ঢাকা ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরের বাঙ্গরায় গানবাজনা বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ

মুরাদনগর বার্তা ডটকমঃ
রোজ  বুধবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ ইং (মুরাদনগর বার্তা ডটকম):
কুমিল্লার মুরদানগর উপজেলায় একটি ভুয়া মাজারে গানবাজনা বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার রাজাবাড়ি গ্রামে।

 

স্থানীয় সুত্র জানায়, চলমান এসএসসি পরীক্ষার এ সময়টিতে যখন পরীক্ষাথীদের পড়াশোনার জন্যে একটি নিরিবিলি পরিবেশ জরুরী এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার রাজাবাড়ি গ্রামের ছালাম শাহর মাজার নামে একটি ভূয়া মাজারে গান বাজনার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সেখানে স্থাপন করা হয় দুই ডজন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাইক, সাউন্ডবক্স। তার উপর ঢাক-ঢোল তো আছেই। সব মিলিয়ে মাইক আর বাদ্যযন্ত্রের বিকট শব্দে আসপাশের পরিবেশ ভয়াবহ শব্দ দোষণে পরিণত হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ আর প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশে বিষয়টিতে বিশেষ নজর দেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহি কর্মকতা (সহকারী কমিশনার, ভুমি) আলী আজগর।

তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যনকে ফোন দেন এবং বাঙ্গরা বাজার থানার ওসিকেও ব্যবস্থাগ্রহণের জন্যে বলেন। পরে এসআই  গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে ৪ জন পুলিশ পাঠান ওসি। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছে মাইক বন্ধকরার নির্দেশ দিলে, গান-বাজনা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মিনিট যেতে না যেতেই আয়োজকদের লেলিয়ে দেয়া লোকজন হামলা করে পুলিশ সদস্যদের ওপর। দৌড়ে পুলিশ সদস্যরা প্রয়াত ছালাম শাহর ছোট ভাই প্রয়াত আব্দুর রৌফ এর ঘরে আশ্রয় নেন। পুলিশ সদস্যদের তাড়া করতে বাড়ির দরজার গ্রিল ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করতে চেষ্টা চালায় তারা। এ অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে ঘরে বসে থাকেন, অন্যদিকে আবারো গান বাজনা চালু করেন আয়োজকরা। রাত ভর চলে গান-বাজনা। এলাকাবাসী জানায়, বছর দুয়েক আগে মারাযান ছালাম শাহ নামের ওই কথিক আধ্যত্যিক সাধক। তাকে সমাহিত করা হয় রাজাবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গাজিপুর গ্রামে, কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের পাশে। সেখানে ভক্তরা তার মাজারও তৈরী করে। সেখানে প্রায়শই ওরশ পালন করে আসছেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, ওরশের নামে সেখানে মাদক-জুয়ার আসরসহ নানান অনৈতিক কর্মকান্ড চলে সেখানে। এদিকে সে মাজারে প্রয়াত ছালাম শাহর পরিবারের সদস্যদের কতৃত্ব না থাকায়, তারা এক কিলোমিটার দূরে রাজাবাড়ি গ্রামে আরেকটি কাল্পনিক মাজার তৈরী করে সেখানেও ওরশের নামে নানান অনৈতিক কমকান্ড শুরু হয়। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে গানের আয়োজ করে।

এ ব্যপারে ওই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ইমরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি কাল্পনিক ও ভূয়া মাজারটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজে হননি। তবে তিনি বলেন, ওরশের নামে এভাবে বিকট শব্দে গান-বাজনা এ এলাকায় নতুন না। বলতে পারেন, এলাকায় এটি মহামারি আকার ধারণ করেছে।  বিশেষ করে পাবলিক পরীক্ষার সময় এধরনের গান-বাজনা একেবারে বন্ধ করা না গেলও, অন্তত: শব্দ কমিয়ে করা যেতে পারে।

তবে পুলিশ পাঠানোর পর তাদের উপর জনরোষের বিষয়টি শোনেছেন স্বীকার করে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহি কর্মকতা (সহকারী কমিশনার, ভুমি) আলী আজগর বলেন, আমি এসআই সাহেবের মোবাইল ফোন দিয়েই আয়োজক কমিটির আব্দুল মতিনকে এ বিষয়ে কথা বলেছি।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ: স্বাগত জানাতে মুরাদনগরে ব্যাপক প্রস্ততি

মুরাদনগরের বাঙ্গরায় গানবাজনা বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ

