ঢাকা ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুই যুগেও জাতীয়করন হয়নি মুরাদনগরের পাচঁ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলায় ১৯৯৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুই যুগ পার হয়ে গেলেও সরকারি হয়নি। তেমনি সরকারি ভাবে কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে বিদ্যালয় গুলোতে ঝুঁকিপূর্ন ভবন, শিক্ষক, টয়লেট ও পানির সংকট, নোংড়া পরিবেশসহ নানান সমস্যায় জর্রজরিত-জরার্জীন হয়ে দু’যুগ থেকে এসব বিদ্যালয়ে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিশুরা। অপর দিকে স্কুল গুলোতে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থাভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা জীবনের শুরুসহ শিক্ষা ও মনুষ্যত্বের বীজ রোপিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শৈশবে কাটানো দিন থেকেই। সরকারি-বেসরকারি সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য দেশে শিক্ষার সম্প্রসারণ করা। শিক্ষার সম্প্রসারণ করলেই শিক্ষিত জাতি গঠন সম্ভব হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে গড়ে উঠেছে। নিজ ব্যক্তি উদ্যোগ আর স্থানীয় সুহৃদ জনগনের চাহিদায় স্থানীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহ স্থাপিত হয়েছে।

pc1-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b2

সরকারি না হওয়া বিদ্যালয় গুলোর সূত্রে জানা যায়, নিম্নে ২৫ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয় গুলো সৃষ্টি লগ্ন থেকে অত্র এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো বিতরণ করে আসছে। বিদ্যালয় গুলোতে রয়েছে প্রায় দশ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও ২০ জন শিক্ষক-কর্মচারী। স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি ও ব্যাক্তি উদ্দ্যেগে ১৯৯৪ সাল থেকে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা ব্যায়ে স্কুল গুলো প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয় গুলো সরকারি করন না হওয়া, প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারের কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ন ভবন, পাকা ভবন নির্মিত না হওয়া, শিক্ষক, টয়লেট ও পানির সংকট, নোংড়া পরিবেশসহ নানান সমস্যায় জর্রজরিত স্কুল গুলোর শিক্ষার্থীদের লোখাপড়ার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ঝঁকিপূর্ন ভবন গুলোতে ঝঁকি নিয়েই ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। যে কোন সময় ঘঠতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। ফলে এ উপজেলায় শিক্ষার হার দিন দিন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।এতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যা মোট জনসংখ্যার শতভাগ শিক্ষার আওতায় আনার পথে অন্তরায়।
সরকারি না হওয়া বিদ্যায় গুলো হলো, রহিমপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন ত্রিশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মির্জাপুর তঘুরিয়া স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উলুমুড়িয়া স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহেশপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

রহিমপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়শা আক্তার বলেন, ১৯৯৫ সালে থেকে স্থাপিত এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাম্য দরিদ্র বালক-বালিকাদের মাঝে শিক্ষা প্রসারে কাজ করে চলেছে। বর্তমানে দুইশত বেশি শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহন করছে। বিভিন্ন পরিক্ষায় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অংশগ্রহন করে আসছে। বিদ্যালয়ের পাসের হার ভাল। বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা প্রদানের কাজে নিয়োজিত।

অতিকষ্টে তিনি আরো জানান এত বছর ধরে কোন বেতন ভাতা বা কোন সরকারী সুবিধা না পাওয়ায় আমরা অতি কষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।

দক্ষিন ত্রিশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সোলায়মান জানান, এ বিদ্যালয়ে প্রায় ৯০ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিথি ও সকল শ্রেনীর বিভিন্ন পরিক্ষায় শতভাগ পাশ করেও বিদ্যালয়টি আজও জাতীয়করন হয়নি।

এ বিদ্যালয়ে অনার্স পাশ করা শিক্ষকও রয়েছে। ডিপিও স্যার স্কুলটি পরিদর্শন করে তীতৃয় ধাপে জাতীয়করন হওয়ার কথা বলেছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএনএম মাহবুব আলম বলেন, মির্জাপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যারয়টি বর্তমানে সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভবনটিও পরিতেক্ত অবস্থায় রয়েছে। অন্য চারটি স্কুলে ডিপিও স্যার পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম ভালো, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী রয়েছে এবং লেখাপড়ার মান অপেক্ষাকৃত ভালো। জাতীয়করনের তৃতীয় ধাপের তারিকায় বিদ্যালয় গুলোর নাম রয়েছে। সরকার জাতয়িকরনের ঘোষনা দিলে তখন এ গুলো জাতয়িকরন করা হবে। সরকারিভাবে স্কুল গুলো অনুমোদন পেলে এলাকার শিক্ষার মান আরো উন্নত হবে।

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

দুই যুগেও জাতীয়করন হয়নি মুরাদনগরের পাচঁ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

আপডেট সময় ১০:১৬:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬
মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলায় ১৯৯৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়া ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুই যুগ পার হয়ে গেলেও সরকারি হয়নি। তেমনি সরকারি ভাবে কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে বিদ্যালয় গুলোতে ঝুঁকিপূর্ন ভবন, শিক্ষক, টয়লেট ও পানির সংকট, নোংড়া পরিবেশসহ নানান সমস্যায় জর্রজরিত-জরার্জীন হয়ে দু’যুগ থেকে এসব বিদ্যালয়ে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে কোমলমতি শিশুরা। অপর দিকে স্কুল গুলোতে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের পরিবার পরিজন নিয়ে অর্থাভাবে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা জীবনের শুরুসহ শিক্ষা ও মনুষ্যত্বের বীজ রোপিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শৈশবে কাটানো দিন থেকেই। সরকারি-বেসরকারি সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য দেশে শিক্ষার সম্প্রসারণ করা। শিক্ষার সম্প্রসারণ করলেই শিক্ষিত জাতি গঠন সম্ভব হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে গড়ে উঠেছে। নিজ ব্যক্তি উদ্যোগ আর স্থানীয় সুহৃদ জনগনের চাহিদায় স্থানীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহ স্থাপিত হয়েছে।

pc1-%e0%a6%b8%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a6%bf-%e0%a6%a8%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%b2

সরকারি না হওয়া বিদ্যালয় গুলোর সূত্রে জানা যায়, নিম্নে ২৫ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয় গুলো সৃষ্টি লগ্ন থেকে অত্র এলাকাসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো বিতরণ করে আসছে। বিদ্যালয় গুলোতে রয়েছে প্রায় দশ হাজার ছাত্র-ছাত্রী ও ২০ জন শিক্ষক-কর্মচারী। স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি ও ব্যাক্তি উদ্দ্যেগে ১৯৯৪ সাল থেকে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা ব্যায়ে স্কুল গুলো প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয় গুলো সরকারি করন না হওয়া, প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারের কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ন ভবন, পাকা ভবন নির্মিত না হওয়া, শিক্ষক, টয়লেট ও পানির সংকট, নোংড়া পরিবেশসহ নানান সমস্যায় জর্রজরিত স্কুল গুলোর শিক্ষার্থীদের লোখাপড়ার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ঝঁকিপূর্ন ভবন গুলোতে ঝঁকি নিয়েই ক্লাস করতে হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। যে কোন সময় ঘঠতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। ফলে এ উপজেলায় শিক্ষার হার দিন দিন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।এতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যা মোট জনসংখ্যার শতভাগ শিক্ষার আওতায় আনার পথে অন্তরায়।
সরকারি না হওয়া বিদ্যায় গুলো হলো, রহিমপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিন ত্রিশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মির্জাপুর তঘুরিয়া স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উলুমুড়িয়া স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহেশপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

রহিমপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়শা আক্তার বলেন, ১৯৯৫ সালে থেকে স্থাপিত এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাম্য দরিদ্র বালক-বালিকাদের মাঝে শিক্ষা প্রসারে কাজ করে চলেছে। বর্তমানে দুইশত বেশি শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহন করছে। বিভিন্ন পরিক্ষায় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত অংশগ্রহন করে আসছে। বিদ্যালয়ের পাসের হার ভাল। বিনা পারিশ্রমিকে প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষা প্রদানের কাজে নিয়োজিত।

অতিকষ্টে তিনি আরো জানান এত বছর ধরে কোন বেতন ভাতা বা কোন সরকারী সুবিধা না পাওয়ায় আমরা অতি কষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছি।

দক্ষিন ত্রিশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সোলায়মান জানান, এ বিদ্যালয়ে প্রায় ৯০ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিথি ও সকল শ্রেনীর বিভিন্ন পরিক্ষায় শতভাগ পাশ করেও বিদ্যালয়টি আজও জাতীয়করন হয়নি।

এ বিদ্যালয়ে অনার্স পাশ করা শিক্ষকও রয়েছে। ডিপিও স্যার স্কুলটি পরিদর্শন করে তীতৃয় ধাপে জাতীয়করন হওয়ার কথা বলেছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার এএনএম মাহবুব আলম বলেন, মির্জাপুর স্বল্পব্যায়ী কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যারয়টি বর্তমানে সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ভবনটিও পরিতেক্ত অবস্থায় রয়েছে। অন্য চারটি স্কুলে ডিপিও স্যার পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম ভালো, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী রয়েছে এবং লেখাপড়ার মান অপেক্ষাকৃত ভালো। জাতীয়করনের তৃতীয় ধাপের তারিকায় বিদ্যালয় গুলোর নাম রয়েছে। সরকার জাতয়িকরনের ঘোষনা দিলে তখন এ গুলো জাতয়িকরন করা হবে। সরকারিভাবে স্কুল গুলো অনুমোদন পেলে এলাকার শিক্ষার মান আরো উন্নত হবে।