ঢাকা ০৭:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিষ্টিজাতীয় খাবার শিশুর যে ক্ষতি করে

লাইফস্টাইল ডেস্কঃ

সম্প্রতি ব্রিটেনর রয়্যাল কলেজ অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেলথের গবেষকরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বাচ্চাদের খাবারে মিষ্টির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবং মিষ্টি খাবারের প্রতি তাদের নির্ভরশীলতা তৈরির আগেই সবজি খাওয়ানো শুরু করা গেলে, তা তাদের সুষম পুষ্টির জোগান দেবে।

শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যেসব খাবারে বাড়তি চিনি যোগ করা হয়নি বলে লেবেল লাগানো থাকে, সেসব খাবারও অনেক সময় মধু কিংবা ফলের রসের মাধ্যমে মিষ্টি করা হয়। শিশুদের একটু তেতো খাবার দেওয়ার ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শিশুরা মিষ্টিজাতীয় খাবর কম খেলে দাঁত ক্ষয়, স্থূলতা বা মোটা হওয়া এবং অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে। রয়্যাল কলেজ অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেলথের ওই রিপোর্টে মূলত যুক্তরাজ্যের শিশুদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির বিবরণ দেওয়া হলেও বলা হয়েছে—পুরো বিশ্বে শিশুদেরই প্রায় একরকম অবস্থা।

সারা বিশ্বের মতো যুক্তরাজ্যেও শিশুদের মধ্যে স্থূলতা একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের মূল লক্ষ্যগুলোর একটি হচ্ছে—২০৩০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের শিশুদের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা ঠেকানো। এজন্য যেসব খাবারে চিনি ও চর্বি বেশি রয়েছে তা নিরুত্সাহিত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যের অংশ হিসেবেই ২০১৮ সালেই যুক্তরাজ্যে চিনি জাতীয় পানীয়র ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। এখন শিশু খাদ্যে চিনির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

শিশু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শিশুদের মিষ্টিজাতীয় পানীয় একেবারেই দেওয়া উচিত নয়। আর যেসব খাবার যেমন— বিভিন্ন ফলের রস বা মিশ্রণ এবং সিরাপ, যেগুলোতে বলা হয় কোনো বাড়তি চিনি যোগ করা হয়নি, তাও বাচ্চাদের পরিমিত হারে দেওয়া উচিত। চিকিৎসকেরা বলছেন, ক্যান জাতীয় যেসব খাবার, সেসবে বাচ্চাদের অভ্যস্ত না করে বরং তাজা ফলমূল, মিষ্টি ছাড়া দুধ জাতীয় খাবারে বাচ্চাদের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

গবেষক দলের প্রধান প্রফেসর মেরি ফিউট্রেল বলছেন, বাচ্চাদের দুধ ছাড়ানোর জন্য মা-বাবারা অনেক সময় মিষ্টিজাতীয় খাবারের অভ্যাস করান। আর এই সময়েই শিশুরা মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। গত কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানী আর চিকিৎসকদের ক্রমাগত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চিনি বা শর্করা। তাদের কাছে এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে জনস্বাস্থ্যের এক নম্বর শত্রু। সরকার মিষ্টিজাতীয় খাবারের ওপর কর বসাচ্ছে। স্কুল আর হাসপাতালগুলো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে মিষ্টিজাতীয় খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘আমাদের খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দিতে হবে।’

চিকিৎসকেরা বলছেন, দুই বছর বয়সী একটি শিশু দিনে যেসব খাবার খাবে তার পাঁচ শতাংশের বেশি মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যের একজন শিশু দিনে গড়ে সাড়ে ১১ শতাংশ মিষ্টিজাতীয় খাবার খায়।—বিবিসি

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

মিষ্টিজাতীয় খাবার শিশুর যে ক্ষতি করে

আপডেট সময় ০৬:০২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০১৯
লাইফস্টাইল ডেস্কঃ

সম্প্রতি ব্রিটেনর রয়্যাল কলেজ অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেলথের গবেষকরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, বাচ্চাদের খাবারে মিষ্টির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এবং মিষ্টি খাবারের প্রতি তাদের নির্ভরশীলতা তৈরির আগেই সবজি খাওয়ানো শুরু করা গেলে, তা তাদের সুষম পুষ্টির জোগান দেবে।

শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যেসব খাবারে বাড়তি চিনি যোগ করা হয়নি বলে লেবেল লাগানো থাকে, সেসব খাবারও অনেক সময় মধু কিংবা ফলের রসের মাধ্যমে মিষ্টি করা হয়। শিশুদের একটু তেতো খাবার দেওয়ার ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শিশুরা মিষ্টিজাতীয় খাবর কম খেলে দাঁত ক্ষয়, স্থূলতা বা মোটা হওয়া এবং অপুষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাবে। রয়্যাল কলেজ অব পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড চাইল্ড হেলথের ওই রিপোর্টে মূলত যুক্তরাজ্যের শিশুদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির বিবরণ দেওয়া হলেও বলা হয়েছে—পুরো বিশ্বে শিশুদেরই প্রায় একরকম অবস্থা।

সারা বিশ্বের মতো যুক্তরাজ্যেও শিশুদের মধ্যে স্থূলতা একটি বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের মূল লক্ষ্যগুলোর একটি হচ্ছে—২০৩০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের শিশুদের মধ্যে মোটা হওয়ার প্রবণতা ঠেকানো। এজন্য যেসব খাবারে চিনি ও চর্বি বেশি রয়েছে তা নিরুত্সাহিত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যের অংশ হিসেবেই ২০১৮ সালেই যুক্তরাজ্যে চিনি জাতীয় পানীয়র ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। এখন শিশু খাদ্যে চিনির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

শিশু বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, শিশুদের মিষ্টিজাতীয় পানীয় একেবারেই দেওয়া উচিত নয়। আর যেসব খাবার যেমন— বিভিন্ন ফলের রস বা মিশ্রণ এবং সিরাপ, যেগুলোতে বলা হয় কোনো বাড়তি চিনি যোগ করা হয়নি, তাও বাচ্চাদের পরিমিত হারে দেওয়া উচিত। চিকিৎসকেরা বলছেন, ক্যান জাতীয় যেসব খাবার, সেসবে বাচ্চাদের অভ্যস্ত না করে বরং তাজা ফলমূল, মিষ্টি ছাড়া দুধ জাতীয় খাবারে বাচ্চাদের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

গবেষক দলের প্রধান প্রফেসর মেরি ফিউট্রেল বলছেন, বাচ্চাদের দুধ ছাড়ানোর জন্য মা-বাবারা অনেক সময় মিষ্টিজাতীয় খাবারের অভ্যাস করান। আর এই সময়েই শিশুরা মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। গত কয়েক দশক ধরে বিজ্ঞানী আর চিকিৎসকদের ক্রমাগত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চিনি বা শর্করা। তাদের কাছে এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে জনস্বাস্থ্যের এক নম্বর শত্রু। সরকার মিষ্টিজাতীয় খাবারের ওপর কর বসাচ্ছে। স্কুল আর হাসপাতালগুলো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে মিষ্টিজাতীয় খাবার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘আমাদের খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দিতে হবে।’

চিকিৎসকেরা বলছেন, দুই বছর বয়সী একটি শিশু দিনে যেসব খাবার খাবে তার পাঁচ শতাংশের বেশি মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্যের একজন শিশু দিনে গড়ে সাড়ে ১১ শতাংশ মিষ্টিজাতীয় খাবার খায়।—বিবিসি