ঢাকা ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে ‘পর্যালোচনায়’ যুক্তরাষ্ট্র

অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
দুই বছর আগে ইরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তিতে নিরাপত্তা স্বার্থের বিষয়টি ঠিকমতো বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখার পরই চুক্তিতে থাকা না থাকার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার পরমাণু চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটন এই মনোভাবের কথা জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তি ইরানের সঙ্গে চুক্তিটি করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে তার দেশের জন্য ‘বিব্রতকর চুক্তি’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে আসছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়াশিংটন চুক্তি থেকে সরে গেলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বেড়ে যাবে, শুরু হবে নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা। ইরান বলছে, তারা চুক্তি ভঙ্গকারী প্রথম দেশ হবে না। যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে যাবে না বলেও প্রত্যাশা তাদের। “বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতা ও প্রচার সত্ত্বেও  ট্রাম্প চুক্তি থেকে সরে যাবেন বলে মনে হয় না,” জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেন তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, চুক্তি নিয়ে ইরানের সঙ্গে ছয়জাতির দেশগুলোর এক দীর্ঘ বৈঠকেও চুক্তির ভবিষ্যৎ স্পষ্ট হয়নি। যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরানের ওই বৈঠকেই প্রথম একত্রিত হন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও ইরানের মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ নীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মেগারিনি জানান, এখন পর্যন্ত চুক্তির অবমাননা হয়নি বলে সবপক্ষেরই বিশ্বাস। তবে এক ঘণ্টা ২০ মিনিটব্যাপী ওই বৈঠকের পরও যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিতে থাকবেই এমনটা নিশ্চিত করতে পারছেন না মোগারিনি। “এখনই আমাদের একটি পারমাণবিক সংকট আছে, উচিত হবে না দ্বিতীয় আরেকটি শুরু করা,” উত্তর কোরিয়াকে ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চুক্তির ভবিষ্যৎ পরবর্তী প্রেসিডেন্টের জন্য রেখে যাবেন না ট্রাম্প। “জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) মার্কিন জনগণের নিরাপত্তা স্বার্থ অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা জানার পরই এ বিষয়ে সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট,” বলেন তিনি। মঙ্গলবার ট্রাম্প জেসিপিওএ-কে ‘আমেরিকার প্রবেশ করা সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও একপাক্ষিক চুক্তি’ অ্যাখ্যা দিয়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে বলে সাংবাদিকদের জানান। যদিও কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা খোলাসা করেননি তিনি। রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পকে এই চুক্তি নিয়ে অক্টোবরের ১৫ তারিখের মধ্যে তার সিদ্ধান্তের কথা জানাতে হবে। ইরান চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে প্রেসিডেন্টের এমন প্রত্যায়ন না পেলে ৬০ দিনের মধ্যে তেহরানের ওপর নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগ পাবে মার্কিন কংগ্রেস। এভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চুক্তির ভবিষ্যৎ কংগ্রেসের হাতে ছেড়ে দিতে পারেন বলে ধারণা করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা। রয়টার্স।
ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে ‘পর্যালোচনায়’ যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ০৩:৫৪:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
দুই বছর আগে ইরান ও ছয় বিশ্বশক্তির মধ্যে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তিতে নিরাপত্তা স্বার্থের বিষয়টি ঠিকমতো বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখার পরই চুক্তিতে থাকা না থাকার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার পরমাণু চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটন এই মনোভাবের কথা জানিয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে।
পরমাণু কার্যক্রম সীমিত করার বিনিময়ে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তি ইরানের সঙ্গে চুক্তিটি করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে তার দেশের জন্য ‘বিব্রতকর চুক্তি’ হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়ে আসছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওয়াশিংটন চুক্তি থেকে সরে গেলে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বেড়ে যাবে, শুরু হবে নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা। ইরান বলছে, তারা চুক্তি ভঙ্গকারী প্রথম দেশ হবে না। যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে যাবে না বলেও প্রত্যাশা তাদের। “বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তৃতা ও প্রচার সত্ত্বেও  ট্রাম্প চুক্তি থেকে সরে যাবেন বলে মনে হয় না,” জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেন তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এক সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, চুক্তি নিয়ে ইরানের সঙ্গে ছয়জাতির দেশগুলোর এক দীর্ঘ বৈঠকেও চুক্তির ভবিষ্যৎ স্পষ্ট হয়নি। যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরানের ওই বৈঠকেই প্রথম একত্রিত হন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও ইরানের মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ নীতি বিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মেগারিনি জানান, এখন পর্যন্ত চুক্তির অবমাননা হয়নি বলে সবপক্ষেরই বিশ্বাস। তবে এক ঘণ্টা ২০ মিনিটব্যাপী ওই বৈঠকের পরও যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিতে থাকবেই এমনটা নিশ্চিত করতে পারছেন না মোগারিনি। “এখনই আমাদের একটি পারমাণবিক সংকট আছে, উচিত হবে না দ্বিতীয় আরেকটি শুরু করা,” উত্তর কোরিয়াকে ইঙ্গিত করে বলেন তিনি।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চুক্তির ভবিষ্যৎ পরবর্তী প্রেসিডেন্টের জন্য রেখে যাবেন না ট্রাম্প। “জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) মার্কিন জনগণের নিরাপত্তা স্বার্থ অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না তা জানার পরই এ বিষয়ে সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট,” বলেন তিনি। মঙ্গলবার ট্রাম্প জেসিপিওএ-কে ‘আমেরিকার প্রবেশ করা সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও একপাক্ষিক চুক্তি’ অ্যাখ্যা দিয়ে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে বলে সাংবাদিকদের জানান। যদিও কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা খোলাসা করেননি তিনি। রয়টার্স বলছে, ট্রাম্পকে এই চুক্তি নিয়ে অক্টোবরের ১৫ তারিখের মধ্যে তার সিদ্ধান্তের কথা জানাতে হবে। ইরান চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে প্রেসিডেন্টের এমন প্রত্যায়ন না পেলে ৬০ দিনের মধ্যে তেহরানের ওপর নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুযোগ পাবে মার্কিন কংগ্রেস। এভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চুক্তির ভবিষ্যৎ কংগ্রেসের হাতে ছেড়ে দিতে পারেন বলে ধারণা করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা। রয়টার্স।