ঢাকা ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি সকল তথ্য থাকবে নিজেদের ডেটা সেন্টারে

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্ ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার চালুর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ ডেটা সেন্টার হবে ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার বা জাতীয় তথ্য ভাণ্ডার। অনুষ্ঠানিক চালুর মাধ্যমে সরকারি সকল ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর তথ্যসহ ব্যাংক, গবেষণা কেন্দ্র, বাণিজ্য সংস্থার তথ্য সংরক্ষণ করা হবে এ ডেটা সেন্টারে। ফলে দেশের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ডেটা আরো সুরক্ষিত হবে। একই সঙ্গে এ ডেটা সেন্টারের মাধ্যমে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল সরকারি কার্যালয়ের আইসিটি কার্যক্রম সরাসরি যুক্ত থাকবে।

এ ব্যাপারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ইত্তেফাককে বলেন, সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডেটা বা নথি সংরক্ষণ ও সুরক্ষিত রাখতে এবং জাতীয় ই-সেবা সিস্টেমের মাধ্যমে নাগরিকসেবা দ্রুত নিশ্চিত করতে ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টারটি গড়ে তোলা হয়েছে। অতীতে এ ধরনের সেবার জন্য সরকারি বিভিন্ন ওয়েব সাইট এবং তাদের তথ্য সংরক্ষণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ডেটা সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। এসব তথ্য নিরাপদ রাখতে ওইসব দেশের ডেটা সেন্টারকে পেমেন্ট করতে হয়েছে। ক্লাউড কম্পিউটিং ও জি-ক্লাউড প্রযুক্তির ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার দেশে স্থাপন হওয়ায় দেশের ডেটা নিরাপত্তায় উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশও তথ্য নিরাপত্তায় স্বনির্ভর হয়ে ওঠল।

মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দিনে দিনে ডিজিটাল বাংলাদেশের কলেবর বাড়ছে। আর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেশি পরিমাণে ডেটা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা। বাংলাদেশের ডিজিটাল কার্যক্রমের যে অগ্রগতি তাতে আমাদের আরো বৃহৎ আকারের ডেটা সেন্টারের প্রয়োজন। একারণে এই ডেটা সেন্টারে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এই ডেটা সেন্টারের সক্ষমতা আরো তিনগুণ বাড়াতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে।

আইসিটি বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবর একনেক সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। ২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার প্রকল্পের কাজ শুরুর উদ্বোধন করেন। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে ডেটা সেন্টারের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল। এ ডেটা সেন্টার নির্মাণের ১ হাজার ৫১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার মধ্যে সরকার ৩১৭ কোটি ৫৫ লাখ এবং অবশিষ্ট ১ হাজার ১৯৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বিশালাকার এই ডেটা সেন্টারে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতার ৬০৪টি র্যাক, উচ্চ গতির ৪০ জিবিপিএস রিডান্ডেন্ট ডেটা কানেকটিভিটি ও ৯ এমভিএ লোডের রিডান্ডেন্ট লাইনসহ ২৪ ঘণ্টার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ। আইসিটি বিভাগ সূত্র আরো জানায়, এর আগে দেশের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে (বিসিসি) প্রথম ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার গড়ে তোলা হয়। থ্রি টিয়ার ওই ডেটা সেন্টারে র্যাক রয়েছে ৬৭টি। ওই ডেটা সেন্টারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের ডেটা, সরকারি ওয়েবসাইট, সরকারি কর্মকর্তাদের ই-মেইল হোস্টিং সার্ভিস, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকার তথ্যভাণ্ডার, ই-সেবা-সংক্রান্ত কার্যক্রম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ই-ভ্যাট, ই-ট্যাক্স ইত্যাদি সিস্টেম, অর্থ বিভাগের অনলাইন বেতন ও পেনশন নির্ধারণী সিস্টেমকে স্থাপন করা হয়।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বে মাত্র পাঁচটি বৃহত্ ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার রয়েছে। এগুলো হলো- স্পেনের মাদ্রিদে ও আলকালা ডি হেনারেস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস ও ওলাথে এবং কানাডার গুয়েল্ফে। ষষ্ঠ নম্বর ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টারটি হলো বাংলাদেশে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

সরকারি সকল তথ্য থাকবে নিজেদের ডেটা সেন্টারে

আপডেট সময় ০৯:০৪:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর ২০১৮
তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক:

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্ ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার চালুর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ ডেটা সেন্টার হবে ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার বা জাতীয় তথ্য ভাণ্ডার। অনুষ্ঠানিক চালুর মাধ্যমে সরকারি সকল ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর তথ্যসহ ব্যাংক, গবেষণা কেন্দ্র, বাণিজ্য সংস্থার তথ্য সংরক্ষণ করা হবে এ ডেটা সেন্টারে। ফলে দেশের সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ডেটা আরো সুরক্ষিত হবে। একই সঙ্গে এ ডেটা সেন্টারের মাধ্যমে সরকারের সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সকল সরকারি কার্যালয়ের আইসিটি কার্যক্রম সরাসরি যুক্ত থাকবে।

এ ব্যাপারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ইত্তেফাককে বলেন, সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডেটা বা নথি সংরক্ষণ ও সুরক্ষিত রাখতে এবং জাতীয় ই-সেবা সিস্টেমের মাধ্যমে নাগরিকসেবা দ্রুত নিশ্চিত করতে ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টারটি গড়ে তোলা হয়েছে। অতীতে এ ধরনের সেবার জন্য সরকারি বিভিন্ন ওয়েব সাইট এবং তাদের তথ্য সংরক্ষণের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ডেটা সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। এসব তথ্য নিরাপদ রাখতে ওইসব দেশের ডেটা সেন্টারকে পেমেন্ট করতে হয়েছে। ক্লাউড কম্পিউটিং ও জি-ক্লাউড প্রযুক্তির ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার দেশে স্থাপন হওয়ায় দেশের ডেটা নিরাপত্তায় উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশও তথ্য নিরাপত্তায় স্বনির্ভর হয়ে ওঠল।

মন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে দিনে দিনে ডিজিটাল বাংলাদেশের কলেবর বাড়ছে। আর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেশি পরিমাণে ডেটা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা। বাংলাদেশের ডিজিটাল কার্যক্রমের যে অগ্রগতি তাতে আমাদের আরো বৃহৎ আকারের ডেটা সেন্টারের প্রয়োজন। একারণে এই ডেটা সেন্টারে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এই ডেটা সেন্টারের সক্ষমতা আরো তিনগুণ বাড়াতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে।

আইসিটি বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের ৬ অক্টোবর একনেক সভায় এই প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। ২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার প্রকল্পের কাজ শুরুর উদ্বোধন করেন। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে ডেটা সেন্টারের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল। এ ডেটা সেন্টার নির্মাণের ১ হাজার ৫১৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার মধ্যে সরকার ৩১৭ কোটি ৫৫ লাখ এবং অবশিষ্ট ১ হাজার ১৯৯ কোটি ৩৬ লাখ টাকা দিয়েছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বিশালাকার এই ডেটা সেন্টারে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতার ৬০৪টি র্যাক, উচ্চ গতির ৪০ জিবিপিএস রিডান্ডেন্ট ডেটা কানেকটিভিটি ও ৯ এমভিএ লোডের রিডান্ডেন্ট লাইনসহ ২৪ ঘণ্টার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ। আইসিটি বিভাগ সূত্র আরো জানায়, এর আগে দেশের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে (বিসিসি) প্রথম ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার গড়ে তোলা হয়। থ্রি টিয়ার ওই ডেটা সেন্টারে র্যাক রয়েছে ৬৭টি। ওই ডেটা সেন্টারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের ডেটা, সরকারি ওয়েবসাইট, সরকারি কর্মকর্তাদের ই-মেইল হোস্টিং সার্ভিস, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকার তথ্যভাণ্ডার, ই-সেবা-সংক্রান্ত কার্যক্রম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ই-ভ্যাট, ই-ট্যাক্স ইত্যাদি সিস্টেম, অর্থ বিভাগের অনলাইন বেতন ও পেনশন নির্ধারণী সিস্টেমকে স্থাপন করা হয়।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বে মাত্র পাঁচটি বৃহত্ ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টার রয়েছে। এগুলো হলো- স্পেনের মাদ্রিদে ও আলকালা ডি হেনারেস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস ও ওলাথে এবং কানাডার গুয়েল্ফে। ষষ্ঠ নম্বর ফোর টিয়ার ডেটা সেন্টারটি হলো বাংলাদেশে।