ঢাকা ০৩:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে জাল টাকা দিয়ে ব্যবসায়ীকে ফাসাঁনোর চেষ্টা, জনতার হাতে ৪ পুলিশ অবরুদ্ধ

মো: আবুল খায়ের, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার হায়দাবাদ বাজারের এক ব্যবসায়ীর দোকানে পুলিশ জাল টাকা রেখে ফাসাঁনোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় উত্তেজিত জনতা বাঙ্গরা থানার এএসআইসহ ৩ পুলিশকে অবরুদ্ধ করে। অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারের সময় পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেট, টিয়ার সেল ও লাঠি চার্জ করে। এ সময় নারী পুরুষসহ ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়। পুলিশসহ আহত হয় প্রায় ৩০ জন।

সোমবার সকাল ১০ টায় সাদা পোষোকে অভিযানের নামে ব্যবসায়ীকে জাল টাকা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে। দুপুরে বাঙ্গরা থানা ও মিরপুর পুলিশ ফাড়িঁ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন, শিশু সৌরভ (৫), ছালমা (৪০), হাবিব (৪৫), ফরহাদ (৩৫), মাসু বেগম (৫৫), নসু মিয়া (২৫), হবি মিয়া (৪৫) ও লিল মিয়া (৫০)।

অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যরা হলেন, এএসআই মোসলেম, কনেষ্টেবল করিম, জামাল ও জামাল।

স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সকাল ১০ টার দিকে বাঙ্গরা থানার এএসআই মোসলেমসহ ৪ পুলিশ সদস্য সাদা পোষাকে হায়দরাবাদের বাদামতলী বাজারে জাল টাকা উদ্ধার অভিযানে যায়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জামিলা ভ্যারাইটিজ দোকানের মালিক মো: সোহেল মিয়ার দোকানে জাল টাকা রয়েছে বলে অভিযোগ করে তাকে আটকের চেষ্টা চালায়। ইতিপূর্বে ও সোহেলের দোকানে জালটাকা ঢুকিয়ে সোহেলকে ফাসাঁনের চেষ্টা করেছে একটি মহল। গত ২৩ জুলাই স্থানীয় লোকজন ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা সহ মোখলেছকে আটক করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।

ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া জানায়, এএসআই মোসলেম তার সাথে করে ২ লাখ টাকার জাল নোট নিয়ে এসে তার দোকানে ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্ঠা করে। বিষয়টি নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হলে বাজারের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় লোকজন ওই পুলিশ সদস্যদেরকে ঘিরে ফেলে। পরে ক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন ৪ পুলিশ সদস্যকে ২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। আর একজন পালিয়ে জায়। পরে খবর পেয়ে বাঙ্গরা থানা ও মিরপুর পুলিশ ফাড়িঁ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে শতাধিক রাবার বুলেট, টিয়ার সেল নিক্ষেপ ও লাঠি চার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে হায়দরাবাদ এলাকার লোকজন চক্রান্তকারী পুলিশ সদস্যরা কার ইন্ধনে ওই ব্যবসায়ীকে জাল টাকা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে তা তদন্ত করে বের করার দাবী জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মুরাদনগর বি-সার্কেল) ইকবাল হোসেন হাজারী বলেন, চট্রগ্রাম থেকে হায়দরাবাদ বাজারে বিপুল পরিমান জাল টাকার একটি চালান এসেছে এমন খবর পেয়ে বাঙ্গরা থানার এএসআই মোসলেমসহ পুলিশ সদস্যরা অভিযানে যায়। এ সময় বাজারের সাধারণ সম্পাদক সোহেল মিয়ার দোকান থেকে ২ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করে তাকে আটকের চেষ্ঠা করলে সে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে ঘিরে ফেলে। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফাঁকা গুলি করে লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ সদস্যদেরকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, হায়দরাবাদ গ্রামে জাল টাকা উদ্ধারের অভিযানে কিছু দুস্কৃতিকারী কর্তৃক আমার ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এসময় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ ২৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

 

