মো: দেলোয়ার হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রোজ রোববার, ২৬ জুলাই ২০১৫ ইং (মুরাদনগর বার্তা ডটকম)ঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের যুবক শামসুল ইসলাম মনিরকে হাত-পা, চোখ বেঁধে পিটিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যার অভিযোগে গৃহকত্রী নাছিমা আক্তার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে।
রোববার তাকে কুমিল্লার আমলী আদালত -৮ এর বিচারক জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সুব্রা চক্রবর্তীর আদালতে হাজির করার পর সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবির এস.আই শাহ কামাল আকন্দ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, প্রকাশ্যে গ্রামের শত শত লোকজনের সামনে মনির কে হত্যার চিত্র ছিল ভয়াবহ ও পৈশাচিক। ইতিমধ্যে গ্রেফতার হওয়া মসজিদের ঈমাম আবুল হাসানের (২৮) জবানবন্দী এবং মামলার তদন্তে ঘটনার সাথে গৃহকত্রী নাছিমার সম্পৃক্ততার প্রমান পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত নাছিমা আদালতে দেয়া তার জবাববন্দীতে জানান ‘ মনির গত ১৪ জুলাই ভোর রাতে বাড়ির উঠানে এসে উচ্চস্বরে গালাগালি করে এক পর্যায়ে ঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়, তখন তিনি (নাছিমা) মসজিদের ঈমামের সহায়তায় মনিরকে আটক করে রশি দিয়ে তার হাত পা বেধে ফেলেন, পরবর্তীতে বাড়ির পাশের মসজিদের মাইকে ঈমাম আবুল হাসান ডাকাত আটকের ঘোষণা দেয়ার পর গ্রামের লোকজন ছুটে এসে মনিরকে মারধর করে , সকালে পুলিশ গ্রামে এসে তাকে মুরাদনগর হাসপাতালে নেয়ার হলে তার মৃত্যু হয়।’ জবানবন্দীতে নাছিমা হত্যার মিশনে অংশ নেয়া গ্রামের লোকদের নাম প্রকাশ করেছে করেছে বলে জানা গেছে। তবে মামমলার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করেনি। ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতারে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
জানা যায়, শামসুল ইসলাম মনিরকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে মোহাম্মদ আলী টাকা নিয়েছিল। সেই টাকা গত ১৪ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে ফেরত দেওয়ার কথা বলে মোহাম্মদ আলী মনিরকে ভোর রাতে ফোন করে টাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে, পরে মনির টাকা আনতে গেলে তাকে আটক করে। পরে মসজিদের মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিলে উত্তেজিত গ্রামবাসী প্রকাশ্যে নির্যাতন চালিয়ে ও পায়ের রগ কেটে তাকে হত্যা করে। পরে হত্যার চিত্র ফেইজবুক ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ছেলে হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গৃহকর্তা ময়নাল হোসেন, আবদুল কুদ্দুস, মসজিদের ঈমাম আবুল হাছান, রুহুল আমিন মো: শরীফ ও নজরুল ইসলামকে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পর ইতিমধ্যে পুলিশ মসজিদের ইমাম আবুল হাছান (২৮) কে তার নিজ বাড়ী বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চরলহনিয়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। এদিকে মামলা দায়েরের পর দিনই তা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবি পুলিশকে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এস.আই শাহ কামাল আকন্দ জানান, ইতিমধ্যে গ্রেফতার হওয়া মসজিদের ঈমামের জবানবন্দী এবং মামলার তদন্তে ঘটনার সাথে গৃহকত্রী নাছিমার সম্পৃক্ততার প্রমান পাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতারে ডিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।