আজিজুর রহমান রনি, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় গড়ে উঠেছে মোট ৪৯টি ইটভাটা। অধিকাংশ ইটভাটারই কাগজপত্র নেই। বছরের পর বছর কৃষিজমির টপসয়েল (জমির উপরের উর্বর অংশ) কেটে এনে পুরানো হচ্ছে ইট।
সম্প্রতি ড্রেজার দিয়ে কাটা হচ্ছে তিন ফসলি জমি ও ট্রাক্টর যোগে মাটি নেয়া হচ্ছে ইঁভাটায় এমন সংবাদ প্রকাশিত হলে, বিষয়টি মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে কৃষি ও পরিবেশ ফাউন্ডেশনের সভাপতি জনাব অ্যাডভোকেট মো. আবুল কালাম আজাদ উজ্জল এবং মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. মহিউদ্দিন জুয়েল মহামান্য সুপ্রীম কোর্টে রিটপিটিশন দায়ের করেন।
যারফলে গত মঙ্গলবার (০৬.১২.২০২২ খ্রি.) মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি মো. মজিবর রহমান মিয়ার বেঞ্চ রিট পিটিশন শুনানী শেষে কুমিল্লা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুরাদনগর ও সহকারী কমিশনার (ভূমি), বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি ও মুরাদনগর থানার ওসি কে অবৈধ ড্রেজার, অবৈধ ব্রিক ফিল্ডবন্ধ, কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে ইট ভাটায় ব্যবহার বন্ধে ও ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় জরীপ করে গর্ত সমূহ ভরাট করতে আগামী ষাট দিনের মধ্যে পরিকল্পনা সহ রিপোর্ট প্রদানের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন।
জানাযায়, উপজেলায় ২০১৭-২০১৮ সালে আবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ২৯৩ হেক্টর (৬০ হাজার ২৪.০০৩ একর)। বর্তমানে ২০২১-২০২২ সালে আবাদ যোগ্য জমির পরিমাণ কমে দাড়িয়েছে ১৯ হাজার ২৯৩ হেক্টরে (৪৭ হাজার ৬৭৩.০০৩ একর)। গত পাঁচ বছরে ৫ হাজার হেক্টর (১২ হাজার ৩৫৫ একর) আবাদি জমি কমেছে। তার মানে বছরে আবাদি জমি বিলিন হচ্ছে ২ হাজার ৪শ ৭১ একর। অপরিকল্পিত বসত বাড়ি নির্মাণ, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে কৃষি জমি খনন, ইঁভাটা সহ নানা স্থাপনায় হারিয়ে গেছে এসব জমি।
মুরাদনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমূল হুদা বলেন, ‘অল্প কিছু দিন হলো এই উপজেলায় যোগদান করেছি। গত এক বছরের রেজিস্টার খাতা ঘেটে দেখলাম প্রায় দু’শ ড্রেজার জব্দ করে জেল জরিমানা করা হয়েছে। গত এক সপ্তাহের মধ্যে তিনটি মামলা ও দুই জনকে জেল দিয়েছি। তাতেও দমে যাচ্ছেনা ড্রেজার ব্যবসায়ীরা। অপর দিকে ব্রিক ফিল্ড গুলোর কাগজপত্র খতিয়ে দেখবো।’