এতেও ক্ষ্যান্ত হয়নি মাতাল স্বামী। নির্যাতন সইতে না পেরে রহিমা কেরির বড়ি খেয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে।

উপরের দুটি ঘটনায়ই আংশিক নয় পুরো সত্য। শুধু প্রকৃত নাম প্রকাশ করা হয়নি। আর এমন ঘটনা অহরহ ঘটেছে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে। সাম্প্রতিক থানার অপমৃত্যুর রেকর্ড খাতায় দেখা গেছে, এই থানা এলাকায় গত এক বছরে ২২৫ জন বিষপানে মারা গেছে। কুমিল্লা জেলার মধ্যে অন্য কোন থানায় এত পরিমাণ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি। আবার অনেকেই পরিমাণে কম খাওয়াতে চিকিৎসা নিয়ে ভালো হয়েছে। যা অভিভাবকদের মনে ভয় এবং আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরেজমিনে গত একমাসে ২০টি গ্রাম ঘুরে একাধিক অভিভাবক আর তরুণ-তরুণীদের সাথে আলোচনা করে জানা যায়,আগে মা-বাবা বাল্য বিবাহ সম্পর্কে তেমন সচেতন ছিলেন না বলে অল্প বয়সে ছেলে মেয়েদেকে বিয়ে দিতেন। কিন্তু এখন উল্টোটা হচ্ছে। অল্প বয়সে মোবাইলে ছেলে-মেয়েরা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। বাবা মা তাদের শাসন করে। বাবা মায়ের শাসন তাদের ভাল লাগেনা। বাবা-মা পড়াশুনায় উৎসাহিত করলেও তা তাদের ভাল লাগে না। এতে তারা পালিয়ে বিয়ে করছে। আর অনেকে বাবা-মায়ের শাসন বা প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। বড়দের ক্ষেত্রে আত্ম-হত্যার সাথে নির্যাতন, নেশা ও পারিবারিক কলহ জড়িত। আর তারা হাতের কাছে পাড়া বা মহল্লার মুদির দোকান গুলো থেকে খুব সহজে ইঁদুর মারার বা কেরির বড়ি কিনে খেয়ে আত্মহত্যা করছে।

কিন্তু নিয়মে আছে বা আইন বলে, উপজেলা কৃষি অফিসের লাইন্সেস ব্যাতিত কেউ কীটনশাক ঔষধ বিক্রি করতে পারবে না। শুধু তাই নয়, যে ব্যবসায়ী কীটনশাক ঔষধ বিক্রি করবে সে দোকানে অন্যকোন মালামাল রাখতে পারবে না। যার কাছে কীটনশাক বিক্রি করবে সে প্রাপ্ত বয়স্ক ও পরিচিত হতে হবে। অপরিচিত হলে তার নাম ঠিকানা লিখে রাখতে হবে। ব্যবসায়ীর দোকান ঘর আধাপাঁকা হতে হবে, আলমিরাতে ঔষধ সংরক্ষণ করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে এই উপজেলার চিত্র ভিন্ন। পাড়া মহল্লার মুদি দোকান গুলোতে পাওয়া যাচ্ছে ইঁদুর মারার ঔষধ ও কেরির বড়ি। ফলে হাতের কাছে অপেক্ষাকৃত কমমূল্যের এই বিষ পেয়ে সাধারণ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও আত্মহত্যার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলছে এই উপজেলার গ্রামগুলোতে।

উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজারের সবচেয়ে প্রবীণ সার বীজ ব্যবসায়ী প্রদীপ বাবু বলেন,

‘আমি পাইকারী বিক্রেতা। নিয়ম-কানুন মেনে ঔষধ ও বীজ বিক্রি করি, অন্যথায় লাইন্সেস হারানোর ভয় আছে। যাদের লাইন্সেস নেই তারা দু’ই পয়সা লাভের আসায় যার তার কাছে বিষ বিক্রি করছে। কর্তৃপক্ষ যদি নিয়মিত মনিটরিং করে এবং সভা সেমিনার বা উঠান বৈঠক তরে গ্রাম এলাকার মুদিদোকান বা ফার্মেসি ব্যবসায়ীদেরকে এই ধরণের বিষ বিক্রি থেকে বিরত থাকতে বারণ করতো, তা হলে এই উপজেলায় আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকংশে কমে আসতো।’’

মুরাদনগর ডি,আর সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আ: কাদের বলেন, আত্মহত্যা মহাপাপ। এ কাজ থেকে বিরত থাকতে মহান আল্লাহ‌ তা’আলা বিশেষভাবে নির্দেশ দান করেছেন এবং এর পরিনামের কথা ভাববার জন্য কঠোর ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির বর্ণনা দিয়ে মহা পবিত্র আল কুরআনে আয়াত অবতীর্ণ করেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ডা: মো: আবু জাহের বলেন, বিষ খেয়ে হাসপাতালে প্রায়ই কেউ না কেউ আসে চিকিৎসা নিতে। এন্ট্রি র‌্যাড (ইঁদুর মারার ঔষধ) ঔষধটি তৈরি হয় এ্যামুনিয়াম ফসফাইট দিয়ে। যা মানবদেহের পাকস্থলীতে গিয়ে পানি পেলে দ্রুত বিষাক্ত ফরজিন গ্যাসে পরিণত হয়, যা শ্বাস-প্রশ্বাসেরের ক্রিয়া বন্ধ করে দেয়, যার ফলে মানুষ খুব দ্রুতই মারা যায়। এই ঔষধ খাওয়া রোগীকে ওয়াশ করে ভালো করা সম্ভব হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র সোম বলেন, এই উপজেলায় ১৩জন পাইকারী আর ২১৩জন খুচরা কীটশনাক ঔষধ বিক্রেতা আছেন। প্রত্যেকেই আইন মেনে ব্যবসা করছে কিনা সে দিকে আমাদের কঠোর নজরদারী আছে। তাছাড়াও আমাদের ৬৬টি ব্লকে একাশি হাজার নয়শ একাত্তরটি কৃষি পরিবার আছে। প্রত্যেকেই শস্য সংরক্ষণের জন্য বাসায় এ্যান্টি রেড স্থানীয় ভাবে যেটাকে কেরির বড়ি বলে সেটা বাড়িতে রাখে। আমরা এই কেরির বড়ির পরিবর্তে শস্য সংরক্ষণের জন্য নিমপাতা বা নিশিন্ধা পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে প্রতি ৫০ কেজি চাউলের মধ্যে একশ গ্রাম পাতার গুড়ো দেয়ার পরামর্শ দিচ্ছি। কেরির বড়ি ব্যবহারের প্রচলন কমে গেলে আত্মহত্যার প্রচলন অনেকাংেশ কমে আসবে।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম খসরু বলেন, ‘‘আত্মহত্যা মানে নিজকে নিজে ধ্বংস করা। নিজ আত্মাকে চরম যন্ত্রণা ও কষ্ট দেয়া। নিজ হাতে নিজের জীবনের সকল কর্মকান্ডের পরিসমাপ্তি ঘটানো। উপজেলার গত আইনশৃঙ্খলা মিটিং’এ এই বিষয়ে শক্ত ভূমিকা রাখার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি।