ঢাকা ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোলাপি বলে খেই হারালো বাংলাদেশ, প্রথম দিনেই লিড ভারতের

খেলাধূলা ডেস্ক:

দিবা-রাত্রির টেস্টের গোলাপি বলে ভারতের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিনই খেই হারিয়ে ফেললো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ফলে ৩০ দশমিক ৩ ওভার ব্যাট করে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হলো টাইগাররা। বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ও নিজ বোলারদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে প্রথম দিনই ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পায় ভারত। দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৭৪ রান করেছে টিম ইন্ডিয়া। ফলে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৬৮ রানে এগিয়ে ভারত।

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে প্রথম গোলাপি বলের টেস্টকে রঙ্গীন করে তুলতে ব্যাপক আয়োজন করেছিলো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্র্ড (বিসিসিআই)। সেই প্রমান মিললো ম্যাচ শুরুর আগ থেকেই। খেলা শুরুর এক ঘন্টা আগ থেকে পরিপূর্ণ হতে থাকে গ্যালারি। প্রায় ৪০ হাজার ক্রিকেটপ্রেমিদের সামনে নিজেদের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টে টস ভাগ্যে জয় পান বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুল হক। টস জিতে প্রথমেই ব্যাট করার সিদ্বান্ত তার।

মোমিনুলের সিদ্বান্তের পর দু’দলের খেলোয়াড়দের সাথে মাঠের পরিচিত হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাক্ষাত শেষে ম্যাচ শুরুর জন্য ঘন্টা বাজান শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিসিআই’র সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী। কেবল গাঙ্গুলি নন উপস্থিত ছিলেন ২০০০ সালে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট খেলা দুই দলের সাবেক খেলোয়াড়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আনন্দমুখর আয়োজন পর ব্যাট হাতে নিজেদের আলোকিত করার পালা শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। গোলাপি বলের রং-এ মত উজ্জল হতে সর্তকতার সাথে দলের ইনিংস শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েস। ৬ ওভার পর্যন্ত ভালোভাবেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন তারা। এসময় ১৫ রান যোগ করেন দুই ওপেনার। অবশ্য এই ৬ ওভারে খুব বেশি পরীক্ষায় পড়তে হয়নি সাদমান ও ইমরুলের। যেমনটা ইন্দোরের প্রথম এক ঘন্টায় পড়েছিলেন তারা।

তবে সপ্তম ওভার থেকে পাল্টে যায় ভারতীয় বোলারাদের চেহারা। ওভারের তৃতীয় বলে ইমরুলকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন ভারতের পেসার ইশান্ত শর্মা। রিভিউ নিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি ইমরুল। ৪ রান করে ফিরেন তিনি। এর আগে একই ওভারে প্রথম বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন ইমরুল।

ইমরুলকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে অন্য প্রান্ত দিয়ে চেপে ধরেন ভারতের অন্য দুই পেসার উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ সামি। ১১তম ওভারের প্রথম বলে মোমিনুলকে এবং তৃতীয় বলে মিঠুনকে শিকার করেন উমেশ। আর ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে বাংলাদেশের মিডল-অর্ডারের মেরুদন্ড মুশফিকুর রহিমকে বিদায় দেন সামি। তিনজনই শুন্য হাতে বিদায় নিয়েছেন। তবে মিঠুন-মুশফিকের ব্যাটকে চুমু দিয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে গোলাপি বল। মোমিনুল স্লিপে রোহিতের দুর্দান্ত ক্যাচে থামেন। ফলে ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় বাংলাদেশ।

এ অবস্থাতেও দলের রানের চাকা ঘুড়ানোর চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার সাদমান। এক প্রান্ত আগলে কাট-পুল-ফ্লিক শটে পাঁচটি দুর্দান্ত চার মারেন তিনি। এতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন সাদমান। তবে সাদমানকে বেশি দূর যেতে দেননি উমেশ। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২৯ রানে থামেন সাদমান। ৫২ বল মোকাবেলা করে নিজের ছোট্ট ও সুন্দর ইনিংসটি সাজান সাদমান।

৩৮ রানে সাদমানের বিদায়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরানোর দায়িত্ব পান মিডল-অর্ডারে বাংলাদেশের দুই প্রধান ভরসা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও উইকেটরক্ষক লিটন দাস। উইকেটে সেট হবার জন্য মারমুখী মেজাজ দেখান লিটন। বাউন্ডারি দিয়ে নিজের রানের খাতা খুলেন লিটন। মাহমুদুল্লাহ’র সাথে আরও দু’টি চারে ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন লিটন। অন্যপ্রান্তে ভারতীয় পেসারদের সুইং-এ সর্তক ছিলেন মাহমুদুুল্লাহ। সর্তক থাকলেও তাতে লাভ হয়নি মাহমুদুল্লাহর।

ইশান্ত শর্মার বলে পুরোপুরি ব্যাট না নিয়ে ফ্রন্টফ্রুটে খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপের সামনে ক্যাচ দেন মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু ডান-দিকে ঝাপিয়ে পড়ে দুর্দান্তভাবে সেই ক্যাচ নেন ভারতের উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা। এতে ১টি চারে ৬ রানে থেমে যান মাহমুদুল্লাহ। তার বিদায়ে দলের একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে ছিলেন লিটন। ব্যাট হাতে বেশ সাবলীল দেখাচ্ছিলো তাকে।

কিন্তু ২২তম ওভারে ভারতের ইশান্তের বাউন্সারে মাথায় ব্যাথা পেয়ে আহত অবসর হয়ে মাঠ ছাড়েন লিটন। পরবর্তীতে আর মাঠে ফিরতে পারেননি তিনি। মাঠ ছাড়ার আগে ৫টি চারে ২৭ বলে ২৪ রান করেন লিটন। লিটনের পরিবর্তে ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে মাঠে নামেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এমন সুবিধা পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি মিরাজ। ইশান্তের চতুর্থ শিকার হন তিনি। ২টি চারে করেন ৮ রান। মিরাজের আগে এবাদত হোসেনকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান ইশান্ত। ইশান্তের ডেলিভারিতে এবাদতের অফ-স্টাম্প ভেঙ্গে তিনবার ঘুড়পাকও খায়। ১ রান করেন এবাদত।

লিটনের আহত হওয়া ও এবাদত-মিরাজের বিদায়ে ৯৮ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এতে শতরানের আগেই গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়েছিলো বাংলাদেশ। অবশ্য দলীয় ৭৩ রানে লিটনের আহত অবসরের পরই দ্রুত গুটিয়ে যাবার চিন্তায় পড়ে বাংলাদেশ।

তবে অন্যপ্রান্ত ভালোভাবেই আগলে রেখেছিলেন নাইম হাসান। নিজের ইনিংস গড়ার পথে মাথায় বলের আঘাতও পান নাইম। ভারতের পেসার মোহাম্মদ সামির বাউন্সার আঘাত হানে নাইমের মাথায়। তবে লিটনের মত মাঠ ছাড়েননি তিনি। মাঠের ভেতর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ব্যাট হাতে লড়াই করেছেন নাইম। ব্যাট করার সময় ইনজুরিটি খুব বেশি গুরুত্বর মনে হয়নি তার কাছে। কিন্তু আউট হয়ে যাবার পর হাসপাতালে লিটনের মত নাইমও স্ক্যান করান।

দলের স্কোর শতরানে পৌছে দিয়ে দলীয় ১০৫ রানে বিদায় নেন নাইম। ৪টি চারে ১৯ রান করা নাইমকে শিকার করে ১২ বছর পর দেশের মাটিতে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার পূর্ণ করেন ইশান্ত। তবে সব মিলিয়ে ১০মবার টেস্ট ক্যারিয়ারে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন ইশান্ত।

নাইমের বিদায়ের পরের ওভারেই ১০৬ রানে নিজেদের ইনিংস গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটসম্যান আবু জায়েদকে খালি হাতে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন ভারতের সামি। শেষ পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৩ ওভার ব্যাট করতে পারে। ইশান্ত ২২ রানে ৫টি, উমেশ ২৯ রানে ৩টি ও সামি ৩৬ রানে ২টি উইকেট নেন।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

গোলাপি বলে খেই হারালো বাংলাদেশ, প্রথম দিনেই লিড ভারতের

আপডেট সময় ০৪:২১:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০১৯

খেলাধূলা ডেস্ক:

