ঢাকা ০২:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ানোর কৌশল

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

স্মৃতিশক্তিই মানুষের বড় সম্বল। এই শক্তি ছাড়া মানুষ যেন জড় পদার্থের সমান। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তবে, বর্তমানে অল্প বয়সীদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। কেউ বলে, ‘এত পড়ি তবু মনে থাকে না’, আবার অনেকের মতে, ‘আমার বুদ্ধি কম তাই ভালো ফল হয়নি’।  এর কারণ কিন্তু স্মরণশক্তি কম হওয়া। এটি সত্যিই একটি বড় সমস্যা। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিনিয়তই বহু চেষ্টা করে যাই আমরা। বৃদ্ধকালে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়াটা যেমন স্বাভাবিক তেমনি অল্প বয়সে এর প্রভাব পড়া অস্বাভাবিক। এখন প্রশ্ন, এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী? হ্যাঁ, বহু উপায় রয়েছে।

রোজ ব্যায়াম করুন

সাধারণত ব্রেনের মধ্যে থাকা হিপোক্যাম্পাস মস্তিষ্কের স্মৃতি ধরে রাখতে কাজ করে। বিজ্ঞানীদের মতে, ব্যায়াম দেহের সাথে সাথে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি উদঘাটন করে এবং মগজে নতুন কোষের জন্ম হয়। ব্যায়াম করার ফলে এই হিপোক্যাম্পাস উত্তেজিত ও স্ফীত হয়ে উঠে এবং স্মৃতি ধরে রাখতে সহায়তা করে। আবার প্রতিনিয়ত কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ সরবরাহ হয়, যা কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যদি আপনি স্মরণশক্তি বাড়াতে চান, তবে রোজ নিয়মমাফিক সকাল বা সন্ধ্যায় ব্যায়াম করতে থাকুন।

মগজের শক্তি বাড়াতে সঠিক খাবার খান

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সঠিক খাবার খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ, আমরা সারা দিনে যা খাই তার মাত্র ২০ শতাংশ শর্করা ও শক্তি আমাদের মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। কাজেই মস্তিষ্কের সঠিক সঞ্চালন নির্ভর করে গ্লুকোজের মাত্রার উপর। এই মাত্রার ঘাটতি হলেই দেখা দেয় নানান সমস্যা। তাই মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে নিয়মমাফিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার অত্যন্ত প্রয়োজন। যেমন –

কলা: কলাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি, যা নার্ভ ইমপালস্ ট্রান্সমিশনে সাহায্য করে এবং ব্রেনকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

মাছের মাথা ও তেল: প্রবাদে বলে, মাছ ও মাছের মাথা হলো ব্রেনের খাদ্য, একেবারে ঠিক। কারণ, মাছের তেল ব্রেন সেল গঠন করে এবং মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় ও মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। এছাড়া, মাছের তেলে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়, যা ব্রেনের জন্য উপকারী।

কলিজা: মাংসের কলিজায় থাকে আয়রন ও ভিটামিন বি, যা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। এছাড়াও বিভিন্ন শাকসবজি, পালং শাক, বিভিন্ন ফল, সামুদ্রিক মাছ, বাদাম, তেলের বীজ, বিনস্ ইত্যাদি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে ঘুম অত্যন্ত কার্যকরী। রোজ রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোন এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠুন। কারণ, ঘুম মস্তিষ্কের সক্রিয়তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। চেষ্টা করুন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ঘুমোনোর। নিয়ম মেনে ৮ ঘণ্টা ঘুমোন।

মেডিটেশন করুন

স্মরণশক্তি বাড়ানোর আর এক উপায় হল মেডিটেশন। এর ফলে আমাদের মনের চিন্তা ও চাপ অনেকটাই কমে যায়। আর, এই মেডিটেশন করলে যেকোনো কাজেই মনোযোগ বাড়ে এবং ব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে কোনো কিছু মনে রাখার বা মনে করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় না। প্রতিদিন নিয়মমাফিক সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কমপক্ষে ১৫ মিনিট মেডিটেশন করুন। চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নিয়ে মনকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। এক সপ্তাহের মধ্যে আপনি এর সুফল পেতে পারেন।

স্ট্রেস কমান

স্মৃতিশক্তি নষ্টের বড় কারণ হলো মানসিক স্ট্রেস। এটি যেমন সাময়িক স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে তেমনই অত্যধিক স্ট্রেস দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিশক্তিও নষ্ট করে। তাই, চেষ্টা করুন এর থেকে দূরে থাকতে। মনকে এর থেকে দূরে রাখতে বই পড়ুন, গান শুনুন বা নিজের ভালো লাগা কিছু কাজ করুন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে বা বেশি স্ট্রেস অনুভব করলে শান্ত হয়ে বসে চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস গ্রহণ করুন। এতে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং মস্তিষ্ককে সচল রাখে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ানোর কৌশল

