তপন সরকার, হোমনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার এক যুবতিকে লঞ্চে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের নাম মিনা । তার বাবার বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনা উপজেলার বাসিন্দা। ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে আসা এমভি পারাবত-১০ লঞ্চের স্টাফ কেবিনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তার স্বামী আনিস (২০)। মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৪টার দিকে লঞ্চটি ঘাটে পৌঁছলে যাত্রী ও লঞ্চের কর্মচারীরা আনিস ও তার দুই সহযোগীকে আটক করে পুলিশে দেয়।
এর আগে রাত আড়াইটার দিকে স্ত্রীকে হত্যা করে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট ইউনিয়নের হালিম পাটোয়ারির ছেলে আনিস। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, লঞ্চের তৃতীয় তলায় ওই স্টাফ কেবিনের সামনে ডেকে ছিলেন এনামুল। রাত আড়াইটার দিকে কেবিনের ভেতরে দুই যুবক প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পরই নারী কণ্ঠের চিৎকার শুনতে পান তিনি। লঞ্চের অন্য যাত্রী ও কর্মচারীরা কেবিনের দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। প্রায় এক ঘণ্টা পরে ওই দুই যুবক বের হয়ে গেলে ভেতরে কেবিনের বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় নারীর মরদেহ দেখতে পান তারা। এরপর আনিস এবং দুই যুবককে আটকে রাখা হয়।
বরিশাল নৌ-ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ শফিকুল ইসলাম জানান, পুলিশ আগেই খবর পেয়ে ঘাটে অবস্থান করছিল। লঞ্চটি ঘাটে পৌঁছলে আনিস, তার চাচা আইয়ুব আলীর ছেলে কালাম ও তার বন্ধু নওগাঁ জেলার সাঈদ হাসানের ছেলে তুষারকে আটক করা হয়।
আনিসের বরাত দিয়ে শফিকুল ইসলাম আরও জানান, মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে ঈদুল ফিতরের কয়েকদিন পরে মিনা-আনিসের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে আনিস জানতে পারে মিনা যৌনকর্মী, তাকে ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছে। বিষয়টি তার চাচাতো ভাই কালামকে বললে- সে এই হত্যার পরিকল্পনা করে এবং চুক্তি অনুযায়ী আনিসের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে কুয়াকাটা যাওয়ার উদ্দেশে তারা রওয়ানা হয়। রাতে মিনা ঘুমিয়ে গেলে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সত্যরঞ্জন জানান, যে ছুরি দিয়ে মিনাকে হত্যা করা হয়েছে তা জব্দ করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেটি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।