ঢাকা ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিলিতে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা, একদিনে কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা

জাতীয় ডেস্ক:

ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধের খবরে অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়ে বেচা-কেনা হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। যা গত শনিবার ও রবিবার দুপুর পর্যন্ত দাম ছিল ৪৭-৫০ টাকা। ফলে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা।

সোমবার দুপুর ২টায় এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে শুধু পাথর আমদানি হয়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজের কোনো চালান দেশে আসেনি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বন্যার কারণে পেঁয়াজের তীব্র সংকটে দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় জনদুর্গতি ঠেকাতে গত রবিবার বিকেলে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে আজ সোমবার সকালে হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার আগে গত রবিবার দুপুরে ভারত থেকে পেঁয়াজ বোঝাই ১৪টি ট্রাকে ২৬৮ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করা এই পেঁয়াজ সন্ধ্যায় বন্দরের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকায়। তবে ২টি ট্রাকের পেঁয়াজ বিক্রি করা হলেও অন্য ১২টি ট্রাকের পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়নি।

বন্দরের আমদানিকারক মো. মোবারক হোসেন জানান, ভারতের হঠাৎ এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়িরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এখনো বাংলাদেশে প্রবেশে অপেক্ষায় ৪০-৫০টি পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক সীমান্তের ওপারে আটকে আছে। অনেকের নতুন এলসি করা আছে, সেগুলি আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে ঢোকার কথা ছিল। এই অবস্থায় দেশে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। গতকাল বিকেলে বন্দরে প্রায় ৫০ টন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকায় বেচা-কেনা হয়েছে।

বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, দামের উর্দ্ধগতি ঠেকাতে অচিরেই অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা না হলে ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। কারণ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবরে ইতোমধ্যেই কেজিতে ৪০ টাকা করে বেড়ে গেছে। গত শনিবার ৪৭-৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও রবিবার দুপুর পর্যন্ত ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ এখনো বিক্রি শুরু করা হয়নি। তাতে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।

ভারতের ব্যবসায়ী জাবেদ খান ও পান্না আগরওয়াল জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে ৮৫২ মার্কিন ডলারে পেঁয়াজ রপ্তানি করা হচ্ছিল। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বন্যায় পেঁয়াজের ক্ষতি হওয়ায় তীব্র সংকটে দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই অবস্থায় অভ্যন্তরীণ মজুদ স্বাভাবিক রাখতে এবং জনদুর্গতি ঠেকাতে কেন্দ্রিয় সরকার রবিবার বিকেলে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

বাংলাহিলি বাজারের আড়তদার ফেরদৌস রহমান জানান, দেশি পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আজ সোমবার পর্যন্ত ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হলেও কাল মঙ্গলবার থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করতে হতে পারে। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসায় এই দাম বাড়ছে।

বাজারে আসা কয়েকজন ক্রেতা আক্ষেপ করে জানান, সব কিছুতেই মাশুল গুনতে হয় ক্রেতাদের। আজ পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। দাম যেন নাগালের মধ্যে থাকে তার জন্য মনিটরিং করা দরকার। কিন্তু কোনোদিনই ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অভিযান চালানো হয়নি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের দিনব্যাপী কর্মশালা

হিলিতে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা, একদিনে কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা

আপডেট সময় ০২:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯
জাতীয় ডেস্ক:

ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধের খবরে অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম কেজিতে বেড়ে বেচা-কেনা হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। যা গত শনিবার ও রবিবার দুপুর পর্যন্ত দাম ছিল ৪৭-৫০ টাকা। ফলে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা।

সোমবার দুপুর ২টায় এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে শুধু পাথর আমদানি হয়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজের কোনো চালান দেশে আসেনি।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বন্যার কারণে পেঁয়াজের তীব্র সংকটে দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় জনদুর্গতি ঠেকাতে গত রবিবার বিকেলে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।

এদিকে আজ সোমবার সকালে হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার আগে গত রবিবার দুপুরে ভারত থেকে পেঁয়াজ বোঝাই ১৪টি ট্রাকে ২৬৮ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আমদানি করা এই পেঁয়াজ সন্ধ্যায় বন্দরের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকায়। তবে ২টি ট্রাকের পেঁয়াজ বিক্রি করা হলেও অন্য ১২টি ট্রাকের পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়নি।

বন্দরের আমদানিকারক মো. মোবারক হোসেন জানান, ভারতের হঠাৎ এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়িরা চরম বিপাকে পড়েছেন। এখনো বাংলাদেশে প্রবেশে অপেক্ষায় ৪০-৫০টি পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক সীমান্তের ওপারে আটকে আছে। অনেকের নতুন এলসি করা আছে, সেগুলি আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে ঢোকার কথা ছিল। এই অবস্থায় দেশে পেঁয়াজের দামে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। গতকাল বিকেলে বন্দরে প্রায় ৫০ টন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫-৮০ টাকায় বেচা-কেনা হয়েছে।

বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, দামের উর্দ্ধগতি ঠেকাতে অচিরেই অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা না হলে ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। কারণ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবরে ইতোমধ্যেই কেজিতে ৪০ টাকা করে বেড়ে গেছে। গত শনিবার ৪৭-৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও রবিবার দুপুর পর্যন্ত ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজ এখনো বিক্রি শুরু করা হয়নি। তাতে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।

ভারতের ব্যবসায়ী জাবেদ খান ও পান্না আগরওয়াল জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে ৮৫২ মার্কিন ডলারে পেঁয়াজ রপ্তানি করা হচ্ছিল। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক বন্যায় পেঁয়াজের ক্ষতি হওয়ায় তীব্র সংকটে দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই অবস্থায় অভ্যন্তরীণ মজুদ স্বাভাবিক রাখতে এবং জনদুর্গতি ঠেকাতে কেন্দ্রিয় সরকার রবিবার বিকেলে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

বাংলাহিলি বাজারের আড়তদার ফেরদৌস রহমান জানান, দেশি পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আজ সোমবার পর্যন্ত ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হলেও কাল মঙ্গলবার থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করতে হতে পারে। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসায় এই দাম বাড়ছে।

বাজারে আসা কয়েকজন ক্রেতা আক্ষেপ করে জানান, সব কিছুতেই মাশুল গুনতে হয় ক্রেতাদের। আজ পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। দাম যেন নাগালের মধ্যে থাকে তার জন্য মনিটরিং করা দরকার। কিন্তু কোনোদিনই ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অভিযান চালানো হয়নি।