আপডেট সময় ০২:১০:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৯

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

স্মৃতিশক্তিই মানুষের বড় সম্বল। এই শক্তি ছাড়া মানুষ যেন জড় পদার্থের সমান। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি হ্রাসের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তবে, বর্তমানে অল্প বয়সীদের মধ্যেও এর প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। কেউ বলে, ‘এত পড়ি তবু মনে থাকে না’, আবার অনেকের মতে, ‘আমার বুদ্ধি কম তাই ভালো ফল হয়নি’।  এর কারণ কিন্তু স্মরণশক্তি কম হওয়া। এটি সত্যিই একটি বড় সমস্যা। আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিনিয়তই বহু চেষ্টা করে যাই আমরা। বৃদ্ধকালে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়াটা যেমন স্বাভাবিক তেমনি অল্প বয়সে এর প্রভাব পড়া অস্বাভাবিক। এখন প্রশ্ন, এর থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কী? হ্যাঁ, বহু উপায় রয়েছে।

রোজ ব্যায়াম করুন

সাধারণত ব্রেনের মধ্যে থাকা হিপোক্যাম্পাস মস্তিষ্কের স্মৃতি ধরে রাখতে কাজ করে। বিজ্ঞানীদের মতে, ব্যায়াম দেহের সাথে সাথে মস্তিষ্কের স্মৃতিশক্তি উদঘাটন করে এবং মগজে নতুন কোষের জন্ম হয়। ব্যায়াম করার ফলে এই হিপোক্যাম্পাস উত্তেজিত ও স্ফীত হয়ে উঠে এবং স্মৃতি ধরে রাখতে সহায়তা করে। আবার প্রতিনিয়ত কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন এবং গ্লুকোজ সরবরাহ হয়, যা কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যদি আপনি স্মরণশক্তি বাড়াতে চান, তবে রোজ নিয়মমাফিক সকাল বা সন্ধ্যায় ব্যায়াম করতে থাকুন।

মগজের শক্তি বাড়াতে সঠিক খাবার খান

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে সঠিক খাবার খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ, আমরা সারা দিনে যা খাই তার মাত্র ২০ শতাংশ শর্করা ও শক্তি আমাদের মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। কাজেই মস্তিষ্কের সঠিক সঞ্চালন নির্ভর করে গ্লুকোজের মাত্রার উপর। এই মাত্রার ঘাটতি হলেই দেখা দেয় নানান সমস্যা। তাই মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে নিয়মমাফিক এবং স্বাস্থ্যকর খাবার অত্যন্ত প্রয়োজন। যেমন –

কলা: কলাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি, যা নার্ভ ইমপালস্ ট্রান্সমিশনে সাহায্য করে এবং ব্রেনকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

মাছের মাথা ও তেল: প্রবাদে বলে, মাছ ও মাছের মাথা হলো ব্রেনের খাদ্য, একেবারে ঠিক। কারণ, মাছের তেল ব্রেন সেল গঠন করে এবং মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় ও মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। এছাড়া, মাছের তেলে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়, যা ব্রেনের জন্য উপকারী।

কলিজা: মাংসের কলিজায় থাকে আয়রন ও ভিটামিন বি, যা মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। এছাড়াও বিভিন্ন শাকসবজি, পালং শাক, বিভিন্ন ফল, সামুদ্রিক মাছ, বাদাম, তেলের বীজ, বিনস্ ইত্যাদি মস্তিষ্কের জন্য উপকারী।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে ঘুম অত্যন্ত কার্যকরী। রোজ রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোন এবং সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠুন। কারণ, ঘুম মস্তিষ্কের সক্রিয়তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। চেষ্টা করুন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ঘুমোনোর। নিয়ম মেনে ৮ ঘণ্টা ঘুমোন।

মেডিটেশন করুন

স্মরণশক্তি বাড়ানোর আর এক উপায় হল মেডিটেশন। এর ফলে আমাদের মনের চিন্তা ও চাপ অনেকটাই কমে যায়। আর, এই মেডিটেশন করলে যেকোনো কাজেই মনোযোগ বাড়ে এবং ব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে কোনো কিছু মনে রাখার বা মনে করার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয় না। প্রতিদিন নিয়মমাফিক সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে কমপক্ষে ১৫ মিনিট মেডিটেশন করুন। চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস নিয়ে মনকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। এক সপ্তাহের মধ্যে আপনি এর সুফল পেতে পারেন।

স্ট্রেস কমান

স্মৃতিশক্তি নষ্টের বড় কারণ হলো মানসিক স্ট্রেস। এটি যেমন সাময়িক স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে তেমনই অত্যধিক স্ট্রেস দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতিশক্তিও নষ্ট করে। তাই, চেষ্টা করুন এর থেকে দূরে থাকতে। মনকে এর থেকে দূরে রাখতে বই পড়ুন, গান শুনুন বা নিজের ভালো লাগা কিছু কাজ করুন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে বা বেশি স্ট্রেস অনুভব করলে শান্ত হয়ে বসে চোখ বন্ধ করে লম্বা শ্বাস গ্রহণ করুন। এতে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং মস্তিষ্ককে সচল রাখে।