ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লিভার সমস্যায় করণীয়

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

জন্ডিস আমাদের দেশে খুব পরিচিত। লিভারের বহুল পরিচিত অসুখটির নাম জন্ডিস। চোখ ও প্রস্রাবের রংসহ সারাদেহ হলুদ হয়ে যাওয়া হলো জন্ডিসের উপসর্গ। আমাদের পেটের ডান পাশের ওপেরর দিকে থাকে লিভার বা যকৃত। যকৃত মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রোটিন, শকরা এবং চর্বি জাতীয় পদার্থের বিপাক নিয়ন্ত্রণ এবং সেগুলি হতে শক্তি উত্পাদন লিভারের কাজ। লিভার থেকে বিভিন্ন হরমোন এবং এনজাইম তৈরি হয়। এছাড়া লিভার থেকে প্লাজমা প্রোটিন এবং রক্ত জমাট বাঁধার বিভিন্ন উপাদান তৈরি হয়। আবার যকৃত থেকেই নিঃসৃত হয় বাইল বা পিওরস বা চর্বিজাতীয় খাবার বিপাক সহায়তা করে। লিভার আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। দেহের রক্ত প্রতি মুহূর্তে লিভারের ভেতর যায়। লিভার দেখে রক্তের সব উপাদান ঠিক আছে কি না এবং রক্তে ক্ষতিকর কোন পদার্থ আছে কিনা। রক্তে গ্লুকোজের স্বল্পতা থাকলে লিভার নিজের সঞ্চিত গ্লাকোজের থেকে সেটা পূরণ করে আর রক্তে গ্লুকোজ বেশি হলে তা লিভারের গ্লকোজের হিসেবে জমা হয়। লিভারকে আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন বহু জিনিস আমরা খাই। এদের মধ্যে অ্যালকোহল অন্যতম। আমাদের দেশে অবশ্য অ্যালকোহলের তীব্রতা বেশি নয়। যদিও ইদানীং উচ্চবিত্ত পরিবারে তা বাড়ছে। এছাড়া নিম্নবিত্তদের মধ্যে অ্যালকোহল গ্রহণের তীব্রতা আশঙ্কাজনক। এগুলো বিভিন্নভাবে লিভারের কোষকে ধ্বংস করে। কিছু ওষুধ যা আমরা খুব সহজেই ব্যবহার করি, যেমন- প্যারাসিটামলের মাত্রা বেশি হলেও লিভার কোষ আক্রান্ত হয়।

 

লিভারে প্রদাহ হলে দেখা দেয় জন্ডিস, পেটে ব্যথা এবং শেষে লিভার বড়ো হয়ে যায়। দীর্ঘদিন লিভারে প্রদাহ থাকলে তা থেকে সিরোসিস হয়। এতে লিভারের স্বাভাবিক গঠনকাঠামো নষ্ট হয়ে যায়। লিভার বিপাকীয় কার্যাবলি ঠিকমতো করতে পারে না। ফলে পেটে ও পায়ে পানি জমে, জন্ডিস দেখা যায় এবং আরো নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়। অনেক জটিলতার পর্যায়ে রোগী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তার ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্রেইন এবং কিডনি। ঠিক কতটুকু অ্যালকোহল থেকে লিভারের ক্ষতি হয় তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। তার কারণ এর সাথে রয়েছে দেহের ওজন, আকার আকৃতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষতি ইত্যাদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। অনেকেই একটানা ৫-১০ বছর অ্যালকোহল সেবনের পর অসুস্থ হয়।

লেখক: মেডিসিন বিভাগ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

লিভার সমস্যায় করণীয়

আপডেট সময় ০২:০১:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৯
স্বাস্থ্য ডেস্ক:

জন্ডিস আমাদের দেশে খুব পরিচিত। লিভারের বহুল পরিচিত অসুখটির নাম জন্ডিস। চোখ ও প্রস্রাবের রংসহ সারাদেহ হলুদ হয়ে যাওয়া হলো জন্ডিসের উপসর্গ। আমাদের পেটের ডান পাশের ওপেরর দিকে থাকে লিভার বা যকৃত। যকৃত মানবদেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীরের বিভিন্ন বিপাকীয় কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রোটিন, শকরা এবং চর্বি জাতীয় পদার্থের বিপাক নিয়ন্ত্রণ এবং সেগুলি হতে শক্তি উত্পাদন লিভারের কাজ। লিভার থেকে বিভিন্ন হরমোন এবং এনজাইম তৈরি হয়। এছাড়া লিভার থেকে প্লাজমা প্রোটিন এবং রক্ত জমাট বাঁধার বিভিন্ন উপাদান তৈরি হয়। আবার যকৃত থেকেই নিঃসৃত হয় বাইল বা পিওরস বা চর্বিজাতীয় খাবার বিপাক সহায়তা করে। লিভার আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। দেহের রক্ত প্রতি মুহূর্তে লিভারের ভেতর যায়। লিভার দেখে রক্তের সব উপাদান ঠিক আছে কি না এবং রক্তে ক্ষতিকর কোন পদার্থ আছে কিনা। রক্তে গ্লুকোজের স্বল্পতা থাকলে লিভার নিজের সঞ্চিত গ্লাকোজের থেকে সেটা পূরণ করে আর রক্তে গ্লুকোজ বেশি হলে তা লিভারের গ্লকোজের হিসেবে জমা হয়। লিভারকে আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে এমন বহু জিনিস আমরা খাই। এদের মধ্যে অ্যালকোহল অন্যতম। আমাদের দেশে অবশ্য অ্যালকোহলের তীব্রতা বেশি নয়। যদিও ইদানীং উচ্চবিত্ত পরিবারে তা বাড়ছে। এছাড়া নিম্নবিত্তদের মধ্যে অ্যালকোহল গ্রহণের তীব্রতা আশঙ্কাজনক। এগুলো বিভিন্নভাবে লিভারের কোষকে ধ্বংস করে। কিছু ওষুধ যা আমরা খুব সহজেই ব্যবহার করি, যেমন- প্যারাসিটামলের মাত্রা বেশি হলেও লিভার কোষ আক্রান্ত হয়।

 

লিভারে প্রদাহ হলে দেখা দেয় জন্ডিস, পেটে ব্যথা এবং শেষে লিভার বড়ো হয়ে যায়। দীর্ঘদিন লিভারে প্রদাহ থাকলে তা থেকে সিরোসিস হয়। এতে লিভারের স্বাভাবিক গঠনকাঠামো নষ্ট হয়ে যায়। লিভার বিপাকীয় কার্যাবলি ঠিকমতো করতে পারে না। ফলে পেটে ও পায়ে পানি জমে, জন্ডিস দেখা যায় এবং আরো নানা রকম জটিলতা দেখা দেয়। অনেক জটিলতার পর্যায়ে রোগী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তার ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্রেইন এবং কিডনি। ঠিক কতটুকু অ্যালকোহল থেকে লিভারের ক্ষতি হয় তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। তার কারণ এর সাথে রয়েছে দেহের ওজন, আকার আকৃতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষতি ইত্যাদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। অনেকেই একটানা ৫-১০ বছর অ্যালকোহল সেবনের পর অসুস্থ হয়।

লেখক: মেডিসিন বিভাগ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল