মোঃ মোশাররফ হোসেন মানিরঃ
বর্ষার শুরুতেই কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর ও ডুমুরিয়া বাজারে এখন স্থানীয়ভাবে তৈরি করে নৌকা বিক্রির অনেকটা ধুম পড়েছে। বর্ষাকালে নদীতে পাল তোলা নৌকা চোখে কম পড়লেও কোষা নৌকা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এখনো ধরে রেখেছে। প্রাচীন কাল থেকে কোষা নৌকা হাটের জন্য বড় বাজার হিসাবে রামচন্দ্রপুর বাজার বেশ প্রসিদ্ধ। গত বছরের তুলনায় কাঠের দাম বেশি হওয়ায় এবার নৌকার মূল্য একটু বেশি হলেও। জমে উঠেছে নৌকা বিক্রির পালা।
মুরাদনগরসহ পার্শ্ববর্তী হোমনা, মেঘনা, দাউদকান্দি, তিতাস, বাঞ্চারামপুর ও নবীনগর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই কোষা নৌকা। কৃষকেরা গবাদি পশুর জন্য ঘাস কাটা, বর্ষা মৌসুমে চলাচল, জীবন জীবিকা, পরিবহনের প্রবান বাহক ছাড়াও দৈনন্দিন নানা রকম কাজকর্মে এই কোষা নৌকার ব্যবহার করে থাকে। বর্ষায় এই কোষা নৌকায় পন্যদ্রব্য সাজিয়ে ফেরিওয়ালারা তাদের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বেড়ায়। মুরাদনগরসহ পাশ্ববর্তী ৬টি উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠী অধ্যষিত অঞ্চলের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে মাছ শিকার করে জীবনধারন ও যাতায়তের জন্য এ কোষা নৌকার উপর নির্ভরশীল থাকেন।
সড়ক পথে আধুনিক যানবাহনে মানুষের যোগাযোগ বাড়লেও জল পথে কোষা নৌকার চাহিদার কোন কমতি নেই। বর্ষা মৌসুমে কাঠ মিস্ত্রিদের তেমন কাজ না থাকায় মুরাদনগর উপজেলার কৈজুরী, পাঁচকিত্তা ও তিতাস উপজেলার মেলামচর গ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে কোষা নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। ক্রেতা সাধারণেরা এবার কোষা নৌকার দাম চড়া বলে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকটা নিরুপায় হয়েই ক্রেতা সাধারণ এবার চড়া দামে স্থানীয় বাজার থেকে কোষা নৌকা কিনে নিচ্ছেন।