ঢাকা ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় একদিনেই ৬৪ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৩৬৮২

জাতীয় ডেস্কঃ

প্রাণসংহারী করোনাভাইরাসে দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৬৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ৮৪৭ জনের। আর এ সময়ের মধ্যে নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৮২ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জন। আর নতুন ১ হাজার ৮৪৪ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৯ হাজার ৬২৪ জন। ফলে সরকারি হিসেবে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত আছেন ৮৫ হাজার ৮৫৯ জন।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮টি ল্যাবের মধ্যে ৬৬টি ল্যাবে ১৮ হাজার ৮৬৩টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। আগের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৮ হাজার ৪২৬টি। এটি একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক পরীক্ষা। যাতে ৩ হাজার ৬৮২ জন শনাক্ত হন। গতকাল (২৯ জুন) একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৪ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।

এর আগে গত ১৭ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৯২২জনের নমুনা সংগ্রহ করে ১৭ হাজার ৫২৭টির পরীক্ষায় ৪ হাজার ৪ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরই এখন বাংলাদেশ। উৎসস্থল চীনকে ছাড়িয়েছে এ তিনটি দেশই। এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪০৭ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জনে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান কানাডাকে পেছনে ফেলে ১৭তম। আর এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এর আগে রয়েছে ভারত, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরব।

নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৪ জন। দেশে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি। এর আগে গত ১৬ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ৪৮৭ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৫২ও নারী ১২ জন।

দেশে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। প্রতিদিনই সুস্থ হয়ে উঠছেন বিপুল মানুষ।

নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতাল মিলিয়ে নতুন সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৪ জন। এ নিয়ে মোট ৫৯ হাজার ৬২৪ জন সুস্থ হয়েছেন। ফলে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত আছেন ৮৫ হাজার ৮৫৯ জন।

আজ ব্রিফিংয়ের শুরুতে করোনাভাইরাসের এই সময়ে নাসিমা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে।

ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

এছাড়াও স্বস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে। তবে, এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার প্রতি বিশেষ আহ্বান জানানো হয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। এখন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভিত্তিক লকডাউন চলছে। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

১৩ বছর পর দেশে ফিরলেন বিএনপি নেতা কায়কোবাদ, বিমানবন্দরে লাখো মানুষের ঢল

করোনায় একদিনেই ৬৪ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৩৬৮২

আপডেট সময় ০১:১৩:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০

জাতীয় ডেস্কঃ

প্রাণসংহারী করোনাভাইরাসে দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৬৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ৮৪৭ জনের। আর এ সময়ের মধ্যে নতুন শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৮২ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জন। আর নতুন ১ হাজার ৮৪৪ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৫৯ হাজার ৬২৪ জন। ফলে সরকারি হিসেবে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত আছেন ৮৫ হাজার ৮৫৯ জন।

মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।

নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮টি ল্যাবের মধ্যে ৬৬টি ল্যাবে ১৮ হাজার ৮৬৩টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। আগের নমুনাসহ পরীক্ষা হয়েছে ১৮ হাজার ৪২৬টি। এটি একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক পরীক্ষা। যাতে ৩ হাজার ৬৮২ জন শনাক্ত হন। গতকাল (২৯ জুন) একদিনে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৪ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।

এর আগে গত ১৭ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৯২২জনের নমুনা সংগ্রহ করে ১৭ হাজার ৫২৭টির পরীক্ষায় ৪ হাজার ৪ জন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরই এখন বাংলাদেশ। উৎসস্থল চীনকে ছাড়িয়েছে এ তিনটি দেশই। এ পর্যন্ত ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৪০৭ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জনে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান কানাডাকে পেছনে ফেলে ১৭তম। আর এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। এর আগে রয়েছে ভারত, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও সৌদি আরব।

নাসিমা আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৪ জন। দেশে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি। এর আগে গত ১৬ জুন একদিনে সর্বোচ্চ ৫৩ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ১ হাজার ৪৮৭ জনের। নতুন মৃতদের মধ্যে পুরুষ ৫২ও নারী ১২ জন।

দেশে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সুস্থ হওয়া মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। প্রতিদিনই সুস্থ হয়ে উঠছেন বিপুল মানুষ।

নাসিমা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাসা ও হাসপাতাল মিলিয়ে নতুন সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৪ জন। এ নিয়ে মোট ৫৯ হাজার ৬২৪ জন সুস্থ হয়েছেন। ফলে বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত আছেন ৮৫ হাজার ৮৫৯ জন।

আজ ব্রিফিংয়ের শুরুতে করোনাভাইরাসের এই সময়ে নাসিমা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে।

ব্রিফিংয়ের করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক নাসিমা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, করোনা মোকাবিলায় তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করতে হবে। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাওয়া ও ফুসফুসের ব্যায়াম করা। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করতে হবে। কারণ, এটি ফুসফুসের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

এছাড়াও স্বস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের করোনা আক্রান্ত মায়ের দুধপানে শিশুর করোনা আক্রান্ত হওয়ার কোনো তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পায়নি। অর্থাৎ, শিশুকে দুধপান করানো যাবে। তবে, এই সময়ে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার প্রতি বিশেষ আহ্বান জানানো হয়।

চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।

ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলে ৩০ মে পর্যন্ত। ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি নেই। এখন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ভিত্তিক লকডাউন চলছে। তাই অফিস আদালতে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় সরঞ্জামাদি রাখা ও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।