ঢাকা ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অন্তর্র্বতী সরকারের বড় সংস্কার হবে সুষ্ঠু নির্বাচন ….কায়কোবাদ

মো. মোশাররফ হোসেন মনির:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক ৫ বারের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বলেছেন, বর্তমানে সবচেয়ে বড় সংস্কার প্রয়োজন হল একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন। অন্যান্য সেক্টরে অন্তবর্তীকালীন সরকার এখন সংস্কার করলো, তারপর গণতান্ত্রিক সরকার এসে সেটাকে আরো সংস্কার করবে, সংস্কারের উপরেও সংস্কার আছে। বর্তমান সরকার যদি একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন যদি দিতে পারে এটাই ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী কায়কোবাদ বলেন, ছাত্রজনতার আন্দোলনে শত শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা জালিম স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যারা জীবিত আছেন তাদেরকে হয়তো নানানভাবে সম্মানিত করা যাবে, সুযোগ সুবিধা দেওয়া যাবে। কিন্তু যারা এ আন্দোলনে শহীদ হলেন তাদের শাহাদাতকে মূল্যায়ন করতে হলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উচিত এমন একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া। যে নির্বাচন হবে ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রশংসনীয় হয়ে থাকবে। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সামনে এই সুযোগ এখন অপেক্ষা করছে।

তিনি বলেন, আমি চাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার এমন নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিক। যেখানে আমরা ৫ জন প্রার্থী থাকলে ৫ জন যেন মিলেমিশে যার যার নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে পারি। সবাই সবার প্রতীকে ভোট চাইবে, মিছিল করবে, সমাবেশ করবে কিন্তু কোনো মারপিট হবে না। কারো ভোট কেউ জোর করে সিল মারবে না। রাতের আধারে ভোট চুরি করবে না।

তাহলে তো অন্তত শহীদদের এ ত্যাগের কিছুটা মূল্যায়ন হবে। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আন্দোলনে শহীদদের আত্মার শান্তি হবে। তাদের পরিবার এটা দেখে শান্তি পাবে যে, স্বজনের প্রাণের বিনিময়ে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যেন সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে সেজন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন কাজী কায়কোবাদ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আপনাদের বক্তব্য অনুযায়ী গত ১৭ বছর আপনারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পাননি। নিরপেক্ষ সংবাদ করতে গিয়ে সরকারের রোষানলে পড়েছেন। হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। অনেক সাংবাদিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সে সরকার। আমি এবং আমার দল ক্ষমতায় থাকাকালীন এ মুরাদনগরে আপনারা নির্ভয়ে নির্বিঘেœ সাংবাদিকতা করেছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে আজও আপনারা স্বাধীন।
তিনি আরও বলেন, আমি অন্যায় করলে আমার বিরুদ্ধে লিখবেন। আমার দলের কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে লিখবেন। কেউ বাঁধা দেবে না। তবে মনে রাখতে হবে, আপনাদের সংবাদের কারণে যেন কোনো নিরপরাধ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কেননা, মিথ্যা বা ভুল সংবাদ কিন্তু কাউকে এসিড নিক্ষেপের চেয়েও মারাত্মক হয়ে যায়। আপনারা জাতির বিবেক। আল্লাহকে ভয় করুন। নিরপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন।

উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক এমকে আই জাবেদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া, আব্দুল আজিজ মোল্লা, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ আমজাদ আলী তছু, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সোহেল আহমেদ বাবু, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এডভোকেট নাছির উদ্দীন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমেদ বাদশাহ এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক খায়রুল আহসান প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় অর্ধশত সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা দীর্ঘদিন পর সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে দেখতে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা বিগত সময়ে সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সাংবাদিকবান্ধব কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এসময় মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল বলেন, দাদা (কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ) আমার মেয়ের অসুস্থতার খবরে আপনি আমাকে সিঙ্গাপুরে আমার মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। খোঁজ খবর নিয়েছেন। আপনার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

স্থানীয় সাংবাদিক বেলাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, আমাদের সময়ের সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিথ্যা মামলায় আটক হয়েছিল আপনি তাকে মুক্ত করেছেন।

 

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির ১৭ বছর পর বিজয় দিবস উদযাপন

অন্তর্র্বতী সরকারের বড় সংস্কার হবে সুষ্ঠু নির্বাচন ….কায়কোবাদ

আপডেট সময় ১১:৪৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

মো. মোশাররফ হোসেন মনির:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক ৫ বারের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বলেছেন, বর্তমানে সবচেয়ে বড় সংস্কার প্রয়োজন হল একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন। অন্যান্য সেক্টরে অন্তবর্তীকালীন সরকার এখন সংস্কার করলো, তারপর গণতান্ত্রিক সরকার এসে সেটাকে আরো সংস্কার করবে, সংস্কারের উপরেও সংস্কার আছে। বর্তমান সরকার যদি একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন যদি দিতে পারে এটাই ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কাজী কায়কোবাদ বলেন, ছাত্রজনতার আন্দোলনে শত শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা জালিম স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যারা জীবিত আছেন তাদেরকে হয়তো নানানভাবে সম্মানিত করা যাবে, সুযোগ সুবিধা দেওয়া যাবে। কিন্তু যারা এ আন্দোলনে শহীদ হলেন তাদের শাহাদাতকে মূল্যায়ন করতে হলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উচিত এমন একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া। যে নির্বাচন হবে ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। যে নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রশংসনীয় হয়ে থাকবে। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সামনে এই সুযোগ এখন অপেক্ষা করছে।

তিনি বলেন, আমি চাই অন্তর্র্বতীকালীন সরকার এমন নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিক। যেখানে আমরা ৫ জন প্রার্থী থাকলে ৫ জন যেন মিলেমিশে যার যার নির্বাচনী প্রচারনা চালাতে পারি। সবাই সবার প্রতীকে ভোট চাইবে, মিছিল করবে, সমাবেশ করবে কিন্তু কোনো মারপিট হবে না। কারো ভোট কেউ জোর করে সিল মারবে না। রাতের আধারে ভোট চুরি করবে না।

তাহলে তো অন্তত শহীদদের এ ত্যাগের কিছুটা মূল্যায়ন হবে। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আন্দোলনে শহীদদের আত্মার শান্তি হবে। তাদের পরিবার এটা দেখে শান্তি পাবে যে, স্বজনের প্রাণের বিনিময়ে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকার যেন সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারে সেজন্য দেশবাসীর নিকট দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন কাজী কায়কোবাদ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আপনাদের বক্তব্য অনুযায়ী গত ১৭ বছর আপনারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পাননি। নিরপেক্ষ সংবাদ করতে গিয়ে সরকারের রোষানলে পড়েছেন। হামলা মামলার শিকার হয়েছেন। অনেক সাংবাদিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সে সরকার। আমি এবং আমার দল ক্ষমতায় থাকাকালীন এ মুরাদনগরে আপনারা নির্ভয়ে নির্বিঘেœ সাংবাদিকতা করেছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে আজও আপনারা স্বাধীন।
তিনি আরও বলেন, আমি অন্যায় করলে আমার বিরুদ্ধে লিখবেন। আমার দলের কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে লিখবেন। কেউ বাঁধা দেবে না। তবে মনে রাখতে হবে, আপনাদের সংবাদের কারণে যেন কোনো নিরপরাধ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কেননা, মিথ্যা বা ভুল সংবাদ কিন্তু কাউকে এসিড নিক্ষেপের চেয়েও মারাত্মক হয়ে যায়। আপনারা জাতির বিবেক। আল্লাহকে ভয় করুন। নিরপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন।

উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক এমকে আই জাবেদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া, আব্দুল আজিজ মোল্লা, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ আমজাদ আলী তছু, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সোহেল আহমেদ বাবু, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এডভোকেট নাছির উদ্দীন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমেদ বাদশাহ এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক খায়রুল আহসান প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় অর্ধশত সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সাংবাদিকরা দীর্ঘদিন পর সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে দেখতে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা বিগত সময়ে সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সাংবাদিকবান্ধব কর্মকান্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এসময় মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল বলেন, দাদা (কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ) আমার মেয়ের অসুস্থতার খবরে আপনি আমাকে সিঙ্গাপুরে আমার মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। খোঁজ খবর নিয়েছেন। আপনার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।

স্থানীয় সাংবাদিক বেলাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, আমাদের সময়ের সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মিথ্যা মামলায় আটক হয়েছিল আপনি তাকে মুক্ত করেছেন।