লাইফস্টাইল ডেস্ক:
টক জাতীয় ফল নিয়ে নেতিবাচক কথার শেষ নেই। টক খেলে গলা ভাঙে, রক্ত পানি হয়ে যায়, বুদ্ধি কমে…। আসলে এ ধারণাগুলো মোটেই ঠিক নয়। অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক এই ধরনের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল বলে প্রমাণ করেছেন। টক খেলে কিছুই হয় না। টক খেলে বুদ্ধি কমে—এ কথার কোনো ভিত্তি নেই। মেয়েরা একটু টক বেশি পছন্দ করে—এই যা। এক সময় সাধারণের মধ্যে ধারণা ছিল, অতিরিক্ত টক খাওয়ার কারণে ব্রেনে গোলমাল দেখা দেয় অর্থাত্ বুদ্ধিশুদ্ধি কমে। টক সম্পর্কে এই ভ্রান্ত ধারণায় অনেকেই তাঁদের সন্তানদের বিশেষ করে ১২-১৩ বছর বয়স পর্যন্ত টক জাতীয় ফল খেতে দেন না!
টক জাতীয় ফল যেমন তেঁতুল, আমলকি, চালতা, আমড়া, জলপাই, লেবু ইত্যাদি এবং যেসব খাবারে এসব ফল বাড়তি স্বাদের জন্য দেওয়া হয় সেই খাবার খাওয়াই উত্তম। কারণ টক জাতীয় ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ ও ভিটামিন ‘এ’। টক খেলে বুদ্ধি কমে না। শিশুদের বুদ্ধি কম হওয়া বা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত করার জন্য দায়ী হচ্ছে অপুষ্টি ও আয়োডিন। কাজেই শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য সুষম খাবার গ্রহণ ও আয়োডিনযুক্ত লবণের বিকল্প কিছু নেই। শিশুকে পছন্দমতো টক জাতীয় ফল খেতে দিলে শিশুর প্রয়োজনীয় ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হবে।
টক জাতীয় ফল তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায় বলে যে সাধারণ জনশ্রুতি আছে তা আসলে ঠিক নয়। কারণ রক্তকে পানি করে দেওয়ার মতো কোনো উপাদানই তেঁতুলের মধ্যে নেই। রক্তের রয়েছে বাফার সিস্টেম। এর কাজ হচ্ছে রক্তে অ্যাসিড বা অম্ল এবং বাফারের পরিমাণে তারতম্য হলে তাকে স্বাভাবিক রাখা। এছাড়া রক্তের মধ্যে হাইড্রোজেন-অক্সিজেন, প্রোটিন-ইলেকট্রোলাইটসহ অনেক উপাদান রয়েছে। কাজেই তেঁতুল খেলে রক্তের পিএইচ কমে পানি হয়ে যাবে তা কোনোক্রমেই সম্ভব নয়।
এদিকে টক খেলে নাকি গলা ভাঙে—এই ভ্রান্ত ধারণায় অনেক কণ্ঠশিল্পীই টক খান না। অথচ টক খাওয়ার সঙ্গে গলা ভাঙার কোনো সম্পর্কই নেই। গলা ভাঙার মূল কারণ হলো চিত্কার, চেঁচামেচি, অত্যধিক কথা বলা, হঠাত্ ঠান্ডা লাগা, আইসক্রিম বা ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খাওয়া, ধূমপান, শ্বাসনালির তীব্র প্রদাহসহ ভোকালকর্ডের নডিউল এবং আরো কিছু অসুস্থতা। অনেক সময় শ্বাসনালির মারাত্মক কিছু অসুস্থতার কারণে গলার স্বর ভেঙে যায়।