ঢাকা ০৭:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে দুই শিশু হত্যাকাণ্ডের পর ৮ বছর উধাও, অবশেষে ধরা মাজেদা

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামে প্রায় আট বছর পূর্বে দুই শিশুকে গলা কেটে ও শ্বাসরোধে হত্যা ঘটনার আলোচিত এই জোড়া খুনের মামলার এক নারী আসামি ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। সেই নারী আসামি মাজেদা বেগমকে (৪৫) দীর্ঘ প্রায় আট বছর পালিয়ে থাকার পর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দুর্গম একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে ওই গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১।
রবিবার বিকেলে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃত মাজেদা বেগম (৪৫) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের মো: সেলিম মিয়ার স্ত্রী।

জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের মো: বিল্লাল হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন (৬) ও শাহ আলমের ছেলে জসিম উদ্দিনকে (৭) গলা কেটে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন ওই দুই শিশুকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় লাজৈর গ্রামের বাবুল মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দেয়। বাবুলের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন ইয়াসমিনের বড় বোনকে বিয়ে করেন। নিহত আরাফাত বিল্লালের ছেলে ও নিহত জসিম বিল্লালের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। ওই দিন হত্যাকারী ইয়াসমিন জনসম্মুখে স্বীকার করেন, তিনি ভূট্টক্ষেতে নিয়ে আরাফাতকে গলা কেটে ও জসিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে খালের কচুরিপানার নিচে ফেলে রাখেন তিনি। ওই সময় ইয়াসমিন আরো স্বীকার করেন, এই জোড়া খুনে তার চাচিশাশুড়ি মাজেদা বেগম তাকে সহযোগিতা করেছেন। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইয়াসমিনকে এক নম্বর এবং মাজেদা বেগমকে দুই নম্বর আসামি করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে নিহত আরাফাতের বাবা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে ছিলেন।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানায়, ঘটনার পর মাজেদা বেগম এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়ে ঢাকা, গাজীপুর, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের নাম বদলে কখনো গৃহকর্মী, কখনো গার্মেন্টকর্মী আবার কখনো মহিলা ওঝার ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে ছিলেন। সব শেষ তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের ছদ্মবেশে কাজ করে গাঢাকা দিয়ে ছিলেন। কিন্তু করোনা মহামারিতে চাকরি চলে গেলে ফটিকছড়ি একটি পাহাড়ি গ্রাম বাগমারায় রাবার বাগানের পাশে অবস্থিত তার ভাইয়ের বাসায় আত্মগোপনে যান। প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রবাসীর বাড়ি ঘরে হামলা, নারীসহ আহত ৩

মুরাদনগরে দুই শিশু হত্যাকাণ্ডের পর ৮ বছর উধাও, অবশেষে ধরা মাজেদা

আপডেট সময় ০৬:০৩:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

মোঃ মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামে প্রায় আট বছর পূর্বে দুই শিশুকে গলা কেটে ও শ্বাসরোধে হত্যা ঘটনার আলোচিত এই জোড়া খুনের মামলার এক নারী আসামি ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। সেই নারী আসামি মাজেদা বেগমকে (৪৫) দীর্ঘ প্রায় আট বছর পালিয়ে থাকার পর চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দুর্গম একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে ওই গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১১।
রবিবার বিকেলে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃত মাজেদা বেগম (৪৫) কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের মো: সেলিম মিয়ার স্ত্রী।

জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের মো: বিল্লাল হোসেনের ছেলে আরাফাত হোসেন (৬) ও শাহ আলমের ছেলে জসিম উদ্দিনকে (৭) গলা কেটে এবং শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন ওই দুই শিশুকে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় লাজৈর গ্রামের বাবুল মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারকে এলাকাবাসী আটক করে পুলিশে দেয়। বাবুলের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন ইয়াসমিনের বড় বোনকে বিয়ে করেন। নিহত আরাফাত বিল্লালের ছেলে ও নিহত জসিম বিল্লালের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। ওই দিন হত্যাকারী ইয়াসমিন জনসম্মুখে স্বীকার করেন, তিনি ভূট্টক্ষেতে নিয়ে আরাফাতকে গলা কেটে ও জসিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। পরে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে খালের কচুরিপানার নিচে ফেলে রাখেন তিনি। ওই সময় ইয়াসমিন আরো স্বীকার করেন, এই জোড়া খুনে তার চাচিশাশুড়ি মাজেদা বেগম তাকে সহযোগিতা করেছেন। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইয়াসমিনকে এক নম্বর এবং মাজেদা বেগমকে দুই নম্বর আসামি করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে নিহত আরাফাতের বাবা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে ছিলেন।

র‌্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লার কম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানায়, ঘটনার পর মাজেদা বেগম এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়ে ঢাকা, গাজীপুর, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিজের নাম বদলে কখনো গৃহকর্মী, কখনো গার্মেন্টকর্মী আবার কখনো মহিলা ওঝার ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে ছিলেন। সব শেষ তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের ছদ্মবেশে কাজ করে গাঢাকা দিয়ে ছিলেন। কিন্তু করোনা মহামারিতে চাকরি চলে গেলে ফটিকছড়ি একটি পাহাড়ি গ্রাম বাগমারায় রাবার বাগানের পাশে অবস্থিত তার ভাইয়ের বাসায় আত্মগোপনে যান। প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।