মো: হাবিবুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর মুক্ত দিবস কবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও উপজেলা প্রশাসন কেউ কিছু জানে না। মহান স্বাধীনতার ৪৬ বছর অতিবাহিত হলেও কখনো পালিত হয়নি মুরাদনগর মুক্ত দিবস। মুক্ত দিবসের দিন-তারিখ নিয়েও রয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে নানা বিতর্ক। তবে সচেতন মানুষ বিজয়ের এ মাসে জানতে চায় মুরাদনগর মুক্ত দিবস কবে এবং তা’ কখন পালিত হবে।
বিষয়টির ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেলুল কাদের জানান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ অথবা বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধারা এ ব্যাপারে ভাল বলতে পারবে। তবে, জানতে পেরেছি-এ পর্যন্ত কোন দিন মুরাদনগর মুক্ত দিবস পালিত হয়নি। তারপরও জেলা প্রশাসনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে দেখব, সঠিক দিন তারিখ নির্ধারণ করে মুরাদনগর মুক্ত দিবস পালন করা যায় কিনা।
মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও গণ পরিষদের সাবেক সদস্য হাজী আবুল হাশেম জানান, ১২ ডিসেম্বর মুরাদনগরে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী মুক্ত হবার খবর পেয়ে ভারতের আগরতলা থেকে সাড়ে ৪শত মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে কোম্পানীগঞ্জ হাইস্কুলে প্রবেশ করে উড়িয়ে দেয়া হয় স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজের পতাকা। তখন মুরাদনগরে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন কামরুল হাসান ও গিয়াস উদ্দিন। এ দিকে মুরাদনগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এডভোকেট শামছুল হক ফিরোজ জানান, ৮ ডিসেম্বর ছিল মুরাদনগরসহ কুমিল্লা মুক্ত দিবস। আমরা দিবসটি কুমিল্ল¬ায় ঝাঁকঝমক ভাবে পালন করে আসছি। অপর দিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার হারুনুর রশীদ জানান, ১২ ডিসেম্বর মুরাদনগর মুক্ত দিবস। ঐদিন মুক্তিযোদ্ধা আর মিত্র বাহিনীর যৌথ আক্রমনের মুখে টিকতে না পেরে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী মুরাদনগর থেকে পালিয়ে যায়।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জানান, ৯ ডিসেম্বর ছিল মুরাদনগর মুক্ত দিবস। ঐদিন হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীরা কোম্পানীগঞ্জ ব্রীজ ভেঙ্গে ফেলার কারনে আমরা ধামঘর হয়ে মুরাদনগরে প্রবেশ করি। তখন উড়িয়ে দেয়া হয় স্বাধীন বাংলার লাল-সবুজের পতাকা।
মুরাদনগর মুক্ত দিবসের দিন-তারিখ নির্ধারন নিয়ে বিতর্কের বিষয়টি সর্বসাধারনকে ভাবিয়ে তুলেছে। সকল পেশাজীবী লোকজন সঠিক ইতিহাস থেকে তথ্য জেনে মুক্ত দিবসের দিন-তারিখ নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন। এছাড়াও তারা প্রতিবছর ঝাঁকঝমকপূর্ন ভাবে মুরাদনগর মুক্ত দিবস উদযাপন করারও দাবি জানিয়েছেন।