জাতীয়:

৩২ বছর আগে করা যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ভেঙে গেছে। পূর্ব ঘোষিত সময় অনুযায়ী শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়াও জানিয়েছে, তারা আর থাকছে না সেই চুক্তিতে। ফলে বিশ্বজুড়ে অস্ত্র প্রতিযোগিতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

এই চুক্তির প্রেক্ষিতে ৫০০ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাল্লার মধ্যে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রগুলিকে নিষিদ্ধ করেছিল আমেরিকা ও রাশিয়া। চুক্তির কারণে ১৯৯১ সালে প্রায় দুই হাজার ৭০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করে আমেরিকা ও রাশিয়া।

কিন্তু এ বছরের শুরুর দিকে আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের দেশগুলি অভিযোগ করে যে, রাশিয়া গোপনে সেই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করতে শুরু করেছে। আমেরিকা ও ন্যাটো জোটের দেশগুলিকে পাল্লার মধ্যে রেখে ক্ষেপণাস্ত্র বসাতে শুরু করেছে মস্কো।

এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়া যদি চুক্তিটা মেনে চলতে না চায়, তা হলে যুক্তরাষ্ট্রও বেরিয়ে আসবে চুক্তি থেকে। আর তার জন্য তিনি ২ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। কিন্তু ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে রাশিয়া কোনো পাত্তাই দেয়নি।

পাল্টা জবাবে রুশ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ পাভেল ফেলগেনহাওয়ার বলেছেন, ‘চুক্তিটা আর থাকল না। এখন আমরা নতুন নতুন অস্ত্রের নির্মাণ দেখব। আমরা দেখব সেই সব অস্ত্র বসানো হচ্ছে একে অন্যকে তাক করে। আর রাশিয়া এখনই তার জন্য তৈরি আছে।’

সেই চুক্তিতে সই করছেন রোনাল্ড রেগন (ডান দিকে) ও মিখাইল গর্বাচভ। ছবি: রয়টার্স

ঐতিহাসিক ওই চুক্তি অকার্যকর হয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ন্যাটো জোটের মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, রাশিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে সেগুলি পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে। খুবই দ্রুত এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারে। সেগুলি কয়েক মিনিটের মধ্যে গুঁড়িয়ে দিতে পারে ইউরোপের শহরগুলিকে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি প্রত্যাহারের ঘোষণার পর জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে ছেদ পড়েছিল, চুক্তি ভঙ্গের মাধ্যমে তা আবার শুরু হতে চলেছে। এর ফলে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মহরা হবে। এসব সব অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বেড়ে যাবে।’ বিষয়টি নিয়ে দু’দেশকে নতুন করে আবারো আলোচনায় বসতে অনুরোধ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।