ঢাকা ১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজা সীমান্তে মাথায় গুলি করে এক ফিলিস্তিনিকে হত্যা

 অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

দখলদারিত্বের অবসান ও নিজ ভূমিতে ফেরার অধিকারের দাবিতে গাজা উপত্যকার সীমান্ত বেড়া ঘেঁষে বিক্ষোভরত এক ফিলিস্তিনিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। শুক্রবার (৮ মার্চ) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকা সীমান্তে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের উপর চড়াও হইয়। এতে আরও আহত হয়েছে ৪৮ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিক্ষোভকারীদের হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করে।

গাজা সীমান্তে শুক্রবারের বিক্ষোভে হতাহতের বিষয়ে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরা বলেন, ‘শুক্রবারের সাপ্তাহিক বিক্ষোভের ৫০তম দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তামের আরাফাত (২৩) নামের এক ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী। এছাড়াও এইদিন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আরও ৪৮ ফিলিস্তিনি আহত হয়। আহতদের মধ্যে চার চিকিৎসাকর্মী, দুই নারী ও ১৫ শিশু রয়েছেন’।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, ‘ওইদিন প্রায় আট হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী সীমান্ত বেড়া ঘেঁষে জড়ো হয় এবং সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে পাথর ও বিস্ফোরক ছুঁড়ে। তাদের মধ্যে অনেকেই সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টা করে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে আইন অনুযায়ী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে’।

ইসরায়েলের দখলদারিত্বের অবসান ও নিজ ভূমিতে ফেরার অধিকারের দাবিতে গাজা সীমান্তে গত বছরের ৩০ মার্চ থেকে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করে ফিলিস্তিনিরা। সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের এই বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে বিপুল প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর কারণে পরবর্তীতে প্রতি শুক্রবার ধারাবাহিক বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে ফিলিস্তিনিরা।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ মানবতা বিরোধী অপরাধের আলামত পেলেও ফিলিস্তিনিদের উপর নিপিড়ন অব্যাহত রেখেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ হওয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের তদন্ত কমিটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু বিক্ষোভ দমনের নামেই ২০১৮ সালে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। ৩০০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার এবং ড্রোনের ভিডিও ফুটেজসহ প্রায় আট হাজার প্রমাণ সংগ্রহ করে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে এই কমিটি জানায়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা যেতে পারে। তবে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ‘আল মিজান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল সেনাবাহিনীর হাতে ২৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বিক্ষোভের সময়ে ৪০ শিশু, দুই নারী, দুই সাংবাদিক, তিন চিকিৎসাকর্মী ও আট প্রতিবন্দ্বিসহ নিহত হয়েছেন ১৯০ জন। এছাড়াও ইসরায়েলি বাহিনীর বিভিন্ন হামলায় তিন হাজারেরও বেশি শিশুসহ আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার মানুষ।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

মুরাদনগরে “ওয়াকিাথন” এবং কল্যান রাষ্ট্রগঠনে মুক্ত আড্ডা

গাজা সীমান্তে মাথায় গুলি করে এক ফিলিস্তিনিকে হত্যা

আপডেট সময় ১২:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০১৯
 অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

দখলদারিত্বের অবসান ও নিজ ভূমিতে ফেরার অধিকারের দাবিতে গাজা উপত্যকার সীমান্ত বেড়া ঘেঁষে বিক্ষোভরত এক ফিলিস্তিনিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। শুক্রবার (৮ মার্চ) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকা সীমান্তে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের উপর চড়াও হইয়। এতে আরও আহত হয়েছে ৪৮ ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিক্ষোভকারীদের হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করে।

গাজা সীমান্তে শুক্রবারের বিক্ষোভে হতাহতের বিষয়ে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কিদরা বলেন, ‘শুক্রবারের সাপ্তাহিক বিক্ষোভের ৫০তম দিনে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তামের আরাফাত (২৩) নামের এক ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী। এছাড়াও এইদিন ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আরও ৪৮ ফিলিস্তিনি আহত হয়। আহতদের মধ্যে চার চিকিৎসাকর্মী, দুই নারী ও ১৫ শিশু রয়েছেন’।

এদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, ‘ওইদিন প্রায় আট হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী সীমান্ত বেড়া ঘেঁষে জড়ো হয় এবং সেনা সদস্যদের লক্ষ্য করে পাথর ও বিস্ফোরক ছুঁড়ে। তাদের মধ্যে অনেকেই সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলে প্রবেশের চেষ্টা করে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে আইন অনুযায়ী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে’।

ইসরায়েলের দখলদারিত্বের অবসান ও নিজ ভূমিতে ফেরার অধিকারের দাবিতে গাজা সীমান্তে গত বছরের ৩০ মার্চ থেকে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু করে ফিলিস্তিনিরা। সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের এই বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে বিপুল প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর কারণে পরবর্তীতে প্রতি শুক্রবার ধারাবাহিক বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে ফিলিস্তিনিরা।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ মানবতা বিরোধী অপরাধের আলামত পেলেও ফিলিস্তিনিদের উপর নিপিড়ন অব্যাহত রেখেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশ হওয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের তদন্ত কমিটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু বিক্ষোভ দমনের নামেই ২০১৮ সালে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। ৩০০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকার এবং ড্রোনের ভিডিও ফুটেজসহ প্রায় আট হাজার প্রমাণ সংগ্রহ করে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে এই কমিটি জানায়, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ আনা যেতে পারে। তবে জাতিসংঘের তদন্ত কমিটির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ‘আল মিজান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল সেনাবাহিনীর হাতে ২৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে বিক্ষোভের সময়ে ৪০ শিশু, দুই নারী, দুই সাংবাদিক, তিন চিকিৎসাকর্মী ও আট প্রতিবন্দ্বিসহ নিহত হয়েছেন ১৯০ জন। এছাড়াও ইসরায়েলি বাহিনীর বিভিন্ন হামলায় তিন হাজারেরও বেশি শিশুসহ আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার মানুষ।