ঢাকা ০৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্দেশকে অমান্য করে বিয়ে করা সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রীকে নির্যাতন

মো: আবদুল আউয়াল সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে ভ্রম্যমান আদালতের রায়কে অমান্য করে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোছলেম উদ্দিন সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী তামান্না আক্তারকে বিবাহ করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, উপজেলার রহিমপুর গ্রামের ভ্যান চালক দুলাল মিয়ার মেয়ে সুন্দরী তামান্না আক্তারকে (২০) । যখন সে সপ্তম শ্রেনীতে লেখা পড়া করতো ঠিক তখনই তার উপর কুদৃষ্টি পরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও উপজেলার কুলুবাড়ী গ্রামের মৃত্যু আজিজুর রহমানের ছেলে মোছলেম উদ্দিনের (৫৪)। আর ঠিক তখনই নানান প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৫ সালের ১০ই মার্চ তাকে বিবাহ করে।

বাল্য বিবাহের অপরাধে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের দু’পক্ষকে তার কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দ্দেশ দিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসান। ভ্রাম্যমান আদালতে বিবাহের ২/৩ মাসের মধ্যে তামান্নার নামে ৭/৮ শতক বাড়ী করার জায়গা কিনে দিবে, লেখা পড়া চালিয়ে যাবে ও তার উপর কোন নির্যাতন চালানো হবেনা মর্মে মোচলেখা প্রদান করে রক্ষা পান শিক্ষক মোছলেহ উদ্দিন। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যার বয়স বর্তমানে ৯ মাস। মোছলেহ উদ্দিন জমি ক্রয় করার জন্য তামান্নার বাবার বাড়ী থেকে ৫ লক্ষ টাকা এনে দেয়ার চাপ দেয়। সে টাকা দিতে তামান্নার ভ্যান চালক বাবার  অক্ষমতার কথা জানালে শুরু হয় তার উপর অমানবিক নির্যাতন।

এরই জের ধরে গত ২৩ ডিসেম্বর তামান্নার স্বামীসহ শশুরবাড়ীর লোকজন তাকে মারধর করে নির্যাতন চালিয়ে  তার ৯ মাসের দুধ্যপোষ্য শিশুকে রেখে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তামান্নাকে। তার অবস্থা খারাপ দেখে বাবা দুলাল মিয়া তার মেয়েকে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করান। তামান্নার ৯ মাসের সন্তানকে বেশ কয়েকবার তার বাবা আনতে গেলে শিশুটিকে তার মার কাছে দিতে অস্বীকৃতি জানান শশুর বাড়ীর লোকজন। বর্তমানে তামান্না এক মাএ ৯ মাসের দুধ্যপোষ্য শিশুকে হারিয়ে পাগলের মতো দিনাতিপাত করছে বলে জানান তার বাবা দুলাল মিয়া।

এ বিষয়ে অভিযোক্ত বর্তমানে কর্মরত কচুয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোছলেম উদ্দিনের জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ঠিক নয়। সে মেয়েকে রেখে সেচ্ছায় তার বাবার বাড়িতে আসে । কারন বিয়ের সময় দেয়া স্বর্ণ অলংকার বাবা বাড়িতে রেখে যায়, সে গুলো ফেরৎ নেয়ার কথা বলে বাবার বাড়িতে আসে । তারপর ৪ দিন পর মেয়ে নেয়ার জন্যে আমার বাড়িতে পুলিশ পাঠায়।

এ পর্যন্ত সে আমার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করে কুমিল্লা কোর্টে। আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি এখন আইনে আমার বিরোদ্ধে যে রায় হবে তাই মেনে নেব।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্দেশকে অমান্য করে বিয়ে করা সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রীকে নির্যাতন

আপডেট সময় ০২:৪৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৭
মো: আবদুল আউয়াল সরকার, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

কুমিল্লার মুরাদনগরে ভ্রম্যমান আদালতের রায়কে অমান্য করে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোছলেম উদ্দিন সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী তামান্না আক্তারকে বিবাহ করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, উপজেলার রহিমপুর গ্রামের ভ্যান চালক দুলাল মিয়ার মেয়ে সুন্দরী তামান্না আক্তারকে (২০) । যখন সে সপ্তম শ্রেনীতে লেখা পড়া করতো ঠিক তখনই তার উপর কুদৃষ্টি পরে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও উপজেলার কুলুবাড়ী গ্রামের মৃত্যু আজিজুর রহমানের ছেলে মোছলেম উদ্দিনের (৫৪)। আর ঠিক তখনই নানান প্রলোভন দেখিয়ে ২০১৫ সালের ১০ই মার্চ তাকে বিবাহ করে।

বাল্য বিবাহের অপরাধে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের দু’পক্ষকে তার কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দ্দেশ দিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত বসান। ভ্রাম্যমান আদালতে বিবাহের ২/৩ মাসের মধ্যে তামান্নার নামে ৭/৮ শতক বাড়ী করার জায়গা কিনে দিবে, লেখা পড়া চালিয়ে যাবে ও তার উপর কোন নির্যাতন চালানো হবেনা মর্মে মোচলেখা প্রদান করে রক্ষা পান শিক্ষক মোছলেহ উদ্দিন। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। যার বয়স বর্তমানে ৯ মাস। মোছলেহ উদ্দিন জমি ক্রয় করার জন্য তামান্নার বাবার বাড়ী থেকে ৫ লক্ষ টাকা এনে দেয়ার চাপ দেয়। সে টাকা দিতে তামান্নার ভ্যান চালক বাবার  অক্ষমতার কথা জানালে শুরু হয় তার উপর অমানবিক নির্যাতন।

এরই জের ধরে গত ২৩ ডিসেম্বর তামান্নার স্বামীসহ শশুরবাড়ীর লোকজন তাকে মারধর করে নির্যাতন চালিয়ে  তার ৯ মাসের দুধ্যপোষ্য শিশুকে রেখে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তামান্নাকে। তার অবস্থা খারাপ দেখে বাবা দুলাল মিয়া তার মেয়েকে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করান। তামান্নার ৯ মাসের সন্তানকে বেশ কয়েকবার তার বাবা আনতে গেলে শিশুটিকে তার মার কাছে দিতে অস্বীকৃতি জানান শশুর বাড়ীর লোকজন। বর্তমানে তামান্না এক মাএ ৯ মাসের দুধ্যপোষ্য শিশুকে হারিয়ে পাগলের মতো দিনাতিপাত করছে বলে জানান তার বাবা দুলাল মিয়া।

এ বিষয়ে অভিযোক্ত বর্তমানে কর্মরত কচুয়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোছলেম উদ্দিনের জানান, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ঠিক নয়। সে মেয়েকে রেখে সেচ্ছায় তার বাবার বাড়িতে আসে । কারন বিয়ের সময় দেয়া স্বর্ণ অলংকার বাবা বাড়িতে রেখে যায়, সে গুলো ফেরৎ নেয়ার কথা বলে বাবার বাড়িতে আসে । তারপর ৪ দিন পর মেয়ে নেয়ার জন্যে আমার বাড়িতে পুলিশ পাঠায়।

এ পর্যন্ত সে আমার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা করে কুমিল্লা কোর্টে। আমি আইনকে শ্রদ্ধা করি এখন আইনে আমার বিরোদ্ধে যে রায় হবে তাই মেনে নেব।