রোজ বুধবার, ১২ আগস্ট ২০১৫ ইং (মুরাদনগর বার্ ডটকম):
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের গুঞ্জুর দক্ষিন পাড়া মিশুসদন এতিমখানা কর্তৃপক্ষের অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে সোহাগ মিয়া (১২) নামে এক ছাত্র আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে স্থনীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার গুঞ্জুর গ্রামের মুদি দোকানদার মোহর আলীর ছেলে সোহাগ মিয়া গুঞ্জুর দক্ষিণপাড়া শিশু সদনে লেখা-পড়া করতো। ওই শিশু সদনের বিভিন্ন প্রকার দূর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে কমিটির সভাপতি হাজী দেলোয়ার হোসেন জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। ওই কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফরিদ উদ্দিন সম্প্রতি তদন্তে এসে সোহাগ মিয়াকে তার পিতা কি করে জানতে চাইলে সে মুদি দোকানদারী করে বলে উত্তর দেয়। এতেই কাল হয়ে দাঁড়ায় সোহাগ মিয়ার। জীবিত বাবাকে মৃত না বলায় শিশু সদনের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও হাফেজ দেলোয়ার হোসেন ছাত্র সোহাগ মিয়ার উপর ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠে এবং ওইদিন থেকেই তার উপর অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হয়। নির্যাতনের মাত্রা সইতে না পেরে গত শনিবার বাড়ি গিয়ে সে আর এতিমখানায় আসছে না। এ নিয়ে মা-বাবার সাথে তার মনোমালন্য চলছিল। এর জের ধরে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় নিজ বাড়িতে ঘলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ নিয়ে এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ওই শিশুসদন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। পরে এলাকার অপর একটি মহল বাঁধ সাধলে বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে নিহতের ভাই ফয়সাল আহম্মেদ বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে মুরাদনগর থানায় অপমৃত্যুর একটি মামলা করেন।
ঘটনাটির বিষয়ে এতিমখানার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও হাফেজ দেলোয়ার হোসেন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল পরিকল্পিত ভাবে আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করছে।
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান জানান, অপমৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বুধবার দুপুরে লাশ থানায় নিয়ে আসা। বৃহস্পতিবার ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেকে) প্রেরন করা হয়েছে। অন্য কিছুর বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।