তপন সরকার, হোমনার (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা হোমনা উপজেলায় নয় শতক জমিতে জিরা চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন কৃষক আলমঙ্গীর হোসেন। প্রতিদিনই ঐ জমিতে ভীড় করছে উৎসুক জনতা।
তিনি উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের সহিদ মিয়ার ছেলে।
আলমঙ্গীর হোসেন জানান, তার ছোট ভাই মো: আবুল হোসেন ১৪ বছর ধরে সৌদি আবব প্রবাসী। সেখানে নড়াইলের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে ভাই আবুলের। নড়াইলের ওই ব্যক্তির এক ভাই ইরান প্রবাসী। ইরান প্রবাসী ওই ব্যক্তি রোপণ করার উদ্দেশ্যে ইরান থেকে কিছু জিরা দেশে নিয়ে আসেন। তাঁর কাছ থেকে আধা কেজি জিরা এনেছেন আলমগীর। সেই জিরা থেকে প্রায় আড়াই’শ গ্রাম জিরা তিনি অনেকটা শখের বশে ৯ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে জিরা চাষ শুরু করেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের জমিতে জিরা হবে তা কখনো কল্পনা করতে পারিনি। সাধারণ ফসলের মতোই জমিতে জিরা চাষ করেছি। জিরাও এসেছে প্রচুর। তবে কখন চাষ করতে হবে, সেই মৌসুম সম্পর্কে আমার জানা নেই। তিনি বলেন, আমার মতো আরো শত শত জিরা চাষী গড়ে তুলা এতে করে বিদেশ থেকে আমদানী করে জিরা আনতে হবে না। এত করে দেশে শত শত কোটি টাকা লাভ হবে।
আলমঙ্গীরের জিরা চাষের কথা শুনে কিছুদিন পূর্বে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা দেখতে সেখানে ছুটে গেছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। ৯ শতক জমিতে জিরা চাষে ১৫ কেজি সার এবং আগাছা পরিষ্কার বাবদ কিছু খরচ হয়েছে। এখন সেই জমিতে ফুলে ফুলে ভরে গেছে জিরা গাছগুলো। প্রতিটি গাছে ফুল থেকে ফল এসেছে এবং তা পরিপুষ্ট হতে শুরু করেছে। বাতাসে দুলছে জিরাক্ষেত। সেই সঙ্গে আনন্দে দুলছে কৃষক আলমঙ্গীরের মন। জিরার ফুল দেখে মৌমাছিরাও মধু সংগ্র করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মৌমাছি মধু সংগ্রহের পাশাপাশি পরাগায়নের সহযোগিতা করছে। বিভিন্ন ্ওলোকা থেকে কৌতুহলী ও উৎসুক মানুষ জিরার ক্ষেত দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন।
উপজেলার বিশিষ্ট জনরা বলেন এর আগে দেশের অন্য কোথাও জিরা চাষ হয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই। আমাদের এলাকায় জিরা চাষ একেবারেই নতুন একটি বিষয়। দেশে জিরার চাহিদা মেটাতে ভারত ও ইরানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে জিরা আমদানি করা হয়। আর জিরার এই চাষ সফল হলে হোমনা তথা দেশে জিরা চাষের সম্প্রসারনের মাধ্যমে একটি বিপ্লব ঘটবে আশা স্থানীয়দের। তখন আর বিদেশ থেকে জিরা আমদানি করতে হবেনা।
হোমনা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, ‘জিরা এ্যাম্বেলিফেরি গোত্রের মসলাজাতীয় উদ্ভিদ। এটি একটি জনপ্রিয় মসলা। খাবার সুস্বাদু করতে জিরার তুলনা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে বীজ সংরক্ষণসহ জিরা চাষ ও তার সম্প্রসাণ বিষয়ে জানাব।’