দিবা-রাত্রির টেস্টের গোলাপি বলে ভারতের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিনই খেই হারিয়ে ফেললো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ফলে ৩০ দশমিক ৩ ওভার ব্যাট করে মাত্র ১০৬ রানে অলআউট হলো টাইগাররা। বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা ও নিজ বোলারদের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে প্রথম দিনই ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পায় ভারত। দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৭৪ রান করেছে টিম ইন্ডিয়া। ফলে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ৬৮ রানে এগিয়ে ভারত।

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে প্রথম গোলাপি বলের টেস্টকে রঙ্গীন করে তুলতে ব্যাপক আয়োজন করেছিলো ভারতীয় ক্রিকেট বোর্র্ড (বিসিসিআই)। সেই প্রমান মিললো ম্যাচ শুরুর আগ থেকেই। খেলা শুরুর এক ঘন্টা আগ থেকে পরিপূর্ণ হতে থাকে গ্যালারি। প্রায় ৪০ হাজার ক্রিকেটপ্রেমিদের সামনে নিজেদের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টে টস ভাগ্যে জয় পান বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুল হক। টস জিতে প্রথমেই ব্যাট করার সিদ্বান্ত তার।

মোমিনুলের সিদ্বান্তের পর দু’দলের খেলোয়াড়দের সাথে মাঠের পরিচিত হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাক্ষাত শেষে ম্যাচ শুরুর জন্য ঘন্টা বাজান শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিসিসিআই’র সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী। কেবল গাঙ্গুলি নন উপস্থিত ছিলেন ২০০০ সালে বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট খেলা দুই দলের সাবেক খেলোয়াড়, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আনন্দমুখর আয়োজন পর ব্যাট হাতে নিজেদের আলোকিত করার পালা শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। গোলাপি বলের রং-এ মত উজ্জল হতে সর্তকতার সাথে দলের ইনিংস শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও ইমরুল কায়েস। ৬ ওভার পর্যন্ত ভালোভাবেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন তারা। এসময় ১৫ রান যোগ করেন দুই ওপেনার। অবশ্য এই ৬ ওভারে খুব বেশি পরীক্ষায় পড়তে হয়নি সাদমান ও ইমরুলের। যেমনটা ইন্দোরের প্রথম এক ঘন্টায় পড়েছিলেন তারা।

তবে সপ্তম ওভার থেকে পাল্টে যায় ভারতীয় বোলারাদের চেহারা। ওভারের তৃতীয় বলে ইমরুলকে লেগ বিফোর ফাঁদে ফেলেন ভারতের পেসার ইশান্ত শর্মা। রিভিউ নিয়েও নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি ইমরুল। ৪ রান করে ফিরেন তিনি। এর আগে একই ওভারে প্রথম বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন ইমরুল।

ইমরুলকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে অন্য প্রান্ত দিয়ে চেপে ধরেন ভারতের অন্য দুই পেসার উমেশ যাদব ও মোহাম্মদ সামি। ১১তম ওভারের প্রথম বলে মোমিনুলকে এবং তৃতীয় বলে মিঠুনকে শিকার করেন উমেশ। আর ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে বাংলাদেশের মিডল-অর্ডারের মেরুদন্ড মুশফিকুর রহিমকে বিদায় দেন সামি। তিনজনই শুন্য হাতে বিদায় নিয়েছেন। তবে মিঠুন-মুশফিকের ব্যাটকে চুমু দিয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে গোলাপি বল। মোমিনুল স্লিপে রোহিতের দুর্দান্ত ক্যাচে থামেন। ফলে ২৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় বাংলাদেশ।

এ অবস্থাতেও দলের রানের চাকা ঘুড়ানোর চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার সাদমান। এক প্রান্ত আগলে কাট-পুল-ফ্লিক শটে পাঁচটি দুর্দান্ত চার মারেন তিনি। এতে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন সাদমান। তবে সাদমানকে বেশি দূর যেতে দেননি উমেশ। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ২৯ রানে থামেন সাদমান। ৫২ বল মোকাবেলা করে নিজের ছোট্ট ও সুন্দর ইনিংসটি সাজান সাদমান।