ট্যাগস

মুরাদনগরে জাল টাকা দিয়ে ব্যবসায়ীকে ফাসাঁনোর চেষ্টা, জনতার হাতে ৪ পুলিশ অবরুদ্ধ

আপডেট সময় ১০:২৫:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০১৬
মো: আবুল খায়ের, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার হায়দাবাদ বাজারের এক ব্যবসায়ীর দোকানে পুলিশ জাল টাকা রেখে ফাসাঁনোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় উত্তেজিত জনতা বাঙ্গরা থানার এএসআইসহ ৩ পুলিশকে অবরুদ্ধ করে। অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধারের সময় পুলিশ শতাধিক রাবার বুলেট, টিয়ার সেল ও লাঠি চার্জ করে। এ সময় নারী পুরুষসহ ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়। পুলিশসহ আহত হয় প্রায় ৩০ জন।

সোমবার সকাল ১০ টায় সাদা পোষোকে অভিযানের নামে ব্যবসায়ীকে জাল টাকা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে। দুপুরে বাঙ্গরা থানা ও মিরপুর পুলিশ ফাড়িঁ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে।

গুলিবিদ্ধরা হলেন, শিশু সৌরভ (৫), ছালমা (৪০), হাবিব (৪৫), ফরহাদ (৩৫), মাসু বেগম (৫৫), নসু মিয়া (২৫), হবি মিয়া (৪৫) ও লিল মিয়া (৫০)।

অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যরা হলেন, এএসআই মোসলেম, কনেষ্টেবল করিম, জামাল ও জামাল।

স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সকাল ১০ টার দিকে বাঙ্গরা থানার এএসআই মোসলেমসহ ৪ পুলিশ সদস্য সাদা পোষাকে হায়দরাবাদের বাদামতলী বাজারে জাল টাকা উদ্ধার অভিযানে যায়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জামিলা ভ্যারাইটিজ দোকানের মালিক মো: সোহেল মিয়ার দোকানে জাল টাকা রয়েছে বলে অভিযোগ করে তাকে আটকের চেষ্টা চালায়। ইতিপূর্বে ও সোহেলের দোকানে জালটাকা ঢুকিয়ে সোহেলকে ফাসাঁনের চেষ্টা করেছে একটি মহল। গত ২৩ জুলাই স্থানীয় লোকজন ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা সহ মোখলেছকে আটক করে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে।

ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া জানায়, এএসআই মোসলেম তার সাথে করে ২ লাখ টাকার জাল নোট নিয়ে এসে তার দোকানে ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে ফাঁসানোর চেষ্ঠা করে। বিষয়টি নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হলে বাজারের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় লোকজন ওই পুলিশ সদস্যদেরকে ঘিরে ফেলে। পরে ক্ষুব্ধ এলাকার লোকজন ৪ পুলিশ সদস্যকে ২ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। আর একজন পালিয়ে জায়। পরে খবর পেয়ে বাঙ্গরা থানা ও মিরপুর পুলিশ ফাড়িঁ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে শতাধিক রাবার বুলেট, টিয়ার সেল নিক্ষেপ ও লাঠি চার্জ করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে হায়দরাবাদ এলাকার লোকজন চক্রান্তকারী পুলিশ সদস্যরা কার ইন্ধনে ওই ব্যবসায়ীকে জাল টাকা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে তা তদন্ত করে বের করার দাবী জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মুরাদনগর বি-সার্কেল) ইকবাল হোসেন হাজারী বলেন, চট্রগ্রাম থেকে হায়দরাবাদ বাজারে বিপুল পরিমান জাল টাকার একটি চালান এসেছে এমন খবর পেয়ে বাঙ্গরা থানার এএসআই মোসলেমসহ পুলিশ সদস্যরা অভিযানে যায়। এ সময় বাজারের সাধারণ সম্পাদক সোহেল মিয়ার দোকান থেকে ২ লাখ জাল টাকা উদ্ধার করে তাকে আটকের চেষ্ঠা করলে সে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে ঘিরে ফেলে। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফাঁকা গুলি করে লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ সদস্যদেরকে উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, হায়দরাবাদ গ্রামে জাল টাকা উদ্ধারের অভিযানে কিছু দুস্কৃতিকারী কর্তৃক আমার ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এসময় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ ২৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।