ঢাকা ০২:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলঙ্কিত ‘ভোট ডাকাতির ভয়াল রাত’ আজ : রিজভী

জাতীয় ;

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ এক কলঙ্কিত ‘ভোটাধিকার হরণ ও ভোট ডাকাতির ভয়াল রাত’। এই রাতেই ভোটারদের কাছ থেকে তাদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল, দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল।

তিনি বলেছেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে অভাবনীয় রেকর্ড সৃষ্টিকারী রাতের ভোটে ক্ষমতা দখলের এক বছর পূর্ণ হবে আজ ২৯ ডিসেম্বর। আজ রাত তাই দেশবাসীর কাছে তাদের ভোটাধিকার হরণের কালোরাত হিসাবে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে যেমন নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল হানাদার বাহিনী, ঠিক একইভাবে ২০১৮ সালের এই ২৯ ডিসেম্বর কালোরাতে মানুষের ভোটাধিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আওয়ামী হানাদার ও তাদের দোসররা। এই রাতেই হত্যা করা হয়েছিল গণতন্ত্রকে।’

রবিবার দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রিজভী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর কোনও ভোট হয়নি বাংলাদেশে। তাই এই আওয়ামী লীগকে অনন্তকাল রাতের ভোট ডাকাতির কলঙ্ক তিলক বহন করে যেতে হবে, যেমন এখন পর্যন্ত প্রতিটি সচেতন মানুষ তাদেরকে গণতন্ত্র হত্যাকারী ও বাকশালী বলে অভিহিত করে। এরা একদলীয় মূঢ় বিশ্বাসের দ্বারা আচ্ছন্ন। গণতন্ত্রকে বারবার মর্গে পাঠানোই আওয়ামী লীগের রীতি। আমরা বলতে চাই- অতি দ্রুত মিডনাইটের সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একই সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে যেন একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা হয়।’

তিনি বলেন, দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোও যখন নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা জনম্যান্ডেটহীন সরকারের তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা যখন চাকরি রক্ষা করার জন্য নীতি-নৈতিকতা এমনকি নিজেদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বিসর্জন দেন, তখন মানুষের আর হতাশার সীমা থাকে না। শুরু হয় সামগ্রিক অধঃপতন। শুরু হয় সামগ্রিক সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। এখন আমরা ঠিক এমনই একটি অধঃপতিত পরিবেশে বসবাস করছি।

তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে ফেলা হয়েছে ভোট ডাকাতির নির্বাচন ও মানুষের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও এখন দুর্নীতি আর অবৈধ সুযোগ-সুবিধা ভোগের লোভে ভোট ডাকাতিতে সহায়তা করে নিজেদের বিবেককে অন্যায়-অনৈতিক আদেশের কাছে বিক্রি করে গণতন্ত্রকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।

রিজভী বলেন, এখন বিচারের নামে চলছে অবিচার। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সাহেবের পরিণতিতে ভয় পেয়ে এখন সরকারকে খুশি করতেই হচ্ছে বিচার বিভাগকে। আর এ কারণেই জামিন পাচ্ছেন না দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, গণতন্ত্রের আপসহীন কণ্ঠস্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছের প্রতিফলন-ই ঘটছে এখন আইন-আদালতের সিদ্ধান্তে। ন্যায্যত: তার জামিন পাওয়ার সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় কারারুদ্ধ রেখে তাকে প্রাণে মারার সব রমরমা আয়োজন করা হচ্ছে। বেগম জিয়া কী অবস্থায় কেমন আছেন আমাদের জানতে দেয়া হচ্ছে না। যে ভোট ডাকাতি নিশ্চিত করার জন্যই দেশনেত্রীকে বিনা অপরাধে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, সেই মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির ষোলকলা পূর্ণ করে ক্ষমতা জবরদখলের এক বছর পূর্ণ হবে আজকে রাতে। আমি সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- দেশনেত্রীর জীবন সংহারের ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের পথ থেকে ফিরে আসুন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরর উপজেলায় জরায়ুমুখ ক্যান্সার রোধে টিকাদান ক্যাম্পেইন