৩৮ রানে সাদমানের বিদায়ে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরানোর দায়িত্ব পান মিডল-অর্ডারে বাংলাদেশের দুই প্রধান ভরসা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও উইকেটরক্ষক লিটন দাস। উইকেটে সেট হবার জন্য মারমুখী মেজাজ দেখান লিটন। বাউন্ডারি দিয়ে নিজের রানের খাতা খুলেন লিটন। মাহমুদুল্লাহ’র সাথে আরও দু’টি চারে ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিলেন লিটন। অন্যপ্রান্তে ভারতীয় পেসারদের সুইং-এ সর্তক ছিলেন মাহমুদুুল্লাহ। সর্তক থাকলেও তাতে লাভ হয়নি মাহমুদুল্লাহর।

ইশান্ত শর্মার বলে পুরোপুরি ব্যাট না নিয়ে ফ্রন্টফ্রুটে খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপের সামনে ক্যাচ দেন মাহমুদুল্লাহ। কিন্তু ডান-দিকে ঝাপিয়ে পড়ে দুর্দান্তভাবে সেই ক্যাচ নেন ভারতের উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহা। এতে ১টি চারে ৬ রানে থেমে যান মাহমুদুল্লাহ। তার বিদায়ে দলের একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে ছিলেন লিটন। ব্যাট হাতে বেশ সাবলীল দেখাচ্ছিলো তাকে।

কিন্তু ২২তম ওভারে ভারতের ইশান্তের বাউন্সারে মাথায় ব্যাথা পেয়ে আহত অবসর হয়ে মাঠ ছাড়েন লিটন। পরবর্তীতে আর মাঠে ফিরতে পারেননি তিনি। মাঠ ছাড়ার আগে ৫টি চারে ২৭ বলে ২৪ রান করেন লিটন। লিটনের পরিবর্তে ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে মাঠে নামেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এমন সুবিধা পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি মিরাজ। ইশান্তের চতুর্থ শিকার হন তিনি। ২টি চারে করেন ৮ রান। মিরাজের আগে এবাদত হোসেনকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান ইশান্ত। ইশান্তের ডেলিভারিতে এবাদতের অফ-স্টাম্প ভেঙ্গে তিনবার ঘুড়পাকও খায়। ১ রান করেন এবাদত।

লিটনের আহত হওয়া ও এবাদত-মিরাজের বিদায়ে ৯৮ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এতে শতরানের আগেই গুটিয়ে যাবার শংকায় পড়েছিলো বাংলাদেশ। অবশ্য দলীয় ৭৩ রানে লিটনের আহত অবসরের পরই দ্রুত গুটিয়ে যাবার চিন্তায় পড়ে বাংলাদেশ।

তবে অন্যপ্রান্ত ভালোভাবেই আগলে রেখেছিলেন নাইম হাসান। নিজের ইনিংস গড়ার পথে মাথায় বলের আঘাতও পান নাইম। ভারতের পেসার মোহাম্মদ সামির বাউন্সার আঘাত হানে নাইমের মাথায়। তবে লিটনের মত মাঠ ছাড়েননি তিনি। মাঠের ভেতর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ব্যাট হাতে লড়াই করেছেন নাইম। ব্যাট করার সময় ইনজুরিটি খুব বেশি গুরুত্বর মনে হয়নি তার কাছে। কিন্তু আউট হয়ে যাবার পর হাসপাতালে লিটনের মত নাইমও স্ক্যান করান।

দলের স্কোর শতরানে পৌছে দিয়ে দলীয় ১০৫ রানে বিদায় নেন নাইম। ৪টি চারে ১৯ রান করা নাইমকে শিকার করে ১২ বছর পর দেশের মাটিতে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকার পূর্ণ করেন ইশান্ত। তবে সব মিলিয়ে ১০মবার টেস্ট ক্যারিয়ারে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন ইশান্ত।

নাইমের বিদায়ের পরের ওভারেই ১০৬ রানে নিজেদের ইনিংস গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটসম্যান আবু জায়েদকে খালি হাতে বিদায় দিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন ভারতের সামি। শেষ পর্যন্ত ৩০ দশমিক ৩ ওভার ব্যাট করতে পারে। ইশান্ত ২২ রানে ৫টি, উমেশ ২৯ রানে ৩টি ও সামি ৩৬ রানে ২টি উইকেট নেন।