আপডেট সময় ০২:০৮:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
মুরাদনগর বার্তা ডটকমঃ
রোজ  বুধবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ ইং (মুরাদনগর বার্তা ডটকম):
কুমিল্লার মুরদানগর উপজেলায় একটি ভুয়া মাজারে গানবাজনা বন্ধ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার রাজাবাড়ি গ্রামে।

 

স্থানীয় সুত্র জানায়, চলমান এসএসসি পরীক্ষার এ সময়টিতে যখন পরীক্ষাথীদের পড়াশোনার জন্যে একটি নিরিবিলি পরিবেশ জরুরী এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার রাজাবাড়ি গ্রামের ছালাম শাহর মাজার নামে একটি ভূয়া মাজারে গান বাজনার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সেখানে স্থাপন করা হয় দুই ডজন উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মাইক, সাউন্ডবক্স। তার উপর ঢাক-ঢোল তো আছেই। সব মিলিয়ে মাইক আর বাদ্যযন্ত্রের বিকট শব্দে আসপাশের পরিবেশ ভয়াবহ শব্দ দোষণে পরিণত হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ আর প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের নির্দেশে বিষয়টিতে বিশেষ নজর দেন উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহি কর্মকতা (সহকারী কমিশনার, ভুমি) আলী আজগর।

তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যনকে ফোন দেন এবং বাঙ্গরা বাজার থানার ওসিকেও ব্যবস্থাগ্রহণের জন্যে বলেন। পরে এসআই  গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে ৪ জন পুলিশ পাঠান ওসি। রাত সাড়ে এগারোটার দিকে পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছে মাইক বন্ধকরার নির্দেশ দিলে, গান-বাজনা বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক মিনিট যেতে না যেতেই আয়োজকদের লেলিয়ে দেয়া লোকজন হামলা করে পুলিশ সদস্যদের ওপর। দৌড়ে পুলিশ সদস্যরা প্রয়াত ছালাম শাহর ছোট ভাই প্রয়াত আব্দুর রৌফ এর ঘরে আশ্রয় নেন। পুলিশ সদস্যদের তাড়া করতে বাড়ির দরজার গ্রিল ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করতে চেষ্টা চালায় তারা। এ অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা নিরাপদে ঘরে বসে থাকেন, অন্যদিকে আবারো গান বাজনা চালু করেন আয়োজকরা। রাত ভর চলে গান-বাজনা। এলাকাবাসী জানায়, বছর দুয়েক আগে মারাযান ছালাম শাহ নামের ওই কথিক আধ্যত্যিক সাধক। তাকে সমাহিত করা হয় রাজাবাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গাজিপুর গ্রামে, কোম্পানীগঞ্জ-নবীনগর সড়কের পাশে। সেখানে ভক্তরা তার মাজারও তৈরী করে। সেখানে প্রায়শই ওরশ পালন করে আসছেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, ওরশের নামে সেখানে মাদক-জুয়ার আসরসহ নানান অনৈতিক কর্মকান্ড চলে সেখানে। এদিকে সে মাজারে প্রয়াত ছালাম শাহর পরিবারের সদস্যদের কতৃত্ব না থাকায়, তারা এক কিলোমিটার দূরে রাজাবাড়ি গ্রামে আরেকটি কাল্পনিক মাজার তৈরী করে সেখানেও ওরশের নামে নানান অনৈতিক কমকান্ড শুরু হয়। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে গানের আয়োজ করে।

এ ব্যপারে ওই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ইমরুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি কাল্পনিক ও ভূয়া মাজারটি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজে হননি। তবে তিনি বলেন, ওরশের নামে এভাবে বিকট শব্দে গান-বাজনা এ এলাকায় নতুন না। বলতে পারেন, এলাকায় এটি মহামারি আকার ধারণ করেছে।  বিশেষ করে পাবলিক পরীক্ষার সময় এধরনের গান-বাজনা একেবারে বন্ধ করা না গেলও, অন্তত: শব্দ কমিয়ে করা যেতে পারে।

তবে পুলিশ পাঠানোর পর তাদের উপর জনরোষের বিষয়টি শোনেছেন স্বীকার করে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহি কর্মকতা (সহকারী কমিশনার, ভুমি) আলী আজগর বলেন, আমি এসআই সাহেবের মোবাইল ফোন দিয়েই আয়োজক কমিটির আব্দুল মতিনকে এ বিষয়ে কথা বলেছি।