কলঙ্কিত ‘ভোট ডাকাতির ভয়াল রাত’ আজ : রিজভী

আপডেট সময় ০১:৪২:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

জাতীয় ;

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ এক কলঙ্কিত ‘ভোটাধিকার হরণ ও ভোট ডাকাতির ভয়াল রাত’। এই রাতেই ভোটারদের কাছ থেকে তাদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল, দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল।

তিনি বলেছেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে অভাবনীয় রেকর্ড সৃষ্টিকারী রাতের ভোটে ক্ষমতা দখলের এক বছর পূর্ণ হবে আজ ২৯ ডিসেম্বর। আজ রাত তাই দেশবাসীর কাছে তাদের ভোটাধিকার হরণের কালোরাত হিসাবে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে যেমন নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল হানাদার বাহিনী, ঠিক একইভাবে ২০১৮ সালের এই ২৯ ডিসেম্বর কালোরাতে মানুষের ভোটাধিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আওয়ামী হানাদার ও তাদের দোসররা। এই রাতেই হত্যা করা হয়েছিল গণতন্ত্রকে।’

রবিবার দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রিজভী বলেন, ৩০ ডিসেম্বর কোনও ভোট হয়নি বাংলাদেশে। তাই এই আওয়ামী লীগকে অনন্তকাল রাতের ভোট ডাকাতির কলঙ্ক তিলক বহন করে যেতে হবে, যেমন এখন পর্যন্ত প্রতিটি সচেতন মানুষ তাদেরকে গণতন্ত্র হত্যাকারী ও বাকশালী বলে অভিহিত করে। এরা একদলীয় মূঢ় বিশ্বাসের দ্বারা আচ্ছন্ন। গণতন্ত্রকে বারবার মর্গে পাঠানোই আওয়ামী লীগের রীতি। আমরা বলতে চাই- অতি দ্রুত মিডনাইটের সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একই সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে যেন একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা হয়।’

তিনি বলেন, দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোও যখন নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা জনম্যান্ডেটহীন সরকারের তল্পিবাহক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরা যখন চাকরি রক্ষা করার জন্য নীতি-নৈতিকতা এমনকি নিজেদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বিসর্জন দেন, তখন মানুষের আর হতাশার সীমা থাকে না। শুরু হয় সামগ্রিক অধঃপতন। শুরু হয় সামগ্রিক সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়। এখন আমরা ঠিক এমনই একটি অধঃপতিত পরিবেশে বসবাস করছি।

তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিটি সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে ফেলা হয়েছে ভোট ডাকাতির নির্বাচন ও মানুষের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করে। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও এখন দুর্নীতি আর অবৈধ সুযোগ-সুবিধা ভোগের লোভে ভোট ডাকাতিতে সহায়তা করে নিজেদের বিবেককে অন্যায়-অনৈতিক আদেশের কাছে বিক্রি করে গণতন্ত্রকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে।

রিজভী বলেন, এখন বিচারের নামে চলছে অবিচার। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সাহেবের পরিণতিতে ভয় পেয়ে এখন সরকারকে খুশি করতেই হচ্ছে বিচার বিভাগকে। আর এ কারণেই জামিন পাচ্ছেন না দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, গণতন্ত্রের আপসহীন কণ্ঠস্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছের প্রতিফলন-ই ঘটছে এখন আইন-আদালতের সিদ্ধান্তে। ন্যায্যত: তার জামিন পাওয়ার সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিনা চিকিৎসায় কারারুদ্ধ রেখে তাকে প্রাণে মারার সব রমরমা আয়োজন করা হচ্ছে। বেগম জিয়া কী অবস্থায় কেমন আছেন আমাদের জানতে দেয়া হচ্ছে না। যে ভোট ডাকাতি নিশ্চিত করার জন্যই দেশনেত্রীকে বিনা অপরাধে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, সেই মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির ষোলকলা পূর্ণ করে ক্ষমতা জবরদখলের এক বছর পূর্ণ হবে আজকে রাতে। আমি সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- দেশনেত্রীর জীবন সংহারের ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের পথ থেকে ফিরে আসুন।