জাতীয় ডেস্কঃ
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে শোভাযাত্রা ঘিরে বিশাল শোডাউন করেছে বিএনপি। রাজধানীর নয়াপল্টন থেকে শুরু করে বিজয়নগর মোড় হয়ে শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত শোভাযাত্রাটি বিস্তৃত ছিল। শোভাযাত্রার অগ্রভাগ যখন পুলিশি বেষ্টনীর মধ্যে শান্তিনগর মোড়ে তখন শোভাযাত্রার শেষ অংশ ছিল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। এতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের লাখো নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। ‘শোভাযাত্রায় আমার নেত্রী আমার মা, বন্দী থাকতে দেবো না’ সহ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (২৭ মার্চ) দুপুর ২টায় দলের প্রধান কার্যালয় থেকে শুরু হয়। এতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে সকাল ১১টার থেকেই দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে তারা সেখানে আসেন। স্লোগান স্লোগানে তারা মাতিয়ে তুলে পুরো এলাকা। শোভাযাত্রায় আমার নেত্রী আমার মা, বন্দী থাকতে দেবো না’ সহ খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা। শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সিনিয়র নেতারা।
শুরুতে মির্জা ফখরুল কারাবন্দী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে নেতাকর্মীদের শপথ নিয়ে সংগ্রাম গড়ে তুলতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আসুন স্বাধীনতার এই দিনে আমাদেরকে শপথ নিতে হবে, আমরা মানুষের মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য সোচ্চার দাবি তুলি। লড়াই সংগ্রাম গড়ে তুলবো’।
তিনি বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা দেশের সকল মানুষ শান্তি চাই, গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে চাই। এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে, মিথ্যা মামলায় আটক সকল রাজবন্দির মুক্তি দিতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সারা দেশে মানুষের কোনো অধিকার নেই। যে চেতনা নিয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করে ছিলাম, সেই চেতনার মূল বিষয়টি ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। বর্তমানে সেই চেতনাকে ধ্বংস করে, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে সারাদেশে গুম, খুন, হত্যা, গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে অবৈধ অনৈতিক অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ও একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দুঃখের বিষয় আজকে অত্যন্ত ভারাক্লান্ত হদয়ে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আমাদেরকে স্বাধীনতার দিবস পালন করতে হচ্ছে।’
‘স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে গ্রেফতার হয়ে যিনি ৯ মাস ছিলেন, যিনি গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন লড়াই সংগ্রাম করেছেন সেই নেত্রী বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের নেত্রী খালেদা জিয়া আজকে কারাগারে বন্দি অনৈতিক ও অনির্বাচিত আওয়ামী সরকারের দ্বারায়।’
এতে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, আহমেদ আযম খান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূইয়া, আতাউর রহমান ঢালী, আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।