ঢাকা ১১:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুরাদনগরে কলেজের অর্থ নিয়ে নয় ছয়, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ

মো: মোশাররফ হোসেন মনির:

তিনি কলেজের অধ্যক্ষ। শিক্ষাকতার পাশাপাশি কলেজ পরিচালনা করা যার দায়িত্ব। কিন্তু তিনিই কিনা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায়। বলছি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোড়ের পাড় আদর্শ বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার কথা।

অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও শিক্ষাবিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার ও সহযোগি হিসেবে অধ্যাপক আব্দুর রশিদকে অপসারনে জন সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন সাধারন শিক্ষার্থীরা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা এ দুই শিক্ষকের পদত্যাগ সহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়ে প্রতিদিন চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচি।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার ও তার সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, নিয়োগ, স্বেচ্ছাচারিতা জড়িত থেকে কলেজে শিক্ষার পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করেছেন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক মহল, কর্মকর্তা কর্মচারীর, কিছু শিক্ষকবৃন্দ এলাকাবাসী অভিযোগ করেও এর কোন সুরাহা হয়নি।

সকল ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ মাউশি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত ফি হতে অতিরিক্ত টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে জোরপূর্বক সংগ্রহ করতেন। চলতি বছরে দ্বাদশ শ্রেণীর ভর্তি ফি ১৫০০ টাকা নির্ধারিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৫শত টাকা। ২০১৬ সালে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ দুর্নীতির অভিযোগ হলে গঠিত তদন্ত কমিটি সার্বিক তদন্তে অর্থ আত্মসাৎ দুর্নীতি প্রমাণিত হলেও তৎকালীন সরকারদলীয় এমপি’র হস্তক্ষেপে অধ্যক্ষ এ অভিযোগের দামাচাপা দেন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশব্যাপী সংস্কার কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে অত্র প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ পুনরায় অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুললে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, কোন শিক্ষার্থী শিক্ষক বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিলে সেনাবাহিনী ডেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলেজটিতে আইসিটি ল্যাব থাকলেও একদিনের জন্য আইসিটি ল্যাবের ব্যবহার না করে পরীক্ষায় আইসিটি ২৫ নম্বর প্রধানের নিশ্চয়তায় আইসিটি শিক্ষকের মাধ্যমে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী হতে অতিরিক্ত ৫ শত টাকা করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নেয়া হয়।

তাছাড়া অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার অত্র কলেজে যোগদান করার পূর্বে আবিদপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরিরত থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে। সে অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হয়।

এ বিষয়ে কোড়ের পাড় আদর্শ বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ বানানো। বর্তমানে কলেজের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে যে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে তা আমি মেনে নেব।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগরে জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত

মুরাদনগরে কলেজের অর্থ নিয়ে নয় ছয়, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:৩৩:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মো: মোশাররফ হোসেন মনির:

তিনি কলেজের অধ্যক্ষ। শিক্ষাকতার পাশাপাশি কলেজ পরিচালনা করা যার দায়িত্ব। কিন্তু তিনিই কিনা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায়। বলছি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোড়ের পাড় আদর্শ বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার কথা।

অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও শিক্ষাবিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগে অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার ও সহযোগি হিসেবে অধ্যাপক আব্দুর রশিদকে অপসারনে জন সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন সাধারন শিক্ষার্থীরা। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা এ দুই শিক্ষকের পদত্যাগ সহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়ে প্রতিদিন চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচি।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার ও তার সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রশিদ পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে কলেজের অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, নিয়োগ, স্বেচ্ছাচারিতা জড়িত থেকে কলেজে শিক্ষার পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট করেছেন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক মহল, কর্মকর্তা কর্মচারীর, কিছু শিক্ষকবৃন্দ এলাকাবাসী অভিযোগ করেও এর কোন সুরাহা হয়নি।

সকল ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ মাউশি ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত ফি হতে অতিরিক্ত টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে জোরপূর্বক সংগ্রহ করতেন। চলতি বছরে দ্বাদশ শ্রেণীর ভর্তি ফি ১৫০০ টাকা নির্ধারিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৫শত টাকা। ২০১৬ সালে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ দুর্নীতির অভিযোগ হলে গঠিত তদন্ত কমিটি সার্বিক তদন্তে অর্থ আত্মসাৎ দুর্নীতি প্রমাণিত হলেও তৎকালীন সরকারদলীয় এমপি’র হস্তক্ষেপে অধ্যক্ষ এ অভিযোগের দামাচাপা দেন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশব্যাপী সংস্কার কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে অত্র প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীবৃন্দ পুনরায় অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুললে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, কোন শিক্ষার্থী শিক্ষক বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিলে সেনাবাহিনী ডেকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কলেজটিতে আইসিটি ল্যাব থাকলেও একদিনের জন্য আইসিটি ল্যাবের ব্যবহার না করে পরীক্ষায় আইসিটি ২৫ নম্বর প্রধানের নিশ্চয়তায় আইসিটি শিক্ষকের মাধ্যমে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী হতে অতিরিক্ত ৫ শত টাকা করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নেয়া হয়।

তাছাড়া অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার অত্র কলেজে যোগদান করার পূর্বে আবিদপুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরিরত থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠে। সে অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হয়।

এ বিষয়ে কোড়ের পাড় আদর্শ বিশ^বিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুল হক সরকার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ বানানো। বর্তমানে কলেজের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে যে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে তা আমি মেনে নেব।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনিয় ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।