ঢাকা ১২:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে বাকশালী জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করতে হবে: খালেদা জিয়া

জাতীয় ডেস্কঃ

বর্তমান সরকারকে বাকশালী জগদ্দল পাথর হিসেবে আখ্যাদিয়ে কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে তাদেরকে অপসারনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বুধবার ২৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এ আহ্বান জানান।

খালেদা জিয়া বলেন, “১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা ‘বাকশাল’ কায়েম করে। এই ব্যবস্থা কায়েম করতে গিয়ে তারা জাতীয় সংসদে বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে এক প্রকার গায়ের জোরেই অমানবিক মধ্যযুগীয় চতুর্থ সংশোধনী আইন পাশ করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী মানুষের বাক, ব্যক্তি, চলাচল ও সমাবেশের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার হরণ করে। সব সংবাদপত্র বাতিল করে তাদের অনুগত চারটি প্রকাশনা চালু রাখার ফরমান জারি করে। এর ফলে চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রাণশক্তিকেই তারা সেদিন নি:শেষ করে দেয়। দেশবাসীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফলে অর্জিত মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে তারা ভূলুন্ঠিত করে সমাজে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের ঘন অমানিশা ছড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, এমনি এক দুঃসময়ে ৭৫’ এর ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সম্মিলিত শ্রোত-ধারায় শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। স্বেচ্ছাচারি শাসনের লৌহ কপাটের ভেতর থেকে তিনি গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেন। পুনরায় শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথযাত্রা। নিশ্চিত হয় মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বহু চক্রান্তের চোরাগলি দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে এখন আবারও অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট বাকশালী চেতনায় নতুন করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে ভূগর্ভে সমাহিত করে ফেলেছে। এদের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার বিপন্ন করা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির বিপদ টের পেয়ে তারা সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। পঞ্চদশ সংশোধনী হচ্ছে মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা, যা বর্তমানে ভয়াল একদলীয় দু:শাসনের আত্মপ্রকাশকে প্রণোদিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিজেকে পরিণত করেছেন। হুকুমবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে আইনের শাসনের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলা হয়েছে। কেড়ে নেয়া হয়েছে মানুষের ভোটাধিকার। কথা, চিন্তা, বিবেক, মত প্রকাশ, সংগঠন ও সমাবেশের স্বাধীনতা তথা সামগ্রিকভাবে মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে হুকুমবাদের দৌরাত্বে।

তিনি বলেন, বহুত্ত্ববাদীতা বিনষ্ট করে সামাজিক স্থিতি ও ভারসাম্য নষ্ট করা হয়েছে। তাই এখন সর্বত্রই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দখলবাজদের দখলের জয়জয়কার চলছে।

অবনতিশীল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা, আশ্রয়, পেশা, ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছু এখন নৈরাজ্যের করাল গ্রাসে নিপতিত। একদলীয় বর্বর শাসন দীর্ঘায়িত করার অলীক স্বপ্নে শুধু গণতন্ত্রই নয়-দেশের ঐক্য, সংহতি ও সার্বভৌমত্বকে তারা সংকটাপন্ন করে তুলতেও দ্বিধা করেনি। বিরোধী দলের প্রতি আচরণে তারা কখনই সভ্য রীতি-নীতি অনুসরণ করেনি।

দূর্বিনীত দমন-পীড়ণের মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সুতরাং নব্য বাকশালী জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করার লক্ষ্যে জনগণ আজ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। আবারও কঠিন সংগ্রাামের মধ্য দিয়ে চেপেবসা গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে পরাভূত করে আমাদের রক্তস্নাত বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
শীর্ষ নিউজ

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে বাকশালী জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করতে হবে: খালেদা জিয়া

আপডেট সময় ০১:৩৩:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০১৮
জাতীয় ডেস্কঃ

বর্তমান সরকারকে বাকশালী জগদ্দল পাথর হিসেবে আখ্যাদিয়ে কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে তাদেরকে অপসারনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বুধবার ২৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া এ আহ্বান জানান।

খালেদা জিয়া বলেন, “১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা ‘বাকশাল’ কায়েম করে। এই ব্যবস্থা কায়েম করতে গিয়ে তারা জাতীয় সংসদে বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে এক প্রকার গায়ের জোরেই অমানবিক মধ্যযুগীয় চতুর্থ সংশোধনী আইন পাশ করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী মানুষের বাক, ব্যক্তি, চলাচল ও সমাবেশের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার হরণ করে। সব সংবাদপত্র বাতিল করে তাদের অনুগত চারটি প্রকাশনা চালু রাখার ফরমান জারি করে। এর ফলে চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রাণশক্তিকেই তারা সেদিন নি:শেষ করে দেয়। দেশবাসীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফলে অর্জিত মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে তারা ভূলুন্ঠিত করে সমাজে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের ঘন অমানিশা ছড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, এমনি এক দুঃসময়ে ৭৫’ এর ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সম্মিলিত শ্রোত-ধারায় শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। স্বেচ্ছাচারি শাসনের লৌহ কপাটের ভেতর থেকে তিনি গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেন। পুনরায় শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথযাত্রা। নিশ্চিত হয় মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বহু চক্রান্তের চোরাগলি দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে এখন আবারও অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট বাকশালী চেতনায় নতুন করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে ভূগর্ভে সমাহিত করে ফেলেছে। এদের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার বিপন্ন করা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির বিপদ টের পেয়ে তারা সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। পঞ্চদশ সংশোধনী হচ্ছে মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা, যা বর্তমানে ভয়াল একদলীয় দু:শাসনের আত্মপ্রকাশকে প্রণোদিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হিসেবে নিজেকে পরিণত করেছেন। হুকুমবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে আইনের শাসনের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলা হয়েছে। কেড়ে নেয়া হয়েছে মানুষের ভোটাধিকার। কথা, চিন্তা, বিবেক, মত প্রকাশ, সংগঠন ও সমাবেশের স্বাধীনতা তথা সামগ্রিকভাবে মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে হুকুমবাদের দৌরাত্বে।

তিনি বলেন, বহুত্ত্ববাদীতা বিনষ্ট করে সামাজিক স্থিতি ও ভারসাম্য নষ্ট করা হয়েছে। তাই এখন সর্বত্রই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দখলবাজদের দখলের জয়জয়কার চলছে।

অবনতিশীল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা, আশ্রয়, পেশা, ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছু এখন নৈরাজ্যের করাল গ্রাসে নিপতিত। একদলীয় বর্বর শাসন দীর্ঘায়িত করার অলীক স্বপ্নে শুধু গণতন্ত্রই নয়-দেশের ঐক্য, সংহতি ও সার্বভৌমত্বকে তারা সংকটাপন্ন করে তুলতেও দ্বিধা করেনি। বিরোধী দলের প্রতি আচরণে তারা কখনই সভ্য রীতি-নীতি অনুসরণ করেনি।

দূর্বিনীত দমন-পীড়ণের মাত্রা বৃদ্ধি করা হয়েছে। সুতরাং নব্য বাকশালী জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করার লক্ষ্যে জনগণ আজ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। আবারও কঠিন সংগ্রাামের মধ্য দিয়ে চেপেবসা গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে পরাভূত করে আমাদের রক্তস্নাত বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
শীর্ষ নিউজ