জাতীয় ডেস্ক, মুরাদনগর বার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমঃ
জাসদ থেকে মন্ত্রী করার জন্যে আওয়ামী লীগকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘দুই দিনব্যাপী বর্ধিত সভার সমাপনী’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আশরাফ এ কথা বলেন।
জাসদই পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরিবেশ তৈরি করেছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হঠকারী দল’ জাসদ থেকে ছাত্রলীগকে সতর্ক থাকতে হবে।
আশরাফ বলেন, “বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জাসদ গঠন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করে।
“মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ। কিন্তু জাসদের নেতা-কর্মীরা এই সফল মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছিল। বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার আগেই দেশকে ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা করেছিল।”
“তারা যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সমস্ত পরিবেশ সৃষ্টি না করত, তবে বাংলাদেশ একটি ভিন্ন বাংলাদেশ হত,”
সৈয়দ আশরাফ বলেন, জাসদ ও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ধারক বাহকেরা শতভাগ ভণ্ড। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ছাত্রলীগের একটা অংশ হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র নিয়ে আসে। এর ধারক বাহকেরা দেশটাকে ছিন্ন-ভিন্ন করে দেয়। পরে জাসদ নামে নতুন দল গঠন করে। স্বাধীনতা পরবর্তী জাসদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা জাসদ গঠন করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করে।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, পূর্বের ইতিহাস জেনে এই হঠকারীদের (জাসদ) এড়িয়ে চলবেন। বিপ্লব বিপ্লব করলে বিপ্লব হয় না। কাজ করতে হবে। আপনাদের শিক্ষিত হতে হবে। আপনার মেধা জাতির জন্য কাজে লাগাতে হবে। তখন সোনার বাংলা এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হবে।
জাসদের বর্তমান দৈন্যদশা উল্লেখ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, তাঁরা অতি বিপ্লবী ছিল। তারা অনেক প্রতিক্রিয়াশীল ছিল। কিন্তু এক সময় হারিয়ে গেল। এখন আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করে।
এর আগে সারা দেশ থেকে আসা ছাত্রলীগের নেতারা তাদের নিজ নিজ এলাকায় সাংগঠনিক শক্তি-দুর্বলতা তুলে ধরেন। অধিকাংশ নেতাই নিজ নিজ এলাকার সংসদ সদস্যের বিষোদ্গার করেন। অনেকে সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ করেন।
অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান ও এস এম জাকির হোসাইন ছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী, ইসহাক আলী খান, সুজিত রায় নন্দি, লিয়াকত শিকদার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে সরকারের মন্ত্রী করা হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী জাসদের ভূমিকা সম্পর্কে গত বছর আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সরব হয়েছিলেন। তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা হয়। এক বছর পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ ইস্যুতে ফের সরব হলেন।
শীর্ষ নিউজ