মো: নাজিম উদ্দিনঃ
৬ লক্ষ টাহা যৌতুক দিয়াও মাইয়া ডারে বাচাইতে পারলাম না। আমার মাইয়ারে হেরা আগুনে পুড়াইয়া মারছে। আমি হেগোর বিচার চাই,,, বিচার চাই,, বিচার চাই, এভাবেই চিৎকার করে এসব বলতে বলতে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন যৌতুকের দাবীতে করা নির্যাতন সইতে না পেরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করা অন্তসত্ত্বা গৃহবধূ সোনিয়ার পিতা দুলাল মিয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের বাড়িখলা গ্রামে সোমবার যৌতুক লোভী স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন আর সইতে না পেরে নিজ শরীরের আগুন দিয়ে ৮ মাসের আতœ:সত্ত্বা সোনিয়া আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধু আতœহত্যা করেছে। নিহত সোনিয়া মুরাদনগর উপজেলার শ্রীকাইল ইউনিয়নের শাহগদা গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় পুলিশ সোমবার রাতে শাশুড়ী নিলুফা বেগম (৪৫) কে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মঙ্গলবার সকালে জেলা মর্গে প্রেরণ করে। নিহতের মা আমেনা বেগম বাদী হয়ে মঙ্গলবার সকালে ৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। তবে এই ঘটনার পর ঘাতক স্বামী নাজমুল হক পলাতক রয়েছে।
জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার বাড়িখলা গ্রামের শামছুর রহমানের ছেলে নাজমুল হকের ৮ বছর পূর্বে মুরাদনগর উপজেলার শাহগুদা গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে সোনিয়া আক্তারের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য স্বামীর বাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করতো। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে পিতা ২ দফায় জামাইকে ৬ লক্ষ টাকা যৌতুক দেয়। তার পর স্বামী যৌতুকের জন্য আবার চাপ দিলে সোনিয়া আক্তার সোমবার সকালে টয়লেটের ভিতরে গিয়ে নিজ শরীরে আগুন দেয়। স্থানীয়রা আশংকাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় বার্ণ ইউনিটে প্রেরন করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে সোনিয়া মারা যায়। তার শরীর ৮০ শতাংশ পুরে গেছে বলে ডাক্তার নিশ্চিত করেন।
নবীনগর থানার ওসি ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, শ্বাশুড়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মা বাদী হয়েছে মামলা করেছেন।