মুসলিম বিশ্বের সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় ইসলামি দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
‘ইসলামি বিশ্বের সংকট মোকাবিলার একমাত্র শর্ত ঐক্য, সংহতি এবং জোটবদ্ধতা। বিশ্বাস করুন, ঐক্যবদ্ধ হলেও আমরা প্রতিটি সমস্যার সমাধান করতে পারি,’ বলেন এরদোগান।
বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে ইসলামিক ইকোনমিক কোঅপারেশনের (কমসেক) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিনি আরো বলেন, ‘মুসলিম বিশ্ব সম্প্রতি অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি সাধন করেছে। পাশাপাশি তারা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মানবিক ও রাজনৈতিক সংকটেরও মুখোমুখি হয়েছে।’
‘আমরা যদি (মুসলমান হিসেবে) একত্রে কাজ করতে পারি তবে আমরা শতাব্দীকাল ধরে চলা ফিলিস্তিনিদের একাকীত্ব দূর করতে পারি…আমরা ঐক্যবদ্ধ হলে ইরাক ও সিরিয়ার শিশুদের রক্তের হোলিখেলা বন্ধ করা সম্ভব।’
ইরাক ও সিরিয়ার জনগণের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে এরদোগান বলেন, ‘দয়া করে এই দৃশ্যের দিকে দৃষ্টি দিন এবং ভাবুন এসব হত্যা ও সংঘাত থেকে কারা লাভবান হচ্ছে আর কারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
জাতিসংঘের সমালোচনা করে স্পষ্টভাষী এরদোগান বলেন, ‘শিশুদের রক্তবন্যায় জাতিসংঘ নীরব দর্শক হয়ে থাকলেও ওআইসি তো নীরব থাকতে পারে না।’
‘ইরাক, সিরিয়া অথবা অন্যত্র যা ঘটছে তার কোনো সমাধান কী জাতিসংঘ দিতে পেরেছে? জাতিসংঘ কী ন্যায়বিচার করতে পারছে? যে সংস্থায় আদৌ ন্যায়বিচার নেই সেখান থেকে তো ন্যায়বিচার আশা করা যায় না।’
মুসলমানরা আমেরিকা আবিস্কার করেছে বলে সম্প্রতি এরদোগান যে মন্তব্য করেন সেই প্রসঙ্গে আবারো কথা বলেন তিনি। এ কারণে কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যম তাকে টার্গেট করেছে বলেও মন্তব্য করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
‘আমরা সভ্যতার ইতিহাস, বিজ্ঞান, রাজনীতি ও সামরিক ঐতিহাসিক সত্য স্মরণ করিয়ে দেয়ায় তারা বিরক্ত হচ্ছে।’
‘কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের ৩১৪ বছর আগেই মুসলিস নাবিকরা ১১৭৮ সালে ওই মহাদেশে অবতরণ করেন,’ আবারো বলেন এরদোগান।
মুসলিম বিশ্বের সাম্প্রতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রশংসা করে বিশ্বের ১৭তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন, গত ১০ বছরে মুসলিম বিশ্বের বাণিজ্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৯৮১ সালে মক্কায় প্রতিষ্ঠিত কমসেকের নিজস্ব একটি রিয়েল স্টেট স্টক মার্কেট থাকা দরকার বলে মত দেন এরদোগান।
এছাড়া কমসেক স্বর্ণ বিনিময়ের পদক্ষেপ নিতে পারে বলেও মত মন্তব্য করেন তিনি।