জাতীয় ডেস্কঃ
ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কে এম আতিকুর রহমান বলেছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনার পর জাতিসংঘসহ সারা বিশ্বের বিবেকবান মানুষ তার প্রতিবাদ করলেও মিয়ানমার সরকার তাতে কর্ণপাত করছে না। মিয়ানমারের চলমান সহিংস বর্বরতাকে তিনি আইয়ামে জাহেলিয়াতের সাথে তুলনা করেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি সৌদী আরবসহ মুসলিম বিশ্বকে এহেন বর্বরতার বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপসহ কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান তিনি মুসলমানদেরকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধে বিশ্বমুসলিম ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে ওদের হিংস্রতা আরো বেড়ে যাবে।
তিনি আরো লেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের স্টিমরোলার বন্ধ না করলে প্রয়োজনে বাংলাদেশের ঈমানদার জনতা পীর সাহেব চরমোনাইর নির্দেশে বার্মা দূতাবাস এমনকি জাতিসংঘ অফিসও ঘেরাও করবে। তাতেও কাজ না হলে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চসহ আরো কঠোর কর্মসুচী দিতে বাধ্য হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত বিশাল মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুফতী মানসুর আহমাদ সাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, নগর দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতী হোসাইন মোঃ কাওছার বাঙ্গালী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নগর দক্ষিণের সহ দফতর সম্পাদক মাওলানা ফখরুল ইসলাম, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নাজির হোসাইন শিবলী, ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম, নগর যুবনেতা মাওলানা আব্দুল আহাদ, জানে আলম সোহেল, মাওলানা আলী হোসেন, শফিকুল ইসলাম, মোক্তাদির হোসেন মারুফ, গোলামুর রহমান আজম, মিজানুর রহমান, মুফতী আব্দুর রশিদ প্রমুখ।
মাওলানা এবিএম জাকারিয়া বলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী-পুলিশ ও রাখাইন বৌদ্ধদের দ্বারা বর্বরোচিত রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা, ধর্ষণ, বাড়ী-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন চালিয়ে বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের সকল প্রকার নাগরিক ও মানবিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে। কিন্তু জাতিসংঘ শুধু বক্তব্য বিবৃতির মধ্যেই নিজেদের খবরদারী সীমাবদ্ধ রাখছে। জালিম মিয়ানমার সরকারের বরিুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিতে পারলে এমন দুর্বল জাতিসংঘ আমাদের প্রয়োজন নেই। তিনি অবিলম্বে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা ও ধর্ষণের বিচার এবং মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে মানবিক বিপর্যয় রোধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের জন্য বিশ্বনেতাদের কাছে দাবী জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মুফতী মানসুর আহমদ সাকী বলেন, চরম বিপদে পড়া রোহিঙ্গা মুসলমানরা যখন প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসে তাদেরকে আমাদের বিজিবিও অস্ত্রের মুখে ফেরৎ যেতে বাধ্য করে। ফলে এসব অসহায় মানুষ নারী-শিশুসহ মানবেতর অবস্থায় জঙ্গল বা পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক সহায়তা দিন, আল্লাহ বাংলাদেশকে এর প্রতিদান দিবে।