ঢাকা ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদকে সামনে রেখে মুরাদনগরে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া

মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

ঈদকে সামনে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলার গ্রাম, পাড়া-মহল্লা, অলি-গলিতে প্রকাশ্যে চলছে জমজমাট মাদক বেচাকেনা। আর এতে সর্বত্র মাদকেরে ভয়াবহ নেশায় আসক্ত হয়ে পরছে উপজেলার যুব সমাজ।

চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের হাতে আটক ও মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের কয়েক জনকে সাজা দিলেও কখনও থেমে নেই এদের মাদক ব্যবসা। আবার গ্রামগুলোতে বিকাশে টাকা পরিশোধের পর হোম ডেলিভারির মাধ্যমে মাদক পৌঁছে দেওয়া হয় বাসায়। পুলিশ মাদকের বড় চালানের দিকে নজর দিলেও এসব খুচরা ব্যবসায়ীদের বিষয়ে নজর দিচ্ছে না। ফলে ঘরে বসে নিশ্চিন্তে মাদক পাচ্ছে আসক্তরা। যার কারণ স্কুল কলেজগামী কিশোর তরুনদের মধ্যে মাদকের ব্যবহার ও পাচার দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এতেই অভিভাবকমহল চরম উদ্ধেগ ও উৎকন্ঠায় পড়েছেন। এই মরণনেশার ছোবল থেকে কোমলমতি সন্তানদের বাঁচাতে আইনশৃংখলা বাহীনিকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি গ্রামে মাদকের ব্যবসা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। দিনে রাতে অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হোরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য। এ কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করছে থানা পুলিশের কতিপয় সোর্স, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা, ছাত্রনেতাসহ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামচন্দ্রপুর বাজার, উপজেলা সদরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বাংলা মদ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০ বছর ধরে, সেফা হাসপাতালের আশপাশে ও উত্তর পাড়া, কোম্পানীগঞ্জ বাজার, শিবানীপুর, গুঞ্জর, থোল্লা, বাখরনগর, বাঙ্গরা, মেটংঘর, আন্দিকোর্ট, দারোরা, কাজিয়াতল, শ্রীকাইল, জাহাপুর, ছালিয়াকান্দি, পাহাড়পুর, পূর্বধইর পূর্ব ও পশ্চিম, আকবপুর, রামচন্দ্রপুর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন গুলোতেও সহজে মিলছে ইয়াবা।

কোম্পানীগঞ্জ বাজারের এক মাদক বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করে জানায়, পুলিশ ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ছত্রচ্ছায়ায় ও তাদেরকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন মাদক ব্যবসা।

মুরাদনগরের এক বাসিন্দা বলেন, এই এলাকায় থানার সোর্সরা আসামি ধরার নামে পুলিশের সঙ্গে গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। তারাই টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসার সুযোগ করে দেয়। আবার কেউ মাদক বিক্রিতে বাধা দিলে সোর্সরা তাদেরকে কৌশলে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মাদকের বিষয়ে কোনো আপস নেই। আমি এ থানায় আসার পর বেশ কয়েকটি মাদকের ছোট-বড় চালান আটক করেছি। কয়েক মাস আগে ট্রাকভর্তি গাঁজা এবং মাইক্রোবাসভর্তি ফেনসিডিল আটক করেছি। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযান অব্যাহত আছে এবং প্রতিনিয়ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।

ট্যাগস

ঈদকে সামনে রেখে মুরাদনগরে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া

আপডেট সময় ০৯:৪২:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬
মো: মোশাররফ হোসেন মনিরঃ

ঈদকে সামনে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলার গ্রাম, পাড়া-মহল্লা, অলি-গলিতে প্রকাশ্যে চলছে জমজমাট মাদক বেচাকেনা। আর এতে সর্বত্র মাদকেরে ভয়াবহ নেশায় আসক্ত হয়ে পরছে উপজেলার যুব সমাজ।

চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের হাতে আটক ও মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের কয়েক জনকে সাজা দিলেও কখনও থেমে নেই এদের মাদক ব্যবসা। আবার গ্রামগুলোতে বিকাশে টাকা পরিশোধের পর হোম ডেলিভারির মাধ্যমে মাদক পৌঁছে দেওয়া হয় বাসায়। পুলিশ মাদকের বড় চালানের দিকে নজর দিলেও এসব খুচরা ব্যবসায়ীদের বিষয়ে নজর দিচ্ছে না। ফলে ঘরে বসে নিশ্চিন্তে মাদক পাচ্ছে আসক্তরা। যার কারণ স্কুল কলেজগামী কিশোর তরুনদের মধ্যে মাদকের ব্যবহার ও পাচার দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এতেই অভিভাবকমহল চরম উদ্ধেগ ও উৎকন্ঠায় পড়েছেন। এই মরণনেশার ছোবল থেকে কোমলমতি সন্তানদের বাঁচাতে আইনশৃংখলা বাহীনিকে আরো সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি গ্রামে মাদকের ব্যবসা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। দিনে রাতে অনেকটা প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, হোরোইন, গাঁজাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য। এ কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করছে থানা পুলিশের কতিপয় সোর্স, স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা, ছাত্রনেতাসহ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামচন্দ্রপুর বাজার, উপজেলা সদরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে বাংলা মদ বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০ বছর ধরে, সেফা হাসপাতালের আশপাশে ও উত্তর পাড়া, কোম্পানীগঞ্জ বাজার, শিবানীপুর, গুঞ্জর, থোল্লা, বাখরনগর, বাঙ্গরা, মেটংঘর, আন্দিকোর্ট, দারোরা, কাজিয়াতল, শ্রীকাইল, জাহাপুর, ছালিয়াকান্দি, পাহাড়পুর, পূর্বধইর পূর্ব ও পশ্চিম, আকবপুর, রামচন্দ্রপুর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়ন গুলোতেও সহজে মিলছে ইয়াবা।

কোম্পানীগঞ্জ বাজারের এক মাদক বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করে জানায়, পুলিশ ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ছত্রচ্ছায়ায় ও তাদেরকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন মাদক ব্যবসা।

মুরাদনগরের এক বাসিন্দা বলেন, এই এলাকায় থানার সোর্সরা আসামি ধরার নামে পুলিশের সঙ্গে গাড়িতে ঘুরে বেড়ায়। তারাই টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসার সুযোগ করে দেয়। আবার কেউ মাদক বিক্রিতে বাধা দিলে সোর্সরা তাদেরকে কৌশলে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মাদকের বিষয়ে কোনো আপস নেই। আমি এ থানায় আসার পর বেশ কয়েকটি মাদকের ছোট-বড় চালান আটক করেছি। কয়েক মাস আগে ট্রাকভর্তি গাঁজা এবং মাইক্রোবাসভর্তি ফেনসিডিল আটক করেছি। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযান অব্যাহত আছে এবং প্রতিনিয়ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।