ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ১৫শ’ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন

মো: মোশাররফ হোসেন মনির/মাহবুব আলম আরিফঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১৫শ’ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেড। এতে বাসা-বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয়া প্রায় ২৫০ পরিবারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এতে বাখরাবাদের প্রায় ৩০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেছে। এ সময় স্থানীয় জনগন কাঙ্খিত এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে মুরাদনগর উপজেলার সকল স্থানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের নিকট দাবি করেন। তবে রহস্যজনক কারনে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত অবৈধ গ্যাস লাইন নির্মানে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার জাহাপুর উপিজেলার নয়াকান্দি, দক্ষিন দিলালপুর ও শুশুন্ডা গ্রামে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করান অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার সুমাইয়া মমিন।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদাররা জন প্রতি সংযোগ ১ লক্ষ টাকা করে নিয়েছেন। সংযোগ পাওয়ার পর থেকে বইয়ের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত বিল পরিশোধ করে আসছি। অনলাইনে আমাদের নামও আছে তাহলে কেন গ্যাস সংযোগ বন্ধ হবে? এখন আমাদের ব্যাক্তিগত টাকাদিয়ে কেনা পাইপ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাহলে অফিস কিভাবে অনলাইনে আমাদের নাম তুললো, আমাদের কে বিল বই দিলো? তারা অবিলম্বে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল শিক্ষকসহ একাধীক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন দেবিদ্বার জোনাল অফিস ও জেলা অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোসে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট উপজেলার ভূবনঘর, দড়িকান্দি, দুলারামপুর ১১ হাজার ফুট, বোরারচর জাহাপুর ৩০ হাজার ফুট, দড়িকান্দি ১ কিলোমিটার, করকটিয়া, সোনাপুর ২ কিলোমিটার, সুবিলারচর ২ কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জ ৩ কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর ৬ কিলোমিটার, নোয়াকান্দি ৯০০ ফুট, ধামঘর ৩৫০০ ফুট, পালাসুতা ৬০০০ ফুট, পায়ব ২ কিলোমিটার, শুশুন্ডা ৩ কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর ৫ কিলোমিটার, মধ্যনগর, করিমপুর ৩ কিলোমিটার, নবীপুর ৩ কিলোমিটার, নগরপাড় দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর ৩ কিলোমিটার, পৈয়াপাথর দেড় কিলোমিটার ও নহল, রামনগর, ধামঘর ৩৬০০ ফুট গ্যাস লাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দিয়ে সাধারন নিরিহ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকাসহ একটি অভিযোগ বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন, পেট্টোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়। যার পরিপেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন ও পেট্টোবাংলা পেট্টোবাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত দল সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং সংশ্লিষ্ঠ দফতরে রির্পোট প্রধান করা হলেও অভিযোক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ গ্যাস লাইন গুলোর বিষয়ে কোন প্রকার প্রদক্ষে না নেওয়ায় জনগনের মধ্যে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা দপ্তরের ভিজিলেন্স শাখা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকা করা হয়েছে। সেখানে মুরাদনগর উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রামের নাম রয়েছে। আজ তিনটি গ্রামের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নিয়মিত এ অভিযান চলবে। অপরদিকে যারা এসব অবৈধ সংযোগের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শঙ্কর মজুমদারের মোবাইল ফোনে একাদিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রদলের

মুরাদনগরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ১৫শ’ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন

আপডেট সময় ০৩:৫৪:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ মে ২০২২

মো: মোশাররফ হোসেন মনির/মাহবুব আলম আরিফঃ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার জাহাপুর ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১৫শ’ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেড। এতে বাসা-বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয়া প্রায় ২৫০ পরিবারের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এতে বাখরাবাদের প্রায় ৩০ জন শ্রমিক অংশগ্রহণ করেছে। এ সময় স্থানীয় জনগন কাঙ্খিত এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে মুরাদনগর উপজেলার সকল স্থানে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ভ্রাম্যমান আদালতের নিকট দাবি করেন। তবে রহস্যজনক কারনে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উক্ত অবৈধ গ্যাস লাইন নির্মানে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার জাহাপুর উপিজেলার নয়াকান্দি, দক্ষিন দিলালপুর ও শুশুন্ডা গ্রামে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করান অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার সুমাইয়া মমিন।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদাররা জন প্রতি সংযোগ ১ লক্ষ টাকা করে নিয়েছেন। সংযোগ পাওয়ার পর থেকে বইয়ের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত বিল পরিশোধ করে আসছি। অনলাইনে আমাদের নামও আছে তাহলে কেন গ্যাস সংযোগ বন্ধ হবে? এখন আমাদের ব্যাক্তিগত টাকাদিয়ে কেনা পাইপ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাহলে অফিস কিভাবে অনলাইনে আমাদের নাম তুললো, আমাদের কে বিল বই দিলো? তারা অবিলম্বে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল শিক্ষকসহ একাধীক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন দেবিদ্বার জোনাল অফিস ও জেলা অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোসে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট উপজেলার ভূবনঘর, দড়িকান্দি, দুলারামপুর ১১ হাজার ফুট, বোরারচর জাহাপুর ৩০ হাজার ফুট, দড়িকান্দি ১ কিলোমিটার, করকটিয়া, সোনাপুর ২ কিলোমিটার, সুবিলারচর ২ কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জ ৩ কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর ৬ কিলোমিটার, নোয়াকান্দি ৯০০ ফুট, ধামঘর ৩৫০০ ফুট, পালাসুতা ৬০০০ ফুট, পায়ব ২ কিলোমিটার, শুশুন্ডা ৩ কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর ৫ কিলোমিটার, মধ্যনগর, করিমপুর ৩ কিলোমিটার, নবীপুর ৩ কিলোমিটার, নগরপাড় দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর ৩ কিলোমিটার, পৈয়াপাথর দেড় কিলোমিটার ও নহল, রামনগর, ধামঘর ৩৬০০ ফুট গ্যাস লাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দিয়ে সাধারন নিরিহ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকাসহ একটি অভিযোগ বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন, পেট্টোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হয়। যার পরিপেক্ষিতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিসট্রিবিউশন ও পেট্টোবাংলা পেট্টোবাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত দল সরেজমিনে তদন্ত করে সত্যতা পায় এবং সংশ্লিষ্ঠ দফতরে রির্পোট প্রধান করা হলেও অভিযোক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ গ্যাস লাইন গুলোর বিষয়ে কোন প্রকার প্রদক্ষে না নেওয়ায় জনগনের মধ্যে সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা দপ্তরের ভিজিলেন্স শাখা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকা করা হয়েছে। সেখানে মুরাদনগর উপজেলার প্রায় ৪০টি গ্রামের নাম রয়েছে। আজ তিনটি গ্রামের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নিয়মিত এ অভিযান চলবে। অপরদিকে যারা এসব অবৈধ সংযোগের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

এ বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর লিমিটেডের কুমিল্লা অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শঙ্কর মজুমদারের মোবাইল ফোনে একাদিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।