ঢাকা ১১:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইরানের চুক্তি বাঁচাতে একাট্টা চীন-জার্মানি

 অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ইরানের পরমাণু চুক্তি রক্ষা করতে এবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে চীন ও জার্মানি। আর চুক্তি টেকাতে চাইলে ইরানের কিছু দাবিদাওয়াও যে পূরণ করতে হবে, সে কথা জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এদিকে ইরান ইস্যুতে আলোচনা করতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ মে জানান, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) শীর্ষক পরমাণু চুক্তি থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করবেন। বিশ্বের অন্য কোনো দেশ ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখলে তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে গেলেও ইরান যেন সে পথে না হাঁটে, সে জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইউরোপ। এ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা বৈঠকও করেছেন। কিন্তু ইরানকে চুক্তিতে রাখতে হলে এবং ইরানে নিজেদের ব্যবসা বাঁচাতে হলে তাঁরা ঠিক কী পদক্ষেপ নেবেন, সেটা স্পষ্ট নয়।

ইউরোপীয় নেতাদের দোলাচলের মধ্যেই গতকাল জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কেল ইরানে ইউরোপের ব্যবসা প্রসঙ্গে কথা বলেন। ট্রাম্প জেসিপিওএ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে সেটা ইরানে ইউরোপের বাণিজ্যে কতটা প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন এ জার্মান নেতা।

এ ছাড়া চীনের প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াং ইরান ইস্যুর সঙ্গে উত্তর কোরিয়া সংকটের সম্পর্ক দেখিয়ে বলেন, জেসিপিওএর অবসান ‘শুধু ইরানকে প্রভাবিত করবে, তা নয়, বরং অন্যান্য উত্তেজনাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রক্রিয়ায়ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

চীন-জার্মানির এসব বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি জানান, ইরানকে জেসিপিওএতে রাখতে চাইলে ইরানের জ্বালানি তেলের বাজার চাঙ্গা রাখতে হবে এবং তাঁদের অপরিশোধিত তেল ইউরোপকে কিনতে হবে। শর্ত পূরণ করতে না পারলে ইরান চুক্তি ত্যাগ করে নিজেদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি আবার চালু করবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইরানের তেলের বাজার চাঙ্গা রাখতে ইউরোপকে শর্ত বেঁধে দেন তিনি।

এদিকে ইরান ইস্যুতে আলোচনার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রওনা হয়ে গেছেন। ইরান প্রসঙ্গের পাশাপাশি সিরিয়া ও ইউক্রেন নিয়েও তাঁদের আলোচনা করার কথা। ম্যাখোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মানে এই নয় যে, ফ্রান্স তার পুরনো মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

ইরানের চুক্তি বাঁচাতে একাট্টা চীন-জার্মানি

আপডেট সময় ০৯:১২:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মে ২০১৮
 অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

ইরানের পরমাণু চুক্তি রক্ষা করতে এবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে চীন ও জার্মানি। আর চুক্তি টেকাতে চাইলে ইরানের কিছু দাবিদাওয়াও যে পূরণ করতে হবে, সে কথা জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। এদিকে ইরান ইস্যুতে আলোচনা করতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ মে জানান, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির স্বাক্ষরিত জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) শীর্ষক পরমাণু চুক্তি থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করবেন। বিশ্বের অন্য কোনো দেশ ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখলে তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে গেলেও ইরান যেন সে পথে না হাঁটে, সে জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে ইউরোপ। এ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা বৈঠকও করেছেন। কিন্তু ইরানকে চুক্তিতে রাখতে হলে এবং ইরানে নিজেদের ব্যবসা বাঁচাতে হলে তাঁরা ঠিক কী পদক্ষেপ নেবেন, সেটা স্পষ্ট নয়।

ইউরোপীয় নেতাদের দোলাচলের মধ্যেই গতকাল জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। চীনের রাজধানী পেইচিংয়ে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কেল ইরানে ইউরোপের ব্যবসা প্রসঙ্গে কথা বলেন। ট্রাম্প জেসিপিওএ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে সেটা ইরানে ইউরোপের বাণিজ্যে কতটা প্রভাব ফেলবে, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেন এ জার্মান নেতা।

এ ছাড়া চীনের প্রধানমন্ত্রী কেকিয়াং ইরান ইস্যুর সঙ্গে উত্তর কোরিয়া সংকটের সম্পর্ক দেখিয়ে বলেন, জেসিপিওএর অবসান ‘শুধু ইরানকে প্রভাবিত করবে, তা নয়, বরং অন্যান্য উত্তেজনাপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রক্রিয়ায়ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’

চীন-জার্মানির এসব বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনি জানান, ইরানকে জেসিপিওএতে রাখতে চাইলে ইরানের জ্বালানি তেলের বাজার চাঙ্গা রাখতে হবে এবং তাঁদের অপরিশোধিত তেল ইউরোপকে কিনতে হবে। শর্ত পূরণ করতে না পারলে ইরান চুক্তি ত্যাগ করে নিজেদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি আবার চালু করবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ইরানের তেলের বাজার চাঙ্গা রাখতে ইউরোপকে শর্ত বেঁধে দেন তিনি।

এদিকে ইরান ইস্যুতে আলোচনার জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে রওনা হয়ে গেছেন। ইরান প্রসঙ্গের পাশাপাশি সিরিয়া ও ইউক্রেন নিয়েও তাঁদের আলোচনা করার কথা। ম্যাখোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মানে এই নয় যে, ফ্রান্স তার পুরনো মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। সূত্র : এএফপি